চিকিৎসা বিজ্ঞান(Medical science)
চিকিৎসা বিজ্ঞান
- চিকিৎসাবিজ্ঞানের জনক---হিপোক্রেটিস
- হোমিওপ্যাথিক জনক----স্যামুয়েল হানিম্যান
প্রাথমিক চিকিৎসা (First Aid)
প্রাথমিক প্রতিবিধান হলো চিকিৎসা শাস্ত্রের অন্তর্গত একটি প্রাথমিক বিভাগ। এই বিদ্যায় অভিজ্ঞ একজন প্রতিবিধানকারী কেউ দুর্ঘটনা বা অসুস্থ হলে তাকে সঠিক পদ্ধতিতে ও যত্ন সহকারে প্রাথমিকপ্রতিবিধান দিতে পারে। পুরো চিকিৎসা করা। প্রতিবিধানের উদ্দেশ্য নয় কারণ প্রতিবিধানকারী চিকিৎসক নন। প্রতিবিধানকারী ঢাকার আসার আগ পর্যন্ত বা হাসপাতালে স্থানান্তর করার আগ পর্যন্ত অসুস্থ ব্যক্তির রক্ষা করা, রোগীর অবস্থা যেন আরও খারাপ না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখে জীবন | রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
চামড়া হড়ে যাওয়া
হাতুড়ি, পাথর বা কোনো ভোঁতা জিনিসের আঘাতে বা খেলার সময় চামড়া ছড়ে | যেতে পারে। এক্ষেত্রে করণীয়-- ১. ছড়ে যাওয়া থেতলানো জায়গায় ঠাণ্ডা পানি বা বরফ লাগাতে হবে। পরিষ্কার তোয়ালে বা কাপড় ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে আঘাপ্রাপ্ত স্থান বেঁধে রাখতে হবে। শুকিয়ে গেলে পুনরায় ভিজিয়ে দিতে হবে।-
- 2.রক্ত বের হলে তা বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। জীবাণুমুক্ত তুলা দিয়ে জমাট রক্ত মুছে অ্যান্টিসেন্টিক মলম লাগাতে হবে।
মাংসপেশিতে টান ধরা
খেলাধুলা করার সময় বা ভারী কোন জিনিস তোলার সময় মাংস পেশিতে টান লেগে মাংশপেশির আঁশ ছিড়ে ব্যথা অনুভূত হয় এবং চলতে গেলে কষ্ট হয়। এরূপ হলে আহত স্থানটিকে বিশ্রাম দিয়ে বরফ
লাগাতে হবে। ২৪ ঘন্টা পর গরম পানিতে বোরিক এসিড পাউডারের কমপ্রেস প্রয়োগ করতে হবে।
লাগালে ফোলা আস্তে আস্তে কমে যাবে।
লাগাতে হবে। ২৪ ঘন্টা পর গরম পানিতে বোরিক এসিড পাউডারের কমপ্রেস প্রয়োগ করতে হবে।
গ) ফুলে যাওয়া
ফুটবল খেলার সময় বুটের আঘাতে বা বক্সিং খেলার সময় মুষ্টির আঘাতে বা পড়ে গিয়ে আঘাত লাগলে শরীরের কোন স্থান ফুলের যেতে পারে। এর প্রথম কাজই হলো বরফ লাগানো । কিছুক্ষণ বরফলাগালে ফোলা আস্তে আস্তে কমে যাবে।
ঘ) পুড়ে যাওয়া:
সরাসরি আগুন বা পেট্রোল- এসিডের মতো রাসায়নিক পদার্থে পুড়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা হবে নিম্নরূপ-- ১. আক্রান্ত স্থান শীতল পানির প্রবাহমান ধারার যেমন- ট্যাপের পানি) নিচে ১০-১৫ মিনিট ধরে রাখতে হবে। গা পুড়ে গেলে শাওয়ার বা গোছলের ঝরনার পানির নিচে দাঁড়াতে হবে। যদি সম্ভব না হয় তবে আক্রান্ত স্থান বালতির পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। সেটাও সম্ভব না হলে আক্রান্ত স্থানে পর্যাপ্ত পানি (গরম বা ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি নয়, সাধারণ তাপমাত্রার)ঢালতে হবে।পোড়া অংশ শুকনো জীবাণুমুক্ত গজ বা ব্যান্ডেজ (তুলা নয়) দিয়ে ঢেকে দিতে হবে, যাতে জীবাণুর সংক্রমণ না হয় । ব্যথানাশক ঔষধ দিতে হবে। যেমন- প্যারাসিটামল ।জ্ঞান থাকলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে খাবার স্যালাইন বা শরবত বা ডাবের পানি খেতে দিতে হবে।
- ২. ডিম, টুথপেস্ট, মাখন বা ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ধরনের মলম ব্যবহার করা যাবে না।
- ৩. পোড়ার মাত্রার রোগীর পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। তাই অল্প পুড়লেও একবার ডাক্তার দেখানো উচিত।
- ৪.হাড় ভাঙ্গা ১ হাত বা পায়ে হাড় ভেঙ্গে গেলে বাঁশের চটা বা কাঠের টুকরা বা স্প্রীন্ট বা দিয়ে ভাঙ্গা জায়গাটি ব্যান্ড্রেজ বা এক টুকরা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিতে হবে যাতে ভাঙ্গা অংশ নড়াচড়া করতে না পারে।হাতের হাড় ভেঙ্গে গেলে স্প্রীন্ট দেয়ার পর ব্যান্ডেজ বা কাপড়ের সাহায্যে হাতকে গলার সাথে ঝুলিয়ে দিতে হবে।কোমর বা মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙ্গে গেলে আহত ব্যক্তির শরীরের নিচে সাবধানে একটি কাঠের ভেঁধে ফেলতে হবে (মাথা, বুক, কোমার, হাঁঠু ও পায়ের পাতা বরাবর বাঁধন দিতে হবে)। অতঃপর তক্তার দুইদিকে দড়ি ও বাঁশ বা কাঠের টুকরার সাহায্যেস্ট্রেচারের মত তৈরি করে রোগীকে দ্রুত অর্থোপেডিক্স (হাড় সংক্রান্ত) ডাক্তারের নিকট নিতে হবে।
(3) সাপের কামড়:
সবচেয়ে বিষাক্ত সাপ কিং কোবরা । বিষধর সাপের কামড়ে ক্ষতস্থানে পাশাপাশি দুটো দাঁতের দাগ থাকে। বিষধর সাপ কাটলে প্রাথমিক করণীয়:
- ১. কামড়ের স্থান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা।
- উক্ত অঙ্গ যথাসম্ভব নিশ্চল রাখা কারণ বেশি নড়াচড়া করে বিষ তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে।
- ২. কামড়ের স্থান হাতে বা পায়ে কামড়ের স্থানের উপরে, দড়ি বা কাপড় দিয়ে दा। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে বাঁধন যেন এত শক্ত না হয় যা হতে পারে রক্ত সরবরাহে বাঁধা দেয়।
- ৩. দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া।
ফিজিওথেরাপি (Physiotheraphy)
ফিজিও (শারীরিক) এবং থেরাপি (চিকিৎসা) শব্দ দুটি নিলে ফিজিওথেরাপি বা শারীরিক চিকিৎসার সৃষ্টি। প্রাচীন গ্রিসে হিমোক্রোটাস ম্যাসেজ ও ম্যানুয়াল থেরাপি দ্বারা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার সূচনাকরেছিলেন। এটি বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের একটি অন্যতম এবং অপরিহার্য শাখা। বাত-ব্যথা, কোমর ব্যথা, ঘাড়- হাটু-গোড়ালি ব্যথা, স্ট্রোক, প্যারালাইসিস, সেরিব্রাল পলসি (প্রতিবন্ধী শিশু),
বার্ধক্য জনিত চিকিৎসা ক্ষেত্রে এবং পুনর্বাসন সেবায় ফিজিওথেরাপির ভূমিকা অপরিহার্য।
আকুপাংচার (Acqpuncture):
আকুপাংচার ব্যথা ও রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত প্রাচীন চৈনিক চিকিৎসা পদ্ধতি। ল্যাটিন শব্দ 'আকুস' মানে সুঁচ, 'পাংচার' মানে ফোটানো। এই পদ্ধতিতে দেহের বিভিন্ন আকু-বিন্দুতে বিশেষএক ধরনের সুঁচ ভেদ করে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রেখে চিকিৎসা করা হয়। বিশেষ সূঁচগুলো আসলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উদ্দীপ্ত করে। নিউরোট্রান্সমিটার নামের বিশেষ ধরনের কেমিক্যাল ও হরমোনের
নিঃসরণ ঘটায়। এটি প্রথমে একটি চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে আবিষ্কৃত হলেও পরে তা বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতি পায়নি।
MCQ
১.হোমিওপ্যাথিক জনক বলে বিবেচিত-
ক. স্যামুয়েল হ্যানিম্যানখ. স্টিফেন ব্যারেট
গ. রফিকুজ্জামান খান
ঘ. রোকনুজ্জামান
উত্তর: ক
২.দুর্ঘটনায় পতিত কোন ব্যক্তির ভাঙ্গা হাত-পায়ের প্রাথমিক কি করার জন্য বিশেষজ্ঞরা উপদেশ দিয়ে থাকেন?
ক. ব্যথা নিবরাক মলম জাতীয় ঔষধ লাগানোখ. ভাঙ্গা স্থান কাঠ দিয়ে বেঁধে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের নিকট পাঠানো
গ. শুধু সান্ত্বনা দেয়া
ঘ. মালিশ করা
উত্তর: ঘ
৩. আঘাত লেগে ফুলে যাওয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা কোনটি?
ক. ঠাণ্ডা পানি ও বরফ দেওয়াখ. ডেটল বা চুনের পানি দেওয়া
গ. পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা
ঘ. এসপিরিন বড়ি খেতে দেওয়া
উত্তর: ক
৪.শরীরের কোন অংশ পুড়ে গলে তৎক্ষণাৎ প্রাথমিক ব্যবস্থা কি নেয়া উচিত?
ক. ডিম ভেঙ্গে শুধু সাদা অংশ দিয়ে প্রলেপ দেয়াখ. বরফ বা পরিষ্কার ঠাণ্ডা পানি দেয়া
গ. লবণ পানি দেয়া
ঘ. নারিকেলের তৈল দেয়া
উত্তর:খ
৫.বিষধর সাপের কয়টি বিষ দাঁত থাকে?
ক. চারটিখ. তিনটি
গ. দুটি
ঘ. একটি
উত্তর: খ
৬.বিষধর সাপে কামড়ালে ক্ষতস্থানে থাকে
ক. পাশাপাশি দুটো দাঁতের দাগখ. অনেকগুলো ছোট ছোট দাঁতের দাগ
গ. ক্ষতস্থানে প্রচুর বিষ লেগে থাকে
ঘ. ক্ষতস্থান থেকে প্রচুর রক্তপাত হতে থাকে
উত্তর: ক
৭.সাপের বিষে কি থাকে?
ক. লেড মনোক্সাইডখ. ফ্লোরিক এসিড
গ. জিঙ্ক সালফাইড
ঘ. কপার সালফাইড
উত্তর: খ
৮.প্রাকৃতিক নিয়মে চিকিৎসা করাকে কী বলে?
ক. ফিজিওথেরাপিখ. মেট্রোথেরাপি
গ. বায়োমেকানিকস
ঘ. মাইলোথেরাপি
উত্তর:ক
৯.আকুপাংচার হলো-
ক. জাপানের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিখ. গ্রিসের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি
গ. চীন দেশীয় প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি
ঘ. মিসরের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি
উত্তর: গ
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url