মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস
অধ্যায় ৭: মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস
আমাদের ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম ”আপনাদের স্বাগতম ।
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।
বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা সাজেশন
পেজ সূচিপত্র :অধ্যায় ৭:মধ্যযুগের বাংলার সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস
তথ্যকণিকা(Information)
এখানে অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ একনজরে দেখার জন্য দেওয়া হয়েছে।
- ১.মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল কারণ ছিল— কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ।
- ২.সলিন নামের বিশ্ববিখ্যাত বস্ত্রের প্রাণকেন্দ্র ছিল ঢাকা।
- ৩.মুসলমান শাসনের সময় বাংলার বিখ্যাত সমুদ্রবন্দর ছিল চট্টগ্রামে ।
- ৪. আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন— সুলতান সিকান্দার শাহ।
- ৫.ছোট সোনা মসজিদের নির্মাতা- ওয়ালি মুহম্মদ।
- ৬. ষাটগম্বুজ মসজিদের নির্মাতা— উলুগ খান জাহান ।
- ৭. 'কদম রসুল' নির্মাণ করেন— নুসরত শাহ।
- ৮. ‘ইউসুফ-জুলেখা' কাব্য রচনা করেন— শাহ মুহম্মদ সগীর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন
ক নং প্রশ্ন (জ্ঞানমূলক)
প্রশ্ন-১. বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস কী ছিল?
উত্তর: বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি।
প্রশ্ন-২. ‘ষাট গম্বুজ মসজিদ' কোথায় অবস্থিত?
উত্তর: 'ষাট গম্বুজ মসজিদ' বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত।
প্রশ্ন-৩. 'দাখিল দরওয়াজা' কে নির্মাণ করেছিলেন?
উত্তর: 'দাখিল দরওয়াজা' রুকনউদ্দীন বরবক শাহ নির্মাণ করেছিলেন।.
প্রশ্ন-৪. হোসেনী দালান কে নির্মাণ করেন।
উত্তর: সুবেদার শায়েস্তা খান হোসেনী দালান নির্মাণ করেন।
প্রশ্ন-৫. আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন কে?
উত্তর: আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন সুলতান সিকান্দার শাহ।
প্রশ্ন-৬. মধ্যযুগের প্রথম মুসলিম কবির নাম কী?
উত্তর: মধ্যযুগের প্রথম মুসলিম কবির নাম শাহ মুহাম্মদ সগীর।
প্রশ্ন-৭.মহাভারত বাংলায় অনুবাদ করেন কে?
উত্তর: কবিন্দ্র পরমেশ্বর 'মহাভারত' বাংলায় অনুবাদ করেন।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
খ নং প্রশ্ন (অনুধাবনমূলক)
প্রশ্ন-১. মধ্যযুগে হিন্দু সমাজে নারীদের অবস্থা কেমন ছিল?
উত্তর: মধ্যযুগে হিন্দু সমাজে নারীদের অবস্থা ছিল খুব শোচনীয়। মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজে নারীরা ছিল প্রায় অধিকারবিহীন। এ সময় স্বামীরা স্ত্রীকে তাদের সম্পত্তি বলে মনে করত। নারীরা ছিল পুরনির্ভরশীল এবং তারা গৃহকর্তার অনুমতি ছাড়া ঘরের বাহিরে যেতে পারত না। সম্পত্তির ওপর নারীদের কোনো অধিকার স্বীকৃত ছিল না। বাংলার অধিকাংশ অঞ্চলে সতীদাহ প্রথা ছিল বাধ্যতামূলক। অবশ্য সে যুগেও অনেক নারী নিজ যোগ্যতা ও বুদ্ধিমত্তা দ্বারা নিজেদের স্বাধীন সত্তাকে বিকশিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। সে যুগেই চন্দ্রাবতী 'মনসা মঙ্গল' কাব্য রচনা করেছিলেন।
প্রশ্ন-২. বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎসটি ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল উৎস ছিল কৃষি। বাংলার মাটিতে কৃষিজাত দ্রব্যের প্রাচুর্য ছিল। বাংলার কৃষি ভূমি উর্বর হওয়ায় এখানে ধান, গম, পাট, আদা, পিয়াজ, তেল, সরিষা, পান, সুপারি, রেশম, ডাল, আম,কাঁঠাল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হতো। ফলে উদ্বৃত্ত বিভিন্ন পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা হতো। এর ফলে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটেছিল ।
প্রশ্ন-৩. কেন মধ্যযুগকে মুঘলদের 'স্বর্ণযুগ' বলা হয়? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মধ্যযুগে স্থাপত্য শিল্পের সমৃদ্ধির জন্য সে যুগকে মুঘলদের স্বর্ণযুগ বলা হয়। বাংলার বহু স্থানে আজও মুঘল শাসকদের শিল্প প্রীতির নিদর্শন রয়েছে। তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতায় বহু সংখ্যক মসজিদ, সমাধি ভবন, স্মৃতিসৌধমাজার, দুর্গ, স্তম্ভ ও তোরণ নির্মিত হয়েছিল। ফলে স্থাপত্য শিল্পের বিকাশের জন্য মধ্যযুগকে মুঘলদের 'স্বর্ণযুগ' হিসেবে অভিহিত করা হয়।
প্রশ্ন-৪. কদম রসুল বিখ্যাত কেন? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: কদম রসুল ভবনের এক কক্ষে মুহাম্মদ (স) এর পদচিহ্ন সংবলিত একখণ্ড প্রস্তর স্থাপিত থাকায় এটি বিখ্যাত । কদম রসুল গৌড়ে অবস্থিত। মহানবির পদচিহ্নের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য এ ভবনটি নির্মিত হয়।নুসরত শাহ ১৫৩১ সালে এটি নির্মাণ করেছিলেন। এ ভবনের এক কক্ষে একটি কালো কারুকার্যখচিত মর্মর বেদির উপরে হযরত মুহাম্মদ (স) এর পদচিহ্ন সংবলিত একখণ্ড প্রস্তর স্থাপিত রয়েছে। এ পদচিহ্ন থাকার কারণে কদম রসুল স্থাপনাটি বিখ্যাত।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. মধ্যযুগে বাংলার মুসলিম সমাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল কোনটি?
(ক) অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম
(খ) রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা
(গ) সামাজিক কুসংস্কার
(ঘ)ধর্মীয় সংস্কৃতির লালন
উ:ঘ
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ২ ও ৩ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
বর্তমানে রাজাপুর গ্রামের রতন চন্দ্র দুর্গাপূজাসহ তার ধর্মের সকল দেব-দেবীর পূজা করেন। অপরদিকে আব্দুর রহিম সাহেবও নিজ ধর্মের সকল উৎসব পালন করেন। কেউ কারো ধর্মীয় উৎসব পালনে বাধা দেয় না। ফলে সবার মধ্যে ভ্রাতৃত্ববন্ধন দৃঢ় হয় ।
২. উদ্দীপকের সমাজচিত্রের সাথে ইতিহাসের কোন সময়ের সমাজচিত্রের সাদৃশ্য আছে?
(ক) প্রাচীন যুগের
(খ) মধ্য যুগের
(গ) মোঘল আমলের
(ঘ) সুলতানি আমলের
উ:ঘ
৩.উক্ত সময়ে মুসলিম সমাজে প্রভাবশালী সম্প্রদায় ছিল-
i. পির-ফকির সম্প্রদায়
ii. মোল্লা সম্প্রদায়
iii. সুফি-দরবেশ
নিচের কোনটি সঠিক?
(ক)i
(খ) iও iii
(গ) iiওiii
(ঘ) i, iiও iii
উ:ক
৪.মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজে কয়টি বর্ণ বিদ্যমান ছিল?
ক)২টি
খ) ৩টি
গ) ৪ টি
ঘ) ৫ টি
উ:গ
৫.মধ্যযুগে বাংলার হিন্দু সমাজে এক বর্ণের সাথে অন্য বর্ণের বিবাহ নিষিদ্ধের অন্যতম প্রধান কারণ কোনটি?
ক) ধর্মের নিষেধাজ্ঞা
খ) জাতিভেদ প্রথা
গ) শাসকগোষ্ঠীর নিষেধাজ্ঞা
ঘ) আর্থিক অসামঞ্জস্যতা
উ:খ
৬.মধ্যযুগে বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মূল কারণ কোনটি?
ক) শিল্পনির্ভর অর্থনীতি
খ) বস্তুনির্ভর অর্থনীতি
গ) প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি
ঘ) কৃষিনির্ভর অর্থনীতি
উ:ঘ
৭.মুসলমান শাসনের সময় বাংলার বিখ্যাত সমুদ্রবন্দর কোথায় ছিল?
(ক) কক্সবাজারে
(খ) চট্টগ্রামে
(গ) খুলনাতে
(ঘ) কুয়াকাটাতে
উ: খ
৮. আদিনা মসজিদ নির্মাণ করেন কে?
ক) সুলতান সিকান্দার শাহ
খ) রুকুনউদ্দীন বরবক শাহ
গ) নুসরাত শাহ্
ঘ) সুলতান জালাল উদ্দীন
উ:ক
৯.এক লাখি মসজিদটি কী ?
(ক) মাজার
(খ)কবর
(গ) দরগাহ
(ঘ) দরবার
উ:খ
১০. কত খ্রিষ্টাব্দে এক লাখি মসজিদ নির্মিত হয়?
ক) ১৪১৮-১৪২১
খ) ১৪১৮–১৪২২
গ) ১৪১৮–১৪২৩
ঘ) ১৪১৮- ১৪২৫
উ:গ
১১. মুঘল আমলের কোন স্থাপত্যটি জাতিসংঘের ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব সভ্যতার নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে?
ক) ষাটগম্বুজ মসজিদ
খ) কদম রসুল
গ) বড় সোনা মসজিদ
ঘ) আদিনা মসজিদ
উ:ক
১২. ষাটগম্বুজ মসজিদের গম্বুজ সংখ্যা কয়টি?
ক) ৬০টি
খ)৭৭টি
গ) ৭০টি
ঘ) ৮৭টি
উ:গ
১৩. ষাটগম্বুজ মসজিদের নির্মাতা কে?
ক) খান জাহান আলী
খ) উলুগ খান জাহান
গ) নুসরত শাহ
ঘ) ফতেহ শাহ
উ: খ
১৪. কদম রসুল কে নির্মাণ করেন?
(ক) নুসরত শাহ
(খ) ফতেহ শাহ
(গ) সিকান্দার শাহ
(ঘ) তুঘলক শাহ
উ: ক
১৫. মুঘল যুগকে স্বর্ণযুগ বলা হয় কেন?
ক) স্থাপত্য শিল্পের বিকাশের জন্য
খ) কারু শিল্পের বিকাশের জন্য
গ) মৃৎ শিল্পের বিকাশের জন্য
ঘ) পোশাক শিল্পের বিকাশের জন্য
উ: ক
১৬. ‘ছোট কাটরা’ কে নির্মাণ করেন?
ক) শাহ সুজা
খ) শায়েস্তা খান
গ) মীর জুমলা
ঘ). মুর্শিদ কুলি খান
উ:খ
১৭. কোন কাব্য ফার্সি রচনার অনুবাদ?
ক) রসুল বিজয়
খ) রাগমালা.
গ) ইউছুফ-জোলেখা
ঘ) সাতনামা
উ:
১৮. 'ইউসুফ-জুলেখা' কাব্য রচনা করেন কে?
ক) জয়নুদ্দীন
খ) শাহ মুহম্মদ সগীর
গ) ফয়জুল্লাহ
ঘ) মোজাম্মেল
উ: খ
১৯. মুসলমান যুগে প্রতিবেশী কোন সম্পর্ক ছিল?
ক) বিহার
খ) অযোধ্যা
গ) শ্যামদেশ
ঘ) আরাকান
উ:ঘ
সৃজনশীল প্রশ্ন
১. নেপাল থেকে আসা মদন থাপা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। সে প্রায়ই তার সহপাঠিদের বিভিন্ন পারিবারিক ও সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে থাকে। সে মুসলমানদের আকিকা, খতনা, বিয়েশাদি
ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যায়। আবার হিন্দুদের জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে উপলক্ষে বিভিন্ন রীতিনীতি পালন অনুষ্ঠানেও যায়। এ সমস্ত অনুষ্ঠানে খাবার তালিকায় মাছ, মাংস, পোলাও, রেজালা, কাবাব ইত্যাদি থাকে।
ক. ঢাকার হোসেনী দালান কে তৈরি করেন?
খ. মধ্যযুগে বাংলার কৃষিব্যবস্থা কেমন ছিল?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অনুষ্ঠানগুলোর সাথে কোন আমলের রীতিনীতির মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. উক্ত আমলে বাংলার অর্থনীতি সমৃদ্ধ ছিল— উক্তিটি মূল্যায়ন করো।
২. দুই বন্ধু রেস্টুরেন্টে বসে গল্প করছিল আর চা পান করছিল। একজনের পরনে রয়েছে পায়জামা, সেরোয়ানি ও পাগড়ি আর অন্যজন পরেছে ধূতি, পাঞ্জাবী ও পাগড়ি।
ক. দাখিল দরওয়াজা কে নির্মাণ করেন?
খ. মধ্যযুগে বাংলার ব্যাংকিং প্রথার বিকাশ ঘটে কেন?
গ. উদ্দীপকে বাংলার কোন যুগের চিত্র ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. তুমি কি মনে কর, সে যুগে বাংলার বস্ত্র শিল্পের খ্যাতি ছিল জগৎজোড়া? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও ।
৩.. দুই বন্ধু ঘুরতে বের হয়েছে। একজনের পরনে রয়েছে পায়জামা, শেরওয়ানি ও পাগড়ি আর অন্যজন পরেছে ধুতি, পাঞ্জাবি ও পাগড়ি
ক. খলজি মালিকদের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ কে?
খ. নবাবি আমল বলতে কী বোঝ?
গ. উদ্দীপকে বাংলার কোন যুগের চিত্র ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো ।
ঘ. তুমি কি মনে কর উক্ত যুগে বাংলার বস্ত্রশিল্পের খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া? উত্তরের সপক্ষে যুক্তি দাও ।
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url