জৈব অণু
Science New Shyllabus-2024 Hand Note/ Goudie
নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান-2024
2024 সালের নতুন হ্যান্ড নোট বিজ্ঞান
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক জাতীয় শিক্ষাক্রম- ২০২২ অনুযায়ী প্রণীত এবং ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে নবম শ্রেণির জন্য নির্ধারিত পাঠ্যপুস্তক বিজ্ঞান
অধ্যায় :9
জৈব অণু
অধ্যায় ৯: জৈব অণু
- জৈব অণু কী
- প্রধান প্রধান জৈব অণু
- কার্বোহাইড্রেট
- নিউক্লিয়িক এসিড
- প্রোটিন
- লিপিড
- জৈব অনুসমূহের পারস্পরিক সম্পর্ক
উদ্ভিদ ও প্রাণীর সহাবস্থানে আমাদের এই সুন্দর জীবজগত গঠিত। তোমাদের নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করে এদের সবার উৎপত্তি কোথা থেকে? সব প্রাণী কি একই জিনিস দিয়ে সৃষ্টি ? উদ্ভিদ আর প্রাণীর মধ্যে কি কোন উৎপত্তিগত পার্থক্য রয়েছে? আবার ভেবে দেখো, মানুষ সবুজ শাকসব্জি খেতে পারে, কিন্তু ঘাস কিন্তু হজম করতে পারে না। মজার ব্যাপার হলো গরুর প্রধান খাদ্যই ঘাস। তারমানে সব উদ্ভিদ ও প্রাণীর গঠনগত কিছু পার্থক্য রয়েছে যা তাদের কে আলাদা করে। সাধারণত জীবদেহ গঠনে অসংখ্য অণু প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, এদের কে জৈব অণু বলে। এই অধ্যায়ে আমরা জৈব অণু সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো ।
২.১ জৈব অণু (biomolecule)
সজীব কোষে অসংখ্য অণু গঠিত হয়। এই অণুগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র অণু এবং বৃহৎ অণু, এরা একত্রে জৈব অণু বলে পরিচিত। সাধারণত ২৫টিরও বেশি মৌলিক পদার্থ নিয়ে এসকল জৈব অণু গঠিতএদের ভিতরে ছয়টি মৌলিক পদার্থকে জৈব (O), ফসফরাস (P) ও সালফার (S)। এ সকল মৌলিক পদার্থের ইংরেজি বানানের আদ্যাক্ষর নিয়ে যে শব্দসংক্ষেপ করা হয়েছে, তা হলো CHNOPS । তোমরা ইতোমধ্যে কোষ সম্বন্ধে বিস্তারিত পড়েছ, এই জৈব অণু দিয়েই সকল কোষ তৈরি হয়। জীব জগতের গঠনের প্রেক্ষিতে CHNOPS-এর ছয়টি অণুর ভেতরে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অণু হচ্ছে কার্বন, এ কারণে বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে জীবনের ভিত্তি হচ্ছে কার্বন।
জীবদেহ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, নিউক্লিয়িক এসিড এবং লিপিড নামে চার ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে গঠিত। এডর ভেতর প্রোটিন ও নিউক্লিয়িক এসিড এই দুই প্রকার জৈব রাসায়নিক পদার্থ ছাড়া সজীব বস্তু তৈরি হয় না। এর থেকে ধারনা করা যায়, সৃষ্টির শুরু থেকেই জৈব অণুগুলি তৈরি হয়েছিল এবং বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে সেগুলো সংযুক্ত হয়ে প্রথম কোষ তৈরি হয়। বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন যে বজ্রপাত অথবা ঘন ঘন বৈদ্যুতিক ঝড়, এবং শক্তিশালী সৌর বিকিরণ ইত্যাদি কোন রাসায়নিক বিক্রিয়াকে তরান্বিত করে এবং ফলে আদি-পৃথিবীতে অজৈব অণু থেকে এই জৈব অণুগুলো তৈরি হয়েছিল। এ ধারনা কে প্রমাণ করার লক্ষ্যে ১৯৫৩ সালে বিজ্ঞানী স্ট্যাইনলি মিলার এবং হ্যারল্ড উরে পরীক্ষাগারে একটি আদি পৃথিবীর কৃত্রিম রূপ তৈরি করেছিলেন। সেখানে তাঁরা অজৈব অণু থেকে জৈব অণু তৈরি করে দেখিয়েছিলেন।
জীবদেহের মূল উপাদান, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন,নিউক্লীয়িক অ্যাসিড ও লিপিড যে জৈব রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি হয় তাদেরকে কোষের জীবজ পলিমার বলে। যেমন কার্বোহাইড্রেট সরল সুগারের (যেমন: গ্লুকোজ), প্রোটিন অ্যামিনো অ্যাসিডের, নিউক্লীয়িক অ্যাসিড মনোনিউক্লিওটাইডের এবং লিপিড ফ্যাটি অ্যাসিডের জীবজ পলিমার । এই অধ্যায়ে আমরা এই প্রধান চার ধরনের জৈব অণু সম্পর্কে আলোচনা করব।
২.১.১ কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা:
জীবদেহের একটি গুরুত্তপূর্ন গাঠনিক, সঞ্চয়ী উপাদান ও শক্তির ভান্ডার হচ্ছে কার্বোহাইড্রেট। কার্বোহাইড্রেট এক ধরনের জটিল প্রাকৃতিক জৈব যৌগ যা প্রধানত কার্বন (C), হাইড্রোজেন (H) ও অক্সিজেন (O) মৌল নিয়ে গঠিত কার্বোহাইড্রেটে কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন পরমাণু ১ : ২ : ১ অনুপাতে যুক্ত থাকে। উদ্ভিদের সবুজ অংশে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ও ক্লোরোফিলের সহায়তায় কার্বন ডাই অক্সাইড ও পানি থেকে কার্বোহাইড্রেট তৈরি হয় । এটি এমন একটি জৈবযোগ্য যা আমাদের শরীরে শক্তি উৎপাদন করে ও ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য চর্বি আকারে জমা থাকে এবং শরীরে নানাবিধ গঠনমুলক কাজে অংশগ্রহণ করে। আমাদের প্রতিদিনের খাবারের একটি বড় অংশ শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার। আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ এবং শরীরবৃত্তীয় কাজের পরিচালনাতে এই ধরণের খাদ্য গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের শরীরে পুষ্টির সাথে সম্পর্কিত মূল ৭টি পুষ্টি উপাদানের (পানি, কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ফ্যাট, প্রোটিন,
কার্বোহাইড্রেটের শরীরবৃত্তীয় ভূমিকা:
- ১। শরীরে শক্তি সরবরাহ করাই কার্বোহাইড্রেট এর প্রধান কাজ। প্রতি গ্রাম কার্বোহাইড্রেট 4 কিলো ক্যালরি শক্তি সরবরাহ করে। বেশিরভাগ কোষ শক্তির জন্য গ্লুকোজ ব্যবহার করে থাকে। দেহে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা যকৃত ও পেশিতে গ্লাইকোজেন রূপে সঞ্চিত থাকে।
- ২। মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিক পেশীর জন্য গ্লুকোজ অপরিহার্য। গ্লুকোজ কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের একমাত্র শক্তি সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করে।
- ৩। কার্বোহাইড্রেট প্রোটিন এর ক্ষয় রোধ করে করে। প্রয়োজনীয় ক্যালরি চাহিদার চেয়ে কম পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট গ্রহণের ফলে,দেহে শক্তির প্রয়োজনে, প্রোটিন বা ফ্যাট জারিত হয়ে শক্তি সরবরাহ করে।
- ৪। জটিল শর্করা যেমন: সেলুলোজ, পেকটিন মল তৈরিতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের স্বাভাবিক সংকোচন-প্রসারণ ত্বরান্বিত করে।
- ৫। পেকটিন, সেলুলোজ প্রভৃতি কার্বোহাইড্রেট রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
- ৬। দুধের শর্করা ল্যাকটোজ, ক্যালসিয়াম পরিশোষনে সাহায্য করে।
- ৭। গ্লুকোজ হতে উৎপন্ন গ্লুকো ইউরোনিক এসিড বিভিন্ন ওষুধ ও অপ্রয়োজনীয় বিষাক্ত উপাদান এর সাথে যুক্ত হয়ে মূত্রের মাধ্যমে দেহ,হতে নিষ্কাশিত হয়। এভাবে শর্করা দেহ নির্বীর্ষকরণে ভূমিকা রাখে।
- ৮। রেসিস্ট্যান্ট স্টার্চ/ অপাচ্য শর্করা বৃহদান্ত্রের সুস্থতা ও মল নিষ্কাশনে সহায়তা করে।
- ৯। গ্লাইকোজেন, হৃদপেশির শক্তির অন্যতম প্রধান উৎস।
২.১.২ নিউক্লিয়িক অ্যাসিড
- ডিএনএ এবং
- আরএনএ
ডিএনএ (DNA):
DNA এক ধরনের রাসায়নিক জৈব যৌগ এর অণুগুলি নিউক্লিওটাইড নামক অনেকগুলি ছোট অণু দ্বারা গঠিত। পাশের ছবিতে নিউক্লিওটাইডের গঠন দেখানো হয়েছে। তোমাদের একটু আগেই বলা হয়েছিল যে নিউক্লিয়িক এসিডের অন্যতম উপাদান হলো পাঁচ কার্বন বিশিষ্ট পেন্টোজ সুগার বা চিনি, নিউক্লিওটাইডের ছবিতে তোমরা সেটি দেখতে পাচ্ছ। নিউক্লিয়িক অ্যাসিডে দু ধরনের পেন্টোজ সুগার থাকে। এর একটি রাইবোজ সুগার এবং অন্যটি ডিঅক্সিরাইবোজ সুগার। ডিএনএ-এর পেন্টোজ সুগার হচ্ছে ডিঅক্সিরাইবোজ সুগার।
ছবিতে দেখতে পাচ্ছ যে প্রতিটি নিউক্লিওটাইড একটি ডিঅক্সিরাইবোজ পেন্টোজ সুগার, একটি ফসফেট গ্রুপ এবং একটি নাইট্রোজেনাস ক্ষারক বা বেস দ্বারা গঠিত। ডিএনএ-এর চারটি নাইট্রোজেনাস বেস রয়েছে যেগুলো হচ্ছে অ্যাডেনিন (adenine), গুয়ানিন (guanine), সাইটোসিন (cytosin) ও থাইমিন (thymine)। এর মধ্যে অ্যাডেনিন (A) ও গুয়ানিন (G) বেসকে পিউরিন এবং থাইমিন (T) ও সাইটোসিন (C) বেসকে পিরিমিডিন বলা হয়। অ্যাডিনিন সবসময় শুধু থাইমিনের সঙ্গে (A:T) এবং গুয়ানিন সবসময় শুধু সাইটোসিনের (G:C) সঙ্গে হাইড্রোজেন বন্ধনে আবদ্ধ থাকে ।
ডিএনএ দুই সূত্রবিশিষ্ট অসংখ্য নিউক্লিওটাইডের সর্পিলাকার গঠন যাকে পলিমার বলা হয়। ডিএনএ-এর একটি সূত্র অন্যটির পরিপূরক। একটি ডিএনএ অণুর দুটি ডিএনএ সূত্র বা স্ট্র্যান্ড একে অপরের চারপাশে পেঁচিয়ে একটি সর্পিল আকৃতি তৈরি করে যাকে ডাবল হেলিক্স বলা হয়। বিজ্ঞানী ওয়াটসন ও ক্রিক (James Watson and Francis Crick) ১৯৫৩ সালে ডিএনএ এর ভৌত ও রাসায়নিক গঠন সম্পর্কে ডিএনএ ডবল হেলিক্স মডেল (DNA Double Helix model) প্রস্তাব করেন যা তাদেরকে ১৯৬৩ সালে নোবেল পুরস্কার এনে দেয়।
DNA ভৌত গঠনঃ (Infograph)
- ১. DNA অনু দ্বিসূত্রক, এর বিন্যাস প্যাঁচানো সিঁড়ির ন্যায়, এই প্যাঁচানো সিঁড়িকে বলা হয় ডাবল হেলিক্স।
- ২. সূত্র দুটি পরস্পর বিপরীত মুখী হয়ে (৫'→৩' এবং ৩'→ ৫') সমদূরত্বে পাশাপাশি অবস্থান করে।
- ৩. সিঁড়ির দুই পাশের সিড়ি তৈরী হয় ডিঅক্সিরাইবোজ স্যুগার এবং ফসফেটের পর্যায়ক্রমিক সংযুক্তির মাধ্যমে।
- ৪. দুই দিকের দুটি সিড়ির মাঝখানের প্রতিটি ধাপ তৈরী করা হয় একজোড়া নাইট্রোজেন বেস দিয়ে। DNA অনুর এই নাইট্রোজেন বেস গুলো- অ্যাডিনিন (A) এর সাথে থাইমিন (T), গুয়ানিন (G) এর সাথে সাইটোসিন (C) যুক্ত হয় এবং এরা পরস্পর সম্পূরক।
- ৫. দুটি পলিনিউক্লিওটাইড চেইন ২০ Å দুরত্বে অবস্থান করে পরস্পর প্যাঁচানো অবস্থায় উল্টোমুখী হয়ে অবস্থান করে। এক প্যাঁচ সম্পন্ন হতে মোট দশটি নিউক্লিওটাইডের প্রয়োজন হয়।
- ৬. সিড়ির একধাপ থেকে অন্য ধাপের দুরত্ব ৩.৪A°, একটি পূর্ণাঙ্গ প্যাঁচের দৈর্ঘ্য ৩৪ Å ৷
- ৭. প্রতিটি পুর্ণাঙ্গ প্যাঁচের মধ্যে মোট ২৫টি হাইড্রোজেন বন্ড থাকে।
- ৮. DNA ডাবল হেলিক্স এর প্রতি প্যাচে একটি গভীর খাঁজ (major groove) এবং একটি অগভীর খাঁজ (minor groove) দৃশ্যমান হয় ৷
DNA -এর কাজ :
- জীবের সকল বৈশিষ্ট্য ধারণ করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে।
- ক্রোমোজোমের গাঠনিক উপাদান হিসাবে কাজ করে।
- বংশগতির আনবিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
- জীবেন সকল শারীরতাত্বিক এবং জৈবিক কাজ গুলোর নিয়ন্ত্রণ হিসেবে কাজ করে।
- ডিএনএ এর কাঠামোয় গোলযোগ সৃষ্টি হলে, নিজেই সেটা সংশোধণ করে।
- ডিএনএ এর কাঠামোয় গোলযোগ সৃষ্টি হলে, নিজেই সেটা সংশোধণ করে।
- মিউটেশনের মাধ্যমে প্রকরন সৃষ্টি করে সেটা বিবর্তনে মূখ্য কাঁচামাল হিসেবে কাজ করে।
আরএনএ (RNA):
RNA -এর কাজ :
- আরএনএ এর প্রধান কাজ হচ্ছে প্রোটিন সংশ্লেষণ করা।
- রাইবোনিউক্লিও প্রোটিন গঠন করা।
- ডিএনএ হতে বার্তা বহন করে রাইবোসোমে পৌছে দেয়া।
- বংশগত বৈশিষ্ট্য বহন করা।
২.১.৩ প্রোটিন:
অ্যামিনো এসিড (Amino Acid):
প্রোটিন সংশ্লেষ:
ছবিতে প্রোটিনের সংশ্লেষ প্রক্রিয়া দেখানো হয়েছে। DNA থেকে RNA তির করার সময় T রূপান্তরিত হয়েছে U তে । তিনটি তিনটি নিউক্লিয়াটিড একটি করে এমিনো এসিড পলিপেপ্টাইড চেইনে সংযুক্ত করেছে।
প্রোটিনের কাজ:
- প্রোটিন শারীরিক বৃদ্ধি এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে।
- প্রোটিন যুক্ত খাবার শরীরকে শক্তি সরবরাহ করে।
- কোষের অভ্যন্তরে এবং বাইরে ঘটে এমন হাজার হাজার জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সহায়তা করে।
- কিছু প্রোটিন হরমোন, যা রাসায়নিক বার্তাবাহক যা কোষ, টিস্যু এবং অঙ্গগুলির মধ্যে যোগাযোগকে সহায়তা করে।
- রক্তে এবং অন্যান্য শারীরিক তরলগুলিতে এসিড এবং ক্ষারকের ঘনত্বকে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রোটিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- প্রোটিন তরল ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য শরীরের প্রক্রিয়াগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে।
- প্রোটিন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে।
২.১.৪ লিপিড
লিপিড এর কাজঃ
- প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়ে লিপোপ্রোটিন গঠন করে এবং লিপোপ্রোটিন শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত থাকে।
- ফসফোলিপিড নামে এক ধরণের লিপিড বিভিন্ন মেমব্রেন গঠনে উপাদান হিসেবে কাজ করে।
- উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় এক ধরণের লিপিড বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
- চর্বি ও তেল জাতীয় লিপিড উদ্ভিদ দেহে সঞ্চিত খাদ্য হিসেবে জমা থাকে। বিভিন্ন তেলবীজের অঙ্কুরোদগমকালে লিপিড খাদ্যরূপে গৃহিত হয়।
- মোম জাতীয় লিপিড পাতার বহিরাবরণে স্তর সৃষ্টি করে অতিরিক্ত প্রস্বেদন রোধ করে এবং বিভিন্ন পোকামাকড়ের আক্রমন থেকেও উদ্ভিদকে রক্ষা করে।
জৈব অনুসমূহের পারস্পরিক সম্পর্ক
তোমরা ইতোমধ্যে জেনেছ যে জীবদেহের প্রধান জৈব অণুগুলি হলো কার্বোহাইড্রেট, নিউক্লিয়িক অ্যাসিড, প্রোটিন, এবং লিপিড। এই প্রত্যেকটি জৈব অণু একে অপরের গঠনের সাথে এবং জৈবিক কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারে পরস্পরের সাথে সম্পর্কযুক্ত।
নিচে এই বিষয়ে সংক্ষিপ্তে কিছু আলোচনা করা হোল :
কার্বোহাইড্রেড এবং নিউক্লিক এসিড:
কার্বোহাইড্রেড এবং লিপিড:
কার্বোহাইড্রেট মাঝে মাঝেই গ্লুকোজে রূপান্তর করা হয় যেটি তাৎক্ষণিক শক্তি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, কিংবা গ্লুকোজেন হিসেবে যকৃত অথবা পেষিতে সংরক্ষণ করা হয়। বাড়তি গ্লুকোজ ট্রাইগ্লিসারিন নামে একটি লিপিডে দীর্ঘ মেয়াদী শক্তি হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়।
কার্বোহাইড্রেড এবং প্রোটিন:
কার্বোহাইড্রেট গ্লাইকোসাইলেশান নামে প্রক্রিয়াতে প্রোটিনের সাথে সরাসরি যুক্ত হয়ে প্রোটিনের গঠনে রূপান্তর করতে পারে।
প্রোটিন ও নিউক্লিয়িক অ্যাসিড:
প্রোটিন আমাদের শরীরের কাঠামোগত উপাদান তৈরি, এবং তারা প্রয়োজনীয় ক্রিয়া-বিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। ডিএনএ তে সংরক্ষিত বার্তা গুলো প্রোটিন তৈরির মাধ্যমেই প্রকাশ পায়। হিস্টোন নামে এক ধরনের প্রোটিন নিউক্লিয়িক অ্যাসিড কে কার্যকর রাখতে সাহায্য করে।
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url