আখলাক
অধ্যায় ৪: আখলাক
আমাদের ওয়েবসাইট “অর্ডিনেট আইটি.কম” ও চ্যানেল ”অর্ডিনেট ক্লাসরুম ”আপনাদের স্বাগতম ।
আমরা একটি ভিন্ন প্রজন্মের স্বপ্ন দেখি। আমরা অধিক চিন্তাশীল প্রজন্ম গড়তে চাই, আলাদা মানুষ যাদের আগে চিন্তা করার অভ্যাস থাকবে। আমরা মানুষ কেন? কারণ আমরা চিন্তা করি, এবং সেই চিন্তাকে মুক্তচিন্তা হতে হবে। আর মুখস্থ করে আর যা ই হোক, বিজ্ঞান শিক্ষা হতে পারে না। আর সেই প্রচেষ্টারই অংশ হল আমাদের কনটেন্ট ও ভিডিও লেকচার। এই কনটেন্ট ও ভিডিওগুলির উদ্দেশ্য হল প্রতিটি বিষয় এমনভাবে শেখানোর চেষ্টা করা যাতে আপনি বইয়ের বাইরেও অনেক কিছু ভাবতে পারেন। আর আপনি যখন চিন্তাশীল মানুষ হবেন, তখন আপনি নিজেই বুঝবেন এই দেশকে আলাদা করতে আমাদের কী করতে হবে, কতদূর যেতে হবে।
ইসলাম শিক্ষা সাজেশন
পেজ সূচিপত্র :অধ্যায় ৪:আখলাক
তথ্যকণিকা(Information)
এখানে অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ একনজরে দেখার জন্য দেওয়া হয়েছে।
- ১. কিয়ামতের দিন মুমিনের পাল্লা ভারী করবে- প্রশংসনীয় চরিত্র।
- ২. 'সুন্দর চরিত্রই পুণ্য'-বলেছেন হযরত মুহাম্মদ (স)।
- ৩. মহান চরিত্রের ধারক হযরত মুহাম্মদ (স)।
- ৪. উত্তম চরিত্র মানুষকে দান করে— পুণ্য।
- ৫.আল্লাহর কাছে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি তাকওয়া বা আল্লাহভীতি।
- ৬. যিনি তাকওয়া অবলম্বন করেন তাকে বলা হয়— মুত্তাকি।
- ৭. ইসলামি নৈতিকতার মূলভিত্তি – তাকওয়া।
- ৮. ‘আল-আহ্দু' শব্দের অর্থ— ওয়াদা বা অঙ্গীকার
- ৯. যে ব্যক্তি ওয়াদা পালন করে না তার— দীন নেই
- ১০. ওয়াদা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন – আল্লাহ তায়ালা
- ১১. ওয়াদা ভঙ্গ করা— মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য।
- ১২. ওয়াদা পালনকারীকে সবাই — ভালোবাসে।
- ১৩. সত্যবাদিতার আরবি প্রতিশব্দ হলো— আস-সিক।
- ১৪. সত্যবাদিতার বিপরীত হলো— মিথ্যাচার।
- ১৫. সকল পাপের মূল হলো- মিথ্যা।
- ১৬. মিথ্যা ডেকে আনে ধ্বংস।
- ১৭. মিথ্যাচারকে আরবিতে বলে – কিয়ব।
- ১৮. নৈতিক গুণাবলির অন্যতম প্রধান হলো— সত্যবাদিতা।
- ১৯. শালীনতা অর্থ— মার্জিত, সুন্দর ও শোভন হওয়া
- ২০. ইসলামি সমাজব্যবস্থার মূলভিত্তি – শালীনতা বজায় রাখা।
- ২১. শালীনতার বিপরীত— অম্লীলতা।
- ২২, লজ্জাশীলতার পুরোটাই— কল্যাণময় ।
- ২৩. 'আমানত' শব্দের অর্থ— গচ্ছিত রাখা, নিরাপদ রাখা।
- ২৪. আমানতের বিপরীত হলো— খিয়ানত 1
- ২৫. ‘খিয়ানত' অর্থ— আত্মসাৎ করা।
- ২৬. যিনি খিয়ানত করেন তাকে বলা হয়— খায়িন ।
- ২৭. যার মধ্যে আমানতদারি নেই— তার ইমান নেই।
- ২৮. মুনাফিকের অন্যতম নিদর্শন- খিয়ানত করা।
- ২৯. আমানতের খিয়ানত করা— হারাম।
- ৩০. খিয়ানত ডেকে আনে দারিদ্র্য।
- ৩১. আমানত ডেকে আনে – সচ্ছলতা।
- ৩২. ‘আশরাফুল মাখলুকাত' অর্থ— সৃষ্টির সেরা।
- ৩৩. মানুষের উন্নত চরিত্রের পরিচায়ক- মানবসেবা।
- ৩৪. ইসলামে সব মুসলমান ভাই ভাই।
- ৩৫. হযরত আদম (আ)-এর বংশধর - সব মানুষ ।
- ৩৬. কোনো জোর জবরদস্তি নেই— দীনের ব্যাপারে।
- ৩৭. নারীদের প্রভূত সম্মান দেওয়া হয়েছে— ইসলামে
- ৩৮. সন্তানের বেহেশত মায়ের পদতলে।
- ৩৯. ইসলামে মায়ের মর্যাদা বেশি— তিন গুণ।
- ৪০. নিজ দেশের প্রতি মায়া-মমতা, আকর্ষণই হলো- স্বদেশপ্রেম।
- ৪১. স্বদেশপ্রেমকে বলা হয়েছে— ইমানের অঙ্গ। ...
- ৪২. দেশপ্রেম ও দেশের সেবা করা— ইবাদতস্বরূপ।
- ৪৩. মানবজীবনে সফলতা লাভের হাতিয়ার- কর্তব্যপরায়ণতা।
- ৪৪. পরিচ্ছন্নতার আরবি প্রতিশব্দ- নাজাফাত।
- ৪৫. 'তাহারাত' শব্দের অর্থ- পৰিত্ৰতা ।
- ৪৬. CASES) বাণীর অর্থ— আপনার পরিচ্ছদ পবিত্র রাখুন।
- ৪৭. অপচয় ও কৃপণতার মাঝামাঝি পন্থা- মিতব্যয়িতা।
- ৪৮. ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন- বৃদ্ধিমত্তার লক্ষণ।
- ৪৯. আত্মশুদ্ধির আরবি পরিভাষা— তাযকিয়াতুন নফস।
- ৫০. 'আমর বিল মারুফ হলো— সৎকাজের আদেশ।
- ৫১. ‘নাহি আনিল মুনকার' হলো— অসৎ কাজে নিষেধ ।
- ৫২. 'আখলাকে যামিমাহ' অর্থ— নিন্দনীয়,স্বভাব-
- ৫৩. 'প্রতারণা' অর্থ— বিশ্বাস ভঙ্গ করা।
- ৫৪. মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে— গিবতকে।
- ৫৫. ব্যভিচারের চাইতেও মারাত্মক— গিবত
- ৫৬. গিবত করা ও শোনা উভয়ই— হারাম ।
- ৫৭. (আল-হাসাদু) শব্দের অর্থ— হিংসা।
- ৫৮. মানুষের সকল নেক আমল ধ্বংস করে দেয়— হিংসা।
- ৫৯. জাতীয় ঐক্য, সংহতি ও উন্নতির পথে অন্তরায়- হিংসা।
- ৬০. হত্যার চেয়েও জঘন্য — ফিতনা-ফাসাদ।
- ৬১. ফিতনা-ফাসাদের ইসলামি বিধান হলো— হারাম।
- ৬২. হালাল রুজি অন্বেষণ করা ফরজের পরেও ফরজ।
- ৬৩. আরবি 'রিবা' শব্দের অর্থ— সুদ।
- ৬৪. ঘুষ শব্দের আরবি প্রতিশব্দ— রেশওয়াত।
- ৬৫. ইসলামে সুদ ও ঘুষ হারাম বা নিষিদ্ধ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর সাজেশন
ক নং প্রশ্ন (জ্ঞানমূলক)
প্রশ্ন-১. 'আখলাক' কী?
উত্তর: মানুষের স্বভাবসমূহের সমন্বিত রূপই হলো আখলাক ।
প্রশ্ন-২. আখলাকে হামিদাহ কী?
উত্তর: আখলাকে হামিদাহ হলো ভালো ও উত্তম চরিত্র ।
প্রশ্ন-৩.জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ কী?
উত্তর: জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ আখলাকে হামিদাহ বা সুন্দর চরিত্র ।
প্রশ্ন-৪. 'হুসনুল খুলক' কী?
উত্তর: মানুষের চরিত্রের উত্তম দিকগুলোকে হুসনুল খুলক বলা হয়।
প্রশ্ন-৫. সুন্দর চরিত্রই পুণ্য— এটি কার কথা?
উত্তর: সুন্দর চরিত্রই পুণ্য— এটি মহানবি (স)-এর কথা।
প্রশ্ন-৬. তাকওয়া কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যাবতীয় অন্যায়-অত্যাচার ও পাপকাজ থেকে বিরত থাকাকে তাকওয়া বলা যায়।
প্রশ্ন-৭.ইসলামি নৈতিকতার মূল ভিত্তি কী?
উত্তর: ইসলামি নৈতিকতার মূল ভিত্তি তাকওয়া।
প্রশ্ন-৮.'আল-আহ্দু' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: 'আল-আহ্দু' শব্দের অর্থ ওয়াদা, অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি, চুক্তি, কাউকে কোনো কথা দেওয়া বা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়া।
প্রশ্ন-৯. ওয়াদা পালন কাকে বলে?
উত্তর: কারও সাথে কোনোরূপ প্রতিশ্রুতি দিলে, অঙ্গীকার করলে বা কাউকে কোনো কথা দিলে তা যথাযথভাবে রক্ষা করাকে ওয়াদা পালন বলে ।
প্রশ্ন-১০. সিদক বা সত্যবাদিতা কী?
উত্তর: কোনো ঘটনা বা বিষয় সম্পর্কে কোনোরূপ পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা বিকৃতি ব্যতিরেকে হুবহু বা অবিকল বর্ণনা করাই হলো সিদক বা সত্যবাদিতা।
প্রশ্ন-১১. মিথ্যার আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: মিথ্যার আরবি প্রতিশব্দ কিযৰ (SJCJI)।
প্রশ্ন-১২.চরম মিথ্যাবাদীকে কী বলা হয়?
উত্তর: চরম মিথ্যাবাদীকে কাজ্জাব বলা হয় ।
প্রশ্ন-১৩. শালীনতা কী
উত্তর: কথা-বার্তা, আচার-আচরণ ও চলাফেরায় ভদ্র, সভ্য ও মার্জিত হওয়াই শালীনতা।
প্রশ্ন-১৪.ইসলামি সমাজব্যবস্থার মূল ভিত্তি কী?
উত্তর: ইসলামি সমাজব্যবস্থার মূল ভিত্তি হলো শালীনতা।
প্রশ্ন-১৫.'আমানত' কী?
উত্তর: কারও কাছে কোনো অর্থ-সম্পদ, কথা গচ্ছিত রাখাই হলো আমানত'।
প্রশ্ন-১৬. 'খিয়ানত' কী?
উত্তর: আমানত রাখা দ্রব্য বা বিষয় যথাযথভাবে প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে না দিয়ে আত্মসাৎ করাই হলো খিয়ানত ।
প্রশ্ন-১৭. 'খিয়ানত' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: 'খিয়ানত' অর্থ আত্মসাৎ করা, ক্ষতিসাধন করা, ভঙ্গ করা।
প্রশ্ন-১৮. মানবসেবা কী?
উত্তর: মানুষের সেবা করা, পরিচর্যা করা, যত্ন নেওয়াই মানবসেবা।
প্রশ্ন-১৯. ভ্রাতৃত্ববোধ কাকে বলে?
উত্তর: কোনো ব্যক্তির অপর ব্যক্তিকে ভাইয়ের মতো মনে করা, ভ্রাতৃত্বসুলভ আচার-আচরণ ও অনুভূতি প্রকাশ করাকেই ভ্রাতৃত্ববোধ বলে।
প্রশ্ন-২০. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কাকে বলে?
উত্তর:সমাজের নানা সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যকার সম্প্রীতি ও ভালোবাসাকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলে ।
প্রশ্ন-২১. নারীদের অধিকার সম্পর্কিত পবিত্র কুরআনের সূরাটির নাম কী?
উত্তর: নারীদের অধিকার সম্পর্কিত পবিত্র কুরআনের সূরাটির নাম হলো সূরা আন-নিসা।
প্রশ্ন-২২. স্বদেশপ্রেম কী?
উত্তর: স্বদেশের প্রতি মায়া-মমতা, আকর্ষণই হলো স্বদেশপ্রেম।
প্রশ্ন-২৩.স্বদেশপ্রেমের আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: স্বদেশপ্রেমের আরবি প্রতিশব্দ হুব্বুল ওয়াতান।
প্রশ্ন-২৪.কর্তব্যপরায়ণতা কী?
উত্তর: সময়মতো সুন্দর ও সুচারুভাবে দায়িত্ব-কর্তব্যসমূহ পালন করাই কর্তব্যপরায়ণতা।
প্রশ্ন-২৫.পরিচ্ছন্নতা কী?
উত্তর: পরিষ্কার, সুন্দর ও পরিপাটি অবস্থাই পরিচ্ছন্নতা।
প্রশ্ন-২৬.পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার আরবি প্রতিশব্দ হলো নাজাফাত ا (النَّهَافَةُ)
প্রশ্ন-২৭.মিতব্যয়িতা কী?
উত্তর: ধন-সম্পদের যথাযথ ও প্রয়োজন মাফিক ব্যবহারই মিতব্যয়িতা।
প্রশ্ন-২৮. আত্মশুদ্ধি কী?
উত্তর: সর্ব প্রকার অনৈসলামিক কথা ও কাজ থেকে নিজ অন্তরকে মুক্ত ও নির্মল রাখাই আত্মশুদ্ধি।
প্রশ্ন-২৯. আত্মশুদ্ধির আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: আত্মশুদ্ধির আরবি প্রতিশব্দ হলো 'তাযকিয়াতুন নাফস'।
প্রশ্ন-৩০. প্রতারণা কী?
উত্তর: অন্যকে ঠকানো বা ফাঁকি দেওয়া, বিশ্বাস ভঙ্গ করাই প্রতারণা ।
প্রশ্ন-৩১. গিবত কী?
উত্তর: কারো অনুপস্থিতিতে অন্যের নিকট এমন কোনো কথা বলা যা শুনলে সে মনে কষ্ট পায় তাকে গিবত বলে।
প্রশ্ন-৩২.ইসলামি শরিয়তে গিবত করা কী?
উত্তর: ইসলামি শরিয়তে গিবত করা সম্পূর্ণ হারাম।
প্রশ্ন-৩৩. কর্মবিমুখতা কী?
উত্তর: কাজ করার সুযোগ ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অলস বা বেকার বসে থাকাকে কর্মবিমুখতা বলে ।
প্রশ্ন-৩৪. সুদের আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: সুদের আরবি প্রতিশব্দ রিবা ।
প্রশ্ন-৩৫. ঘুষের আরবি প্রতিশব্দ কী?
উত্তর: ঘুষের আরবি প্রতিশব্দ হলো রিশওয়াত।
অনুধাবনমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. আখলাকে হামিদাহ বা সচ্চরিত্রকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা হয় কেন?
উত্তর: আখলাকে হামিদাহর মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতে উত্তম প্রতিদান লাভ করা যায়। এ কারণে এটিকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা হয়। আখলাকে হামিদাহ মানবীয় মৌলিক গুণ ও জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদ । মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন সুখ, শান্তি উত্তম আখলাকের ওপরেই নির্ভরশীল। প্রশংসনীয় আচরণ ও স্বভাব কিয়ামতের দিন মুমিনের পাল্লা ভারী করবে। একটি হাদিসে রাসুল (স) বলেন, “নিশ্চয়ই (কিয়ামতের দিন) মিয়ানে সুন্দর চরিত্র অপেক্ষা ভারী বস্তু আর কিছুই থাকবে না।” (তিরমিযি) দুনিয়ার জীবনেও সচ্চরিত্র ব্যক্তিকে সমাজের সবাই ভালোবাসে, বিশ্বাস করে। এরূপ গুরুত্বের কথা বিবেচনা করেই আখলাকে হামিদাহকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা হয় ।
প্রশ্ন-২. ইসলামি নৈতিকতার মূল ভিত্তি তাকওয়া- ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ইসলাম যে নৈতিক গুণাবলি অর্জনে উৎসাহিত করে সেগুলো অর্জনের মূল উপায় হলো তাকওয়া তাকওয়াবান ব্যক্তি বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ তায়ালা সবকিছু দেখেন, শোনেন, জানেন। ফলে তিনি কোনোরূপ অন্যায় কাজ করতে পারেন না। কোনোরূপ অশ্লীল ও অশালীন কথা, কাজ ও চিন্তা-ভাবনা করতে পারেন না। বরং সকল সৎ ও সুন্দর গুণ অনুশীলনে অনুপ্রাণিত হন।এভাবে তাকওয়া মানুষকে নৈতিক ও মানবিক আদর্শে আদর্শবান করে তোলে। তাই বলা হয়, ইসলামি নৈতিকতার মূল ভিত্তি হলো তাকওয়া ।
প্রশ্ন-৩. ইসলামি জীবনদর্শনে ওয়াদা পালন করা আবশ্যক কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: ওয়াদা পালন আখলাকে হামিদাহর অন্যতম হওয়ায় ইসলামি জীবন দর্শনে এটি পালন করা আবশ্যক। কাউকে কোনো প্রকার প্রতিশ্রুতি বা কথা দিলে তা যথাযথভাবে রক্ষা করাকে ওয়াদা পালন বলে।মানবজীবনে এর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ওয়াদা পালন সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে। যে ব্যক্তি ওয়াদা পালন করে তাকে সবাই ভালোবাসে, তার প্রতি সকলের আস্থা ও বিশ্বাস থাকে।সমাজে সে শ্রদ্ধা ও মর্যাদা লাভ করে। তাই ইসলামি জীবন দর্শনে ওয়াদা পালন করা আবশ্যক
প্রশ্ন-৪. 'সত্যবাদিতা মুক্তি দেয়- বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: ‘সত্যবাদিতা মুক্তি দেয়। এটি একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ । সত্যবাদিতা একটি মহৎগুণ। সত্যবাদিতার আরবি প্রতিশব্দ আস- সিল্ক। বাস্তব ও প্রকৃত ঘটনা বা বিষয় প্রকাশ করাকে সিদ্ক বা সত্যবাদিতা বলা হয়।এর ফলে মানুষ দুনিয়াতে সম্মানিত ও মর্যাদাবান হয় এবং আখিরাতে সহজে জান্নাত লাভ করতে পারে। এ কারণেই বলা হয়, সত্যবাদিতা মুক্তি দেয়।
প্রশ্ন-৫. আমানত রক্ষা করতে হবে কেন? ব্যাখ্যা করো ।
উত্তর: আমানত রক্ষা করা ইমানের অঙ্গস্বরূপ। মুমিন ব্যক্তি কোনো অবস্থাতেই আমানতের খিয়ানত করতে পারে না। মহানবি (স) বলেছেন, 'যার মধ্যে আমানতদারি নেই, তার ইমান নেই।' খিয়ানতকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না। খিয়ানত প্রকৃতপক্ষে দারিদ্র্য ডেকে আনে। তাই একজন মুমিনের জন্য আমানত রক্ষা করা আবশ্যক।
প্রশ্ন-৬. মানবসেবা করা মুমিনের অন্যতম গুণ— ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: আলোচ্য কথাটির মাধ্যমে মানবসেবার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। মানবসেবা আখলাকে হামিদার অন্যতম গুণ। এটি মানুষের উন্নত চরিত্রের পরিচায়ক। মুমিন হতে হলে মানুষকে অবশ্যই এ গুণের চর্চা করতে হবে।যে ব্যক্তি মানুষের সেবা করেন তিনি মহৎপ্রাণ। আল্লাহ তায়ালা এরূপ ব্যক্তিকে ভালোবাসেন। মুমিন ব্যক্তি কখনো মানুষের বিপদে সাহায্য না করে থাকতে পারেন না। মুমিন ব্যক্তি ইসলামের মৌলিক বিষয়সমূহে বিশ্বাস করে। সে ইসলামে অন্তর্ভুক্ত থাকার উদ্দেশ্যেই মানবসেবায় রত থাকে। এ কারণে বলা হয়েছে মানবসেবা মুমিনের অন্যতম গুণ ।
প্রশ্ন-৭. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা প্রয়োজন। আমাদের চারপাশে অনেক অমুসলিম মানুষ বাস করে। তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।তারা আল্লাহর সৃষ্টি। তাদের কষ্ট দিলে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন। তাই তাদের সাথে সদাচরণ করতে হবে, তাদের সাহায্য-সহযোগিতা করতে হবে। তাদের বিপদে এগিয়ে আসতে হবে। এতে সমাজ থেকে হানাহানি বন্ধ হবে। আর এ কাজের ফলে আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কারও পাওয়া যাবে। এ কারণে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রয়োজন ।
প্রশ্ন-৮.'দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ'– বুঝিয়ে লেখো।
উত্তর: স্বদেশের প্রতি ভালোবাসা ইমানের অঙ্গ। প্রকৃত মুমিন ব্যক্তি নিজ জন্মভূমিকে ভালোবাসেন। দেশের স্বার্থরক্ষায় কাজ করেন। অপরদিকে যারা দেশকে ভালোবাসে না, তারা চরম অকৃতজ্ঞ। তারা দেশদ্রোহী ও জঘন্য চরিত্রের অধিকারী আর এরূপ ব্যক্তিরা কখনো প্রকৃত ধার্মিক ও মুমিন হতে পারে না। একারণেই বলা হয়েছে— 'দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ' ।
প্রশ্ন-৯. 'পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: 'পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক।'- উক্তিটির মাধ্যমে পবিত্রতার অপরিসীম গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। প্রত্যেক মুসলমানের সর্বপ্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হলো আল্লাহর প্রতি ইমান আনা। আর ইমান আনার পর আল্লাহর ইবাদত করা প্রত্যেকের দায়িত্ব। কিন্তু পবিত্রতা ছাড়া কোনো ইবাদতই কবুল হয় না। সালাত আদায়ের জন্য মানুষের শরীর, পোশাক ও সালাতের স্থান পরিষ্কার ও পবিত্র হতে হয়। এগুলো নাপাক থাকলে সালাত কবুল হয় না। পবিত্রতার এ তাৎপর্যপূর্ণ গুরুত্বের কথা বিবেচনা করেই পবিত্রতাকে ইমানের অর্ধেক বলা হয়
প্রশ্ন-১০. আত্মশুদ্ধি কেন প্রয়োজন? ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা লাভ করতে আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন । আত্মশুদ্ধি মানুষকে পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত করে। এরূপ মানুষ সব ধরনের কুপ্রবৃত্তি থেকে বেঁচে থাকে। সকল পাপাচার ও অনৈতিক কাজ থেকে দূরে থাকে। ফলে সমাজে সে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে সকলের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা লাভ করে। পরকালীন জীবনের সফলতা ও মুক্তি আত্মশুদ্ধির ওপর নির্ভরশীল। যে ব্যক্তি দুনিয়াতে নিজ আত্মাকে পবিত্র রাখবে পরকালে সেই মুক্তি লাভ করবে। তার জন্য পুরস্কার হবে জান্নাত। তাই আমাদের সকলেরই আত্মশুদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করা উচিত।
প্রশ্ন-১১. ইসলামি শরিয়তে গিবত নিষিদ্ধ কেন?
উত্তর: আল্লাহর অপছন্দনীয় হওয়ায় গিবত অবশ্যই হারাম বা নিষিদ্ধ । গিবত হলো অসাক্ষাতে কারো পরনিন্দা করা বা দোষ বলা। ইসলামি শরিয়তে গিবত সম্পূর্ণ হারাম। কারও গিবত করা যেমন হারাম তেমনি কারো গিবত শোনাও হারাম। গিবতকারীকে আল্লাহ মাফ করেন না যতক্ষণ না যার গিবত করা হয়েছে সে ব্যক্তি মাফ করে। গিবত আল্লাহর নিকট খুবই অপছন্দীয়। এজন্য গিবত অবশ্যই নিষিদ্ধ ।
প্রশ্ন-১২.‘হিংসা-ই হলো মুমিনের প্রধান শত্রু’– কথাটি ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: হিংসা মানুষের চরিত্র এবং নেক আমলসমূহ ধ্বংস করে দিতে প্রধান শত্রুর ভূমিকা পালন করে। হিংসুক কখনোই সচ্চরিত্রবান হতে পারে না। হিংসার অভ্যাস হিংসুকের মধ্যে গর্ব, অহংকার, পরশ্রীকাতরতা , শত্রুতা অন্যের অনিষ্ট কামনা করার মানসিকতা গড়ে তোলে । এতে ব্যক্তি ও সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া হাদিস মতে, আগুন যেমন কাঠকে খেয়ে ফেলে হিংসাও তেমনি মানুষের সৎকর্মগুলো নষ্ট করে দেয়। এ কারণে হিংসা মুমিনের প্রধান শত্রু।
প্রশ্ন-১৩.ফিতনা-ফাসাদের কুফল লেখো।
উত্তর: ফিতনা-ফাসাদ মারাত্মক অপরাধ। ফিতনা-ফাসাদ সমাজের ঐক্য সংহতি বিনষ্ট করে। এর ফলে মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্ভ্রমের কোনো নিরাপত্তা থাকে না। মানুষ স্বাধীনভাবে নিজ ধর্ম পালন করতে পারে না । শিক্ষা-দীক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, লেনদেন ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা যায় না। এর কারণে সমাজে সকল অন্যায়- অত্যাচারের দরজা খুলে যায়। ফলে সমাজ ও দেশে অরাজকতা দেখা দেয় ।
প্রশ্ন-১৪. কর্মবিমুখতা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোনো কাজ না করে অলস বা বেকার বসে থাকাকে কর্মবিমুখতা বলে । মানবজীবনে কাজের কোনো বিকল্প নেই। জীবনে বড় হওয়ার জন্য, জীবিকা উপার্জনের জন্য মানুষকে বহু কাজ করতে হয়। সময়মতো যথাযথভাবে এসব কাজ সম্পাদনের ওপরই মানুষের উন্নতি ও সফলতা নির্ভর করে। পক্ষান্তরে যোগ্যতা ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও অলসতা বা অন্য কোনো কারণে স্বেচ্ছায় কোনো কাজ না করে বেকার বসে থাকাই হলো কর্মবিমুখতা। এটি মানুষের মধ্যে অলসতা সৃষ্টি করে। ফলে মানুষ অকর্মণ্য হয়ে পড়ে। মানুষের কর্মস্পৃহা, কর্মক্ষমতা লোপ পায়। বস্তুত, অলস মস্তিষ্ককে শয়তানের কারখানা বলা হয়। তাই আমাদের কর্মবিমুখতা পরিহার করা উচিত
প্রশ্ন-১৫. ইসলাম সুদকে হারাম ঘোষণা করেছে কেন?
উত্তর: সুদ অত্যন্ত জঘন্য অর্থনৈতিক অপরাধ হওয়ায় ইসলাম এটিকে হারাম ঘোষণা করেছে।সুদ মানবসমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্যের জন্ম দেয়। ধনী আরও ধনী হয় এবং গরিব ক্রমান্বয়ে গরিব হয়। এ কারণে অর্থনৈতিক উন্নতি ও জাতীয় প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সুদ সমাজে মারামারি ও হানাহানির সূত্রপাত ঘটায়। সমাজে নৈতিক অবক্ষয় ডেকে আনে, তাছাড়া সুদের লেনদেনকারীকে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (স) অভিশাপ দিয়েছেন। এজন্য ইসলাম সুদকে হারাম ঘোষণা করেছে।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. মানবজীবনে সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ হলো—
ক) তাকওয়া
খ) ইহসান
গ) আখলাক
ঘ) আদল
উ:গ
২.সুন্দর চরিত্রই পুণ্য'- কে বলেছেন?
ক) আল্লাহ তায়ালা
খ) মহানবি (স)
গ) আরবি প্রবাদ
ঘ) মুসলিম মনীষী
উ:খ
৩.তাকওয়া শব্দের অর্থ কী?
ক) চুক্তি
খ) অঙ্গীকার
গ) বেঁচে থাকা
ঘ) প্রতিশ্রুতি
উ:গ
৪. মিজান খোদাভীরু হতে চায়। সেজন্য সর্বাগ্রে তাকে চর্চা করতে হবে—
ক) সত্যবাদিতার
খ) মানবসেবার
গ)তাকওয়ার
ঘ)শালীনতার
উ:গ
৫. ইসলামে নৈতিকতার মূলভিত্তি কী?
ক) সত্যবাদিতা
খ)আখলাক
গ) আদল
ঘ) তাকওয়া
উ:ঘ
৬. আল্লাহ তায়ালার কাছে অত্যধিক মূল্য কোনটি?
ক) আমানতদারি
খ) - কর্তব্যপরায়ণতা
গ) সত্যবাদিতা
ঘ) তাকওয়া
উ:ঘ
৭. 'নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকিদের ভালোবাসেন।' এটি কোন সূরার অন্তর্গত?
ক) আত্-তাওবা
খ) আন-নিসা
গ) আল্-ইমরান
ঘ) আল-বাকারা
উ:ক
৮. তাকওয়া অর্জনের ফলে একজন মানুষ—
i. অশ্লীল ও অশালীন কর্ম থেকে বিরত থাকে
ii. মানবিক ও নৈতিক গুণাবলিতে উদ্বুদ্ধ হয়
iii. অপরের প্রতি সহানুভূতিপরায়ণ হয়
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ)i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii ও iii
উ:ঘ
৯. শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি কোনটি—
i. সত্যবাদিতা
ii. আল্লাহভীতি
iii. সৎকর্ম
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ)i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii ও iii
উ:ঘ
১০. যে ব্যক্তি ওয়াদা পালন করে না, তার কী নেই?
ক) দীন
খ) ইমান
গ) চরিত্র
ঘ) আমানত
উ:ক
১১. কোনটি সকল পাপের মূল?
ক) নামায ত্যাগ করা
খ) খুন করা
গ) মিথ্যা বলা
ঘ) মাপে কম দেওয়া
উ:গ
১২.“হে ইমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো।” আয়াতটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে--
ক) আমানতের গুরত্ব
খ) সত্যবাদিতার গুৰুত্ব
গ) শালীনতার গুরুত্ব
ঘ) পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব
উ:খ
১৩. নৈতিক গুণাবলির অন্যতম প্রধান গুণ হচ্ছে—
ক) ওয়াদা
খ) সত্যবাদিতা
গ) শালীনতার গুরুত্ব
ঘ) পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব
উ:খ
১৪. ইসলামি সমাজব্যবস্থার মূলভিত্তি কোনটি?
ক) হজ করা
খ) আমানতদারিতা
গ) শালীনতা বজায় রাখা
ঘ) সম্পদশালী হওয়া
উ:গ
১৫. 'হাদিসে কোন গুণটিকে পুরোটাই কল্যাণময়' বলা হয়েছে?
ক) তাকওয়া
খ) শালীনতা
গ) আমানত
ঘ) সত্যবাদিতা
উ:খ
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ১৬ ও ১৭ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
শায়লা ব্যাংকে চাকরি করেন। তিনি সুরুচিপূর্ণ পোশাক পরিধান করে অফিসে যান। কথাবার্তা, চালচলনে ভদ্র আচরণ করেন।
১৬. শায়লার মধ্যে নিচের কোনটির পরিচয় পাওয়া যায়?
ক)শালীনতা
খ) আদল
গ) আহদ
ঘ) সত্যবাদিতা
উ:ক
১৭. তার ঐ আচরণের ফলে—
i. মানসম্মান সুরক্ষিত থাকবে
ii. সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে
iii. পরকালীন সফলতা লাভ করবে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ)i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii ও iii
উ:ঘ
১৮. আমানতের খিয়ানত করা কার চিহ্ন?
ক) ফাসিকের
খ) কাফিরের
গ) মুনাফিকের
ঘ) মিথ্যাবাদীর
উ:গ
১৯. 'মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত।' এ হাদিস থেকে বোঝা যায়, জান্নাত পাওয়া যাবে—
ক) মায়ের পায়ের নিচে
খ) মায়ের পা জড়িয়ে
গ) মায়ের সেবার মাধ্যমে
ঘ) মায়ের অনুমতিক্রমে
উ:খ
২০. কোন সূরায় নারীদের শালীনতা রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে?
ক) সূরা বাকারা
খ) সূরা নিসা
গ) সূরা আহযাব
ঘ) সূরা আনআম
উ:গ
২১. কুরআন মজিদে 'নারীগণ তোমাদের ভূষণ আর তোমরা তাদের ভূষণ' এর দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
ক) বৈষম্য
খ) সমতা
গ) পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব
ঘ) নারীর শ্রেষ্ঠত্ব
উ:খ
২২.দেশপ্রেম ও দেশের সেবা করা কী?
ক) মুস্তাহাব
খ) সুন্নত..
গ) ইবাদতস্বরূপ
ঘ) ইবাদতের মূল
উ:গ
২৩. ব্যক্তিজীবনে সফলতা লাভের প্রধানতম হাতিয়ার –
ক) সত্যবাদিতা
খ) কর্তব্যপরায়ণতা
গ) পরিচ্ছন্নতা
ঘ) সচ্চরিত্র
উ:খ
২৪. 'পবিত্রতা' এর আরবি প্রতিশব্দ কী?
ক) তাহারাত
খ) নাজাসাত
গ) হাকিকাত
ঘ) খিলাফাত
উ:ক
২৫. সম্পূর্ণরূপে পবিত্র হতে কী ব্যবহার করতে হয়?
ক) ঢিলা
খ)-কুলুখ
গ) টিস্যু
ঘ) পানি
উ:ঘ
২৬. আত্মশুদ্ধির আরবি প্রতিশব্দ হলো—
ক) তাসমিয়াহ
খ) তালবিয়াহ
গ) তাযরিয়াহ
ঘ) তাযকিয়াহ
উ:ঘ
২৭. অন্তর পরিষ্কারের যন্ত্র কী?
ক) তওবা
খ) যিকির
গ) তিলাওয়াত
ঘ) নামায
উ:খ
২৮. আত্মশুদ্ধি মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করে
i. অন্তরের পবিত্রতা
ii. পার্থিব সচ্ছলতা
iii. নৈতিকতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ)i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii ও iii
উ:খ
২৯. আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার মানবজীবনের অপরিহার্য কাজ। কারণ এর ওপরই নির্ভর করে—
(ক) সামাজিক শান্তি
(খ) মানবজীবনের শ্রেষ্ঠত্ব
(গ)সৎ ও ন্যায় কাজের প্রসার
(ঘ) ইহকাল ও পরকালের সাফল্য
উ:ঘ
৩০. হযরত দাউদ (আ)-এর পেশা কী ছিল?
ক) কামার
খ) কৃষি
গ)ব্যবসা
ঘ) পশু চরানো
উ:ক
৩১. আখলাকে যামিমাহর অপর নাম কী?
ক) আখলাকে হামিদাহ
খ) আখলাকে হাসানাহ
গ) হুসনুল খুলক
ঘ) আখলাকে সায়্যিআহ
উ:ঘ
৩২. কোনটি আখলাকে যামিমাহ নয়?
ক) ঠাট্টা-বিদ্রূপ
খ) হিংসা-বিদ্বেষ
গ) মানবসেবা
ঘ) পরচর্চা
উ:গ
৩৪. অসাক্ষাতে কারো দোষ বলাকে কী বলা হয়?
ক) গিবত
খ) হাসাদ
গ) অপবাদ
ঘ) হিংসা
উ:
৩৫. ‘হাসাদ' শব্দের অর্থ কী?
ক) পরনিন্দা
খ) হাসাদ
গ) হিংসা
ঘ) অহংকার
উ:গ
৩৬. জাতীয় ঐক্য, সংহতি ও উন্নতির পথে অন্তরায় কোনটি?
ক) হিংসা
খ) ফিতনা
গ)গিৰত
ঘ) অহংকার
উ:ক
৩৭. অন্যের উন্নতি ও সুখ ধ্বংস কামনা করাকে কী বলে?
ক) গিৰত
খ) হিংসা
গ) সুদ
ঘ) ঘুষ
উ:খ
৩৮. কর্মবিমুখতা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করে?
ক) উদ্দীপনা
খ) অলসতা
গ) অহংকার
ঘ) হিংসা
উ:খ
৩৯. কোনটির ফলে সমাজে অন্যায়-অত্যাচারের দরজা খুলে যায়?
ক) হিংসা
খ) কর্মবিমুখতা
গ) সুদ-ঘুষ
ঘ) ফিতনা-ফাসাদ
উ:ঘ
৪০. ফিতনা দ্বারা বোঝায় বলে --
i. সুশৃঙ্খল অবস্থা
ii. বিশৃঙ্খল অবস্থা
iii. অরাজক পরিস্থিতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক) i ও ii
খ)i ও iii
গ) ii ও iii
ঘ) i,ii ও iii
উ:গ
৪২. 'সুদ'-এর আরবি প্রতিশব্দ কী?
ক) (আর-রিবা)
খ) (আল-বাইয়ু)
গ) (আর-রিশওয়াজত্ব)
ঘ) (আল-হাসাপু)
উ:ক
৪৩. যে ঋণ কোনো লাভ নিয়ে আসে তাকে কী বলে?
ক) ব্যবসা
খ) মুনাফা
গ) ঘুষ
ঘ) সুদ
উ:ঘ
৪৪. ইসলামে ঘুষ ও সুদের বিধান কী?
ক) মুস্তাহাব
খ) হারাম
গ) হালাল
ঘ) মাকরুহ
উ:খ
সৃজনশীল প্রশ্ন
১. ফাতেমা ও শাহানা দুই বান্ধবী। ফাতিমা কথা-বার্তা, আচার- ব্যবহার, পোশাক-পরিচ্ছদ সবকিছুতেই মার্জিত ও গ্রহণযোগ্যতা বজায় রাখে। তাই বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী তাকে ভালোবাসে।
বিষয়টি শাহানার পছন্দ হয়নি। তাই সে ফাতিমা সম্পর্কে বাজে মন্তব্য করে এবং তার নিন্দা করে বেড়ায়। বিষয়টি জানতে পেরে শ্রেণি শিক্ষক আকলিমা বেগম শাহানাকে বলেন “আচরণের পরিবর্তন না করলে
তোমাকে পরকালে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।”
ক. হিংসা কী?
খ. 'ফিতনা হত্যার চেয়েও জঘন্য'- ব্যাখ্যা করো।
গ. ফাতিমার আচরণ শনাক্তপূর্বক মানবজীবনে এর গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।
ঘ. শাহানার কর্মটি শনাক্ত করে এর কুফল বিশ্লেষণ করো।
২. জনাব ‘ক’ এবং ‘খ’ দুই বন্ধু। 'ক' প্রতি বছর বৃক্ষমেলা থেকে বনজ ও ফলদ গাছ ক্রয় করে রাস্তার দু'পাশে রোপণ ও তার পরিচর্যা করেন। তার গাছের ফলাদি পশু-পাখি খেলেও তিনি সন্তুষ্ট থাকেন।
অপরদিকে 'খ' একজন প্রত্যন্ত এলাকার নাগরিক। এবারের বন্যায় এলাকার সকল রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে যায় । তিনি তার ব্যক্তিগত তহবিল হতে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে গ্রামের মেঠো পথ সংস্কার করে দেন।
ক. ‘সুন্নাহ' কী?
খ. ইসলামের প্রাথমিক যুগে হাদিস লিখে রাখা নিষিদ্ধ ছিল কেন?
গ. জনাব ‘ক'-এর কাজটি তোমার পাঠ্যবইয়ের হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জনাব ‘খ’-এর কাজটি চিহ্নিতপূর্বক ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করো।
৩. জাকির হোসেন ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে গ্রামের বাড়িতে আসলে তার বন্ধুদের সাথে একত্রে আড্ডা দেয়।
এর মধ্যে এক বন্ধু বলল, আসলামকে দেখছি না। তোমরা তার সম্পর্কে জান? তৎক্ষণাৎ শিহাব বলল, আরে সে তো অসৎ চরিত্রের লোক। সে মিথ্যা বলে, মানুষকে ধোকা দেয়। সে তো আমার কাছ থেকে ২৭ কেজি
মাছ নিয়ে ২৫ কেজি মাছের দাম পরিশোধ করেছে। তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দাঁড়িপাল্লায় সবসময় ২০ গ্রাম কম দিয়ে ক্রেতাদের ঠকায়।
ক. হিংসা কী?
খ. মন্দ চরিত্রের লোক সমাজে ঘৃণিত কেন ?
গ. শিহাবের আচরণে কী প্রকাশ পেয়েছে? ব্যাখ্যা করো। .....
ঘ. আসলামের ক্রেতাদের ঠকানোর বিষয়টি পাঠ্যপুস্তকের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৪. একজন দুধ বিক্রেতা মহিলা তার মেয়েকে দুধের সাথে কিছু পানি মিশানোর কথা বলেন। মেয়ে পানি মিশানো থেকে বিরত থাকলো । মেয়ে তার মায়ের উদ্দেশ্যে বলল, কাজটি সঠিক নয়। কেউ না দেখলেও এমন
এক সত্তা রয়েছেন যিনি সবকিছু দেখেন। দুধ বিক্রেতা মহিলার বড় বোন অনিকা একজনের দোষ অন্যজনের নিকট বলে বেড়ায়। অনিকার স্বামী এ ধরনের গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য পরামর্শ দিয়ে বলেন,
'এ ধরনের কাজ মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মতো
জঘন্য অপরাধ।'
ক. হাদিস কী?
খ. ফিতনা হত্যার চেয়েও জঘন্য'— সংক্ষেপে ব্যাখ্যা করো ।
গ. দুধ বিক্রেতার মেয়ের আচরণে আখলাকে হামিদার কোন গুণটি ফুটে উঠেছে?
ঘ. অনিকার আচরণটি চিহ্নিত করে তার স্বামীর বক্তব্যটি পাঠ্যবইয়ের আলোকে বিশ্লেষণ করো।
৫. মেহজাবিন আল্লাহ তায়ালার ভয়ে যাবতীয় পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহ সবকিছু দেখেন। মেহজাবিনের
ভাই সিয়াম একদিন দেখতে পেল, মানুষের ভিড়ের কারণে একজন বয়স্ক মহিলা বাসে উঠতে পারছেন না। তখন সিয়াম ঐ মহিলাকে সম্মানের সাথে বাসে ওঠার ব্যবস্থা করে দিল। সিয়ামের বাবা খুশি
হয়ে বললেন, আমাদের সবারই সিনিয়র নাগরিকদের সম্মান দেওয়া উচিত।
ক. 'সিদক' কাকে বলা হয়?
খ. আখলাকে হামিদাহকে শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা হয় কেন?
গ. মেহজাবিনের মধ্যে আখলাকে হামিদাহর কোন গুণটি কাজ করেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ, সিয়ামের কর্মকাণ্ডে যে বিষয় ফুটে উঠেছে তা চিহ্নিতপূর্বক তার বাবার উক্তিটি বিশ্লেষণ করো।
৬. রবিউল্লাহ সাহেব একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য তাকে একটি উন্নত দেশে পাঠানো হয়েছে। প্রশিক্ষণের চমৎকার ফলাফল করায় তাকে এ দেশে অনেক সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরির
প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি সেটি গ্রহণ না করে নিজ দেশে শিক্ষকতার জন্য ফিরে আসেন।
অপরদিকে তার সহকর্মী জনাব 'এ' নিয়মিত ক্লাশ নেন না। কোনো দায়িত্ব দিলে ঠিকমতো পালন করেন না। রবিউল্লাহ সাহেব একদিন জনাব 'এ' কে বললেন, 'আমাদের প্রত্যেককেই দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা
করা হবে।'
ক. মিতব্যয়িতার পরিচয় দাও।
খ. আত্মশুদ্ধি প্রয়োজন কেন? ব্যাখ্যা করো ।
গ. রবিউল্লাহ সাহেবের কর্মকাণ্ডে আখলাকে হামিদার কোন বৈশিষ্ট্যটি ফুটে উঠেছে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. জনাব 'এ'-এর কর্মকাণ্ড আখলাকে হামিদার যে বৈশিষ্ট্যটি অনুপস্থিত সেটি উল্লেখ করে এর গুরুত্ব বিশ্লেষণ করো ।
৭. আমিন মিয়া রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার একটি অস্ট্রেলিয়ান গাভী রয়েছে। গাভীটি কয়েকদিন যাবত কিছু খায় না এবং এতে গাভীর দুধও কমে গেছে। তিনি বিষয়টি নিয়ে তার এলাকায় গরুর ফার্মের মালিকের সাথে
পরামর্শ করলে, তাকে পশু চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার কথা বলেন। গাভীটি দেখে ডাক্তার বলেন, এটি কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে আমিন মিয়া গাভীটিকে দূরের একটি হাটে নিয়ে অসুখের কথা না বলে বিক্রি
করে দেন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান আসগর সাহেবের মেয়ে শিউলি দশম শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। সে তার বাবার অবস্থানের কারণে নিজেকে বড় মনে করে এবং সহপাঠীদের সাথে সহজে মিশতে চায় না। কিন্তু শিউলির
মা অত্যন্ত ধার্মিক। এজন্য শিউলির মা তাকে বলে, তোমার কাজটি নিন্দনীয় এবং তা সকল নেক আমলকে ধ্বংস করে দেবে।
ক. কর্মবিমুখতা কী?
খ. গিবতের কুফল ব্যাখ্যা করো ।
গ. আমিন মিয়ার কাজটি আখলাকে যামিমার কোন বিষয়ের বহিঃপ্রকাশ? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. শিউলির কাজটি আখলাকে যামিমার যে বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত তা চিহ্নিতপূর্বক তার মায়ের শেষোক্ত বক্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ করো ।
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url