কৌণিক দূরত্ব পরিমাপে ত্রিকোণমিতি
Math New Shyllabus-2024 Hand Note/ Goudie
নবম শ্রেণীর গণিত-2024
2024 সালের নতুন হ্যান্ড নোট গণিত
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক জাতীয় শিক্ষাক্রম- ২০২২ অনুযায়ী প্রণীত এবং ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণির জন্য নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক গণিত
অধ্যায় :7
কৌণিক দূরত্ব পরিমাপে ত্রিকোণমিতি
এই অভিজ্ঞতায় শিখতে পারবে----
- ত্রিকোণমিতিক কোণের ধারণা, প্রয়োজনীয়তা এবং পরিমাপের কৌশল
- জ্যামিতিক কোণ ও ত্রিকোণমিতিক কোণের পার্থক্য
- ত্রিকোণমিতিক কোণের আদর্শ অবস্থান এবং তার সাপেক্ষে কোণের পরিমাপ
- কোটার্মিনাল কোণ, কোয়াড্রেন্ট কোণ ও কোয়াড্রেন্টাল কোণের ধারণা ও পরিমাপ
- আদর্শ অবস্থানে ত্রিকোণমিতিক অনুপাত
- বিভিন্ন কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের আন্তঃসম্পর্ক
- ত্রিকোণমিতি ও স্থানাঙ্ক জ্যামিতির আন্তঃসম্পর্ক
- কোণ-এর রেডিয়ান পরিমাপ এবং ডিগ্রী ও রেডিয়ানের সম্পর্ক
কৌণিক দূরত্ব পরিমাপে ত্রিকোণমিতি
আমরা জেনে বা না জেনেই প্রতিদিন বিভিন্ন কাজে কৌণিক দূরত্ব কাজে লাগাই। যেমন, ক্রিকেট খেলায় একজন ব্যাটসম্যান ফিল্ডারদের কৌণিক দূরত্ব মাথায় রেখে বলে আঘাত করেন এবং রান করেন। আবার হাত দিয়ে কাজ করার সময় আমাদের হাতগুলো সবসময় বিভিন্ন কৌণিক দূরত্বকে কাজে লাগায়। আমাদের দেয়াল ঘড়ির প্রতিনিয়তকৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করছে। রাতের আকাশেযখন আমরা একটি তারা থেকে আরেকটি তারার দূরত্ব পরিমাপ করি, সেটাও মূলতঃ কৌণিক দূরত্ব। এরকম অসংখ্য উদাহারণ তোমরা পাবেযেখানে কৌণিক দূরত্ব কাজে লাগানো হয়।
কোণ পরিমাপের মাধ্যমে আমরা অনেক দূরবর্তী বস্তুর অবস্থান সম্বন্ধে জানতে পারিএবং তাদের আকার, ঘূর্ণন বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি নির্ণয় করতে পারি। এই অভিজ্ঞতায় আমরা ত্রিকোণমিতিক কোণ পরিমাপের মাধ্যমে এই ধরনের সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করব।
জোড়ায় কাজ
জোড়ায় চিন্তা করে নিচের ছকে তিনটি উদাহারণ লেখো যেখানে কৌণিক দূরত্ব ব্যবহৃত হয়।কৌণিক দূরত্ব পরিমাপ করার জন্য আমরা ত্রিকোণমিতির জ্ঞানকে কাজে লাগাই। নিচে ধারাবাহিকভাবে এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
১. ত্রিকোণমিতিক কোণের পরিমাপ (Measurement of trigonometric angle )
একটি রশ্মি তার প্রারম্ভিক বিন্দুর সাপেক্ষে প্রারম্ভিক অবস্থান থেকে ঘুরে একটি প্রান্তিক অবস্থানে পৌঁছালে একটি কোণ তৈরি হয়। পাশের চিত্র অনুযায়ী ধরি, OA একটি প্রারম্ভিক রশ্মি যা O বিন্দুর সাপেক্ষে ঘুরে OP অবস্থানে পৌছালো। তাহলে,くAOP =ⵀএকটি কোণ তৈরি হলো। ধরি, くAOP=ⵀ এখানে O কে শীর্ষবিন্দু (vertex),
OA কে আদি রশ্মি বা প্রারম্ভিকরেখা (initial line), এবং OP কে প্রান্তিক রশ্মি বা প্রান্তরেখা (terminal line) বলা হয়। OA রশ্মিকে স্থির রেখে OP রশ্মি O বিন্দুর সাপেক্ষে যে পরিমাণ ঘোরে তাকে কৌণিক দূরত্ব (angular distance) বলে। অর্থাৎ ৪ হলো কৌণিক দুরত্ব। কৌণিক দুরত্ব, পরিমাপের ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কৌণিক দুরত্বকে সাধারণত ডিগ্রী দ্বারা পরিমাপ করা হয়। OA রশ্মিকে স্থির রেখে OP রশ্মি O বিন্দুর সাপেক্ষে ঘোরালে বিভিন্ন পরিমাপের কোণ তৈরি হয়। শুরুতে যখন OP রশ্মি OA রশ্মির উপর সমপতিত থাকে তখন কোণটি হবে 0°. যদি OP রশ্মি O বিন্দুর সাপেক্ষে একবার ঘুরে এসে আবার OA রশ্মির উপর সমপতিত হয়, তখন কোণটি হবে 360°. অর্থাৎ একটি পূর্ণ ঘূর্ণনকে 360 দ্বারা ভাগ করলে যে কৌণিক দূরত্ব
তুমি কি লক্ষ করেছ তোমাদের বাসার দেয়াল ঘড়ি বা টেবিল ঘড়ি অথবা তোমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়াল ঘড়ির কাঁটাগুলো অনবরত ঘুরছে? কাঁটাগুলো বারবার 12টার উপরে ঘুরে আসছে। যদি ঘড়ির কেন্দ্র থেকে 12 এর দিকে একটি প্রারম্ভিক রশ্মি কল্পনা করি, তাহলে এই কাঁটাগুলো কতটা কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করছে, তুমি কি বলতে পারবে? কাঁটাগুলো একবার ঘুরে 12টার উপর আসলে 360° কৌণিক দূরত্ব অতিক্রম করে।আরেকবার একটি পূর্ণ ঘূর্ণন সম্পন্ন করলে 360° + 360° 720° দূরত্ব অতিক্রম করা হবে। এভাবে প্রতিটি পূর্ণ ঘূর্ণন সম্পন্ন করলে 360° যোগ হবে।
সুতরাং আমরা দেখতে পারছি, কৌণিক দূরত্বের ক্ষেত্রে কোণের পরিমাপ 360° এর বেশি হতে পারে। অর্থাৎ, ত্রিকোণমিতিক কোণ 360° এর বেশিও হতে পারে।
জোড়ায় কাজ
পাশের চিত্রে পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে A ও B দুইটি স্থানের কৌণিক দূরত্ব 15° হলেস্থান দুইটির কৌণিক দূরত্বকে সেকেন্ডে প্রকাশ করো। নিচের ঘরে উত্তর লেখো।
১.১ ধনাত্মক ও ঋণাত্মক কোণ
সংখ্যারাশির ক্ষেত্রে যেমন ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা আছে, তেমনি কৌণিক দূরত্বের ক্ষেত্রেও ধনাত্মক ও ঋণাত্মক কোণ আছে। যদি প্রান্তিক রশ্মি OP, প্রারম্ভিক রশ্মি OA এর সাপেক্ষে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘোরে, তাহলে কোণ 8 কে ঋণাত্মক কোণ (negative angle) ধরা হয়, আর যদি প্রান্তিক রশ্মি OP, প্রারম্ভিক রশ্মি OA এর সাপেক্ষে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘোরে, তাহলে কোণ ⵀ কে ধনাত্মক কোণ (positive angle ) ধরা হয় । কোণে তীর চিহ্ন ব্যবহার করে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক নির্দেশ করা হয় এবং
সংখ্যারাশির মতো কোণের আগে ‘–’ চিহ্ন দিয়ে ঋণাত্মক কোণ নির্দেশ করা হয়। পাশের চিত্রে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক কোণ নির্দেশ করা হয়েছে।
যদি প্রান্তিক রশ্মি OP, ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে অথবা ঘড়ির কাঁটার দিকে 360° এর বেশি ঘোরে, তখন কোণটি 360° এর বেশি হয় এবং আমরা সেটিকে পাশের চিত্রের মতো উপস্থাপন করতে পারি। প্রকৃতিতে বিভিন্ন বস্তুতে 360° এর বেশি কোণ দেখা যায়;
যেমন, স্পাইরাল গ্যালাক্সি, লতা জাতীয় গাছের হাত ইত্যাদি। তোমরা কি আরও কিছুর নাম বলতে পারবে যেখানে 360° এর বেশি কোণ উৎপন্ন হয়? চিন্তা করে নিচের ঘরে লেখো।
জোড়ায় কাজ
সমস্যা-০৩:
পৃথিবী কোনো একটি অবস্থান থেকে চাঁদের দূরত্ব 384,400 কিলোমিটার এবং চাঁদের ব্যাস ওই বিন্দুতে 31′ কোণ উৎপন্ন করলে, চাঁদের ব্যাস কত? [л =3.1416]
সমাধান:
এখানে, পৃথিবীর অবস্থান থেকে চাঁদের দূরত্ত্ব, r = 384,400 কি.মি.এবং চাঁদের ব্যাস দ্বারা পৃথিবীর ওই অবস্থানে উৎপন্ন কোণ,
জোড়ায় কাজ
মনে করো, তোমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বার্ষিক ক্রিয়ায় 100 মিটার দৌড়ের একটি প্রতিযোগিতা রয়েছে। সেজন্য মাঠে একটি বৃত্তাকার চক্র তৈরি করলে। ওয়াসাবি ওই প্রতিযোগিতায় 9 সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তা কেন্দ্রে 36° কোণ উৎপন্ন করে (পাশের চিত্র দেখো)।
খ) ওয়াসাবি 5 সেকেন্ডে কতদুর অতিক্রম করে?
গ) সে 12 সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে ওই দূরত্ব দ্বারা কেন্দ্রে উৎপন্ন কোণের পরিমাণ কত? ঘ) ওয়াসাবির গতিবেগ নির্ণয় করো।
ঙ) একই প্রতিযোগিতায় পীরেন 13 সেকেন্ডে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তা কেন্দ্রে 48° কোণ উৎপন্ন করে। ওয়াসাবি এবং পীরেনের মধ্যে কার দৌড়ের গতিবেগ বেশি?
অনুশীলনী
1. 5° তে কত সেকেন্ড নির্ণয় করো।
2. জ্যামিতিক রুলার এবং চাঁদা ব্যবহার করে 30° 360° 380, -20° এবং-420° কোণ আঁক।
3. রুলার এবং চাঁদা ব্যবহার করে 60°, 90°, 1800 2000 280° 750° -45°,- 400° কোণগুলো আদর্শ অবস্থানে আঁকো। এগুলো কোয়াড্রেন্ট নাকি কোয়াড্রেন্টাল কোণ তা নির্ণয় করো। কোণগুলো কোন চতুর্ভাগে আছে তা উল্লেখ করো।
4. মান নির্ণয় করো : cos 135, cot 120 ° tan390°, sin (- 30°), sec300°, csc (-570°)
5. আদর্শ অবস্থানে A(2, 3), B(-3, 1), C (-4, -4), D(1, −2), কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাত নির্ণয় করো।
6. নিম্নোক্ত বিন্দুগুলোকে। r এবং tan🛇 এর মাধ্যমে প্রকাশ করো।
b.B (-2, -1)
c.B (-4, 0)
7. রেডিয়ানে প্রকাশ কর:
b. 45°44'43"
c. 60°3015"
৪. ডিগ্রীতে প্রকাশ কর:
b.1.3177 রেডিয়ান
c. 0.9759 রেডিয়ান
9.পৃথিবীর ব্যাসার্ধ 6440 কিলোমিটার। যদি টেকনাফ ও তেঁতুলিয়ার অবস্থান পৃথিবীর কেন্দ্রে 10°6'3" কোণ উৎপন্ন করে, তবে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ার দূরত্ব কত?
10.পৃথিবীর ব্যাসার্ধ 6440 কিলোমিটার। ধরো,পৃথিবীর উপরে দুইটি স্যাটেলাইট এমন অবস্থানে আছে যে তারা পৃথিবীর কেন্দ্রে 33" কোণ উৎপন্ন করে। স্যাটেলাইট দুইটির মধ্যবর্তী দূরত্ব কত?
নতুন শিক্ষা কার্যক্রম পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম(কৌশল বা পদ্ধতি)-২০২৪
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url