সমাজবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র অধ্যায় -৪ বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠীর জীবনধারা সাজেশন
অধ্যায় -৪ বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠীর জীবনধারা
এইচএসসি সমাজবিজ্ঞান ২য় পত্র ১০০% কমন সাজেশন-২০২৩
HSC Sociology 2nd paper100% Common Suggestion-2023
পেজ সূচিপত্র :অধ্যায় -৪ বাংলাদেশের নৃগোষ্ঠীর জীবনধারা
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. ‘Race' শব্দটির উৎপত্তি কোন শব্দ থেকে?
উত্তর: ‘Race' শব্দটির উৎপত্তি ইতালিয়ান ‘Razza' শব্দ থেকে ।
প্রশ্ন-২. ইউনেস্কো ‘Race' শব্দটির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে দেয় কত সালে?
উত্তর: ইউনেস্কো ১৯৫০ সালে ‘Race' শব্দটির ব্যবহার সীমাবদ্ধ করে দেয়।
প্রশ্ন-৩. নৃগোষ্ঠী কাকে বলে?
[সকল বোর্ড ১৯; ১৭]
উত্তর: নৃগোষ্ঠী হচ্ছে এমন একটি নির্দিষ্ট মানব সম্প্রদায় যারা বংশ পরম্পরায় কিছু সাধারণ ও অভিন্ন দৈহিক বৈশিষ্ট্য ধারণ করে থাকে।
প্রশ্ন-৪. কীসের ভিত্তিতে নৃগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়?
উত্তর: সাদৃশ্যপূর্ণ দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নৃগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা হয়।
প্রশ্ন-৫. রোডেশীয় মানব থেকে কোন নৃগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে?
উত্তর: রোডেশীয় মানব থেকে নিগ্রোয়েড নৃগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে।
প্রশ্ন-৬. সমগ্র মানবজাতিকে কয়টি নৃগোষ্ঠীর আওতায় ভাগ করা হয়?
উত্তর: সমগ্র মানবজাতিকে চারটি নৃগোষ্ঠীর আওতায় ভাগ করা হয় । যথা- ককেশয়েড, মঙ্গোলয়েড, নিগ্রোয়েড এবং অস্ট্রালয়েড।
প্রশ্ন-৭. বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীরা কোন গোষ্ঠীর লোক ছিল?
উত্তর: বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীরা প্রাক-দ্রাবিড় গোষ্ঠীর লোক ছিল ।
প্রশ্ন-৮.বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত মোট কতটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিচয় পাওয়া যায়?
উত্তর: বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত মোট ৫৭টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিচয় পাওয়া যায় ।
প্রশ্ন-৯. বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ কারা?
উত্তর: চাকমা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ
প্রশ্ন-১০.কত শতাব্দীতে চট্টগ্রামে চাকমাদের আগমন ঘটে?
উত্তর: আনুমানিক পঞ্চদশ শতাব্দীতে চট্টগ্রামে চাকমাদের আগমন ঘটে ।
প্রশ্ন-১১. চাকমারা কোন নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর: চাকমারা মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ।
প্রশ্ন-১২.‘আদাম’ কাকে বলে?
[ঢা. বো, রা. বো., দি..বো., চ. বো, সি. বো., য. বো, ব. বো. ১৬]
উত্তর: কতকগুলো চাকমা পরিবারগুচ্ছ নিয়ে গঠিত সংঘকে ‘আদাম' বলা হয় ।
প্রশ্ন-১৩.আদামের প্রধানকে কী বলা হয়?
[ম. বো., রা. বো., দি. বো, চ, বো, সি. বো., ব, বো, ২২]
উত্তর: আদামের প্রধানকে 'কারবারি' বলা হয়।
প্রশ্ন-১৪ ‘হেডম্যান' কোন নৃগোষ্ঠীর মৌজা প্রধান?
[ঢা. বো, ফু. বো., য, বো, ২২]
উত্তর: ‘হেডম্যান' চাকমা নৃগোষ্ঠীর মৌজা প্রধান ।
প্রশ্ন-১৫. চাকমারা বর্তমানে কোন ভাষা ব্যবহার করে?
উত্তর: চাকমারা বর্তমানে ইন্দো-ইউরোপিয়ান বাংলা ব্যবহার করে।
প্রশ্ন-১৬. চাকমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের নাম কী?
উত্তর: চাকমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের নাম ‘বৌদ্ধ পূর্ণিমা'।
প্রশ্ন-১৭. চাকমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব কোনটি?
উত্তর: চাকমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব 'বিজু'।
প্রশ্ন-১৮. চাকমা সার্কেলের প্রধান কে?
উত্তর: চাকমা সার্কেলের প্রধান 'চাকমা রাজা' ।
প্রশ্ন-১৯. 'পিনোন' কী?
উত্তর: 'পিনোন' হচ্ছে চাকমা নারীদের পোশাক।
প্রশ্ন-২০. গারোদের আদি নিবাস কোথায় ছিল?
উত্তর: গারোদের আদি নিবাস ছিল তিব্বত অঞ্চলে।
প্রশ্ন-২১. গারো পরিবারে যে কন্যা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি লাভ করে তাকে কী বলে?
উত্তর: গারো পরিবারে যে কন্যা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি লাভ করে তাকে 'নোকনা' বলে।
প্রশ্ন-২২. গারোরা নিজেদের কী বলে পরিচয় দেয়?
উত্তর: গারোরা নিজেদের 'আচিক মান্দি' বা 'মান্দি' বলে পরিচয় দেয়।
প্রশ্ন-২৩.গারোদের বৃহৎ মাতৃসূত্রীয় দল বা গোত্রের নাম কী?
উত্তর: গারোদের বৃহৎ মাতৃসূত্রীয় দল বা গোত্রের নাম ‘চাচ্চি'।
প্রশ্ন-২৪. বাংলাদেশের অধিকাংশ গারো কোন ভাষায় কথা বলে?
উত্তর: বাংলাদেশের অধিকাংশ গারো ‘আবেং' ভাষায় কথা বলে ।
প্রশ্ন-২৫.গারোদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মের নাম কী?
উত্তর: গারোদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মের নাম ‘সাংসারেক’।
প্রশ্ন-২৬. গারো পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নাম কী?
উত্তর: গারো পুরুষদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নাম হলো ‘গান্দো’।
প্রশ্ন-২৭. গারো নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নাম কী?
উত্তর: গারো নারীদের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের নাম হলো ‘দকমান্দা’ ও ‘দকশারি ।
প্রশ্ন-২৮. সাঁওতালরা নিজেদের কী নামে অভিহিত করতে পছন্দ করেন?
উত্তর: সাঁওতালরা নিজেদের ‘সানতাল' নামে অভিহিত করতে পছন্দ করেন ।
প্রশ্ন-২৯.সাঁওতালরা কোন নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর: সাঁওতালরা অস্ট্রালয়েড নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন-৩০.সাঁওতাল ভাষা কোন ভাষা গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর: সাঁওতাল ভাষা অস্ট্রো-এশীয় ভাষা গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন-৩১. সাঁওতাল সমাজের মূল ভিত্তি কী?
উত্তর: সাঁওতাল সমাজের মূল ভিত্তি হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েত।
প্রশ্ন-৩২. সাঁওতালরা কয়টি গোত্রে বিভক্ত?
উত্তর: সাঁওতালরা ১২টি গোত্রে বিভক্ত ।
প্রশ্ন-৩৩. কত সালে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়?
উত্তর: ১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়।
প্রশ্ন-৩৪. সাঁওতালি ভাষায় দেবতাকে কী বলা হয়?
উত্তর: সাঁওতালি ভাষায় দেবতাকে ‘বোঙ্গা' বলা হয় ।
প্রশ্ন-৩৫.সাঁওতালদের গ্রাম দেবতার নাম কী?
উত্তর: সাঁওতালদের গ্রাম দেবতার নাম 'মারাংবুরো'।
প্রশ্ন-৩৬. মণিপুরিদের আদি নিবাস কোথায়?
উত্তর: মণিপুরিদের আদি নিবাস ভারতের মণিপুর রাজ্যে ।
প্রশ্ন-৩৭.গোত্র বিভাগ অনুসারে মণিপুরিদের মধ্যে কয়টি ভাষা প্রচলিত?
উত্তর: গোত্র বিভাগ অনুসারে মণিপুরিদের মধ্যে ২টি ভাষা প্রচলিত।
যথা- ১. বিষ্ণুপ্রিয়া
২. মৈতৈ ভাষা ।
প্রশ্ন-৩৮. মণিপুরি সংস্কৃতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ কোনটি?
উত্তর: মণিপুরি সংস্কৃতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তাদের নৃত্য ও সঙ্গীত।
প্রশ্ন-৩৯. মণিপুরি মেয়েদের কী পোশাক পরতে দেখা যায়?
উত্তর: মণিপুরি মেয়েদের 'নাগ-পোশাক' পরতে দেখা যায়।
প্রশ্ন-৪০. মণিপুরি সমাজ মৃতদেহ কী করা হয়?
উত্তর: মণিপুরি সমাজে মৃতদেহ দাহ করা হয়।
প্রশ্ন-৪১. ‘খাসি' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: ‘খাসি' শব্দের অর্থ 'মাতৃগর্ভজাত’।
প্রশ্ন-৪২. খাসিয়া জনগোষ্ঠীর ভাষা কোন ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর: খাসিয়া জনগোষ্ঠীর ভাষা ‘মনখেমের’ ভাষাগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ।
প্রশ্ন-৪৩. কত বছর আগে খাসিয়ারা সিলেটে আগমন করেছে?
উত্তর: প্রায় ৫০০ বছর আগে খাসিয়ারা সিলেটে আগমন করেছে।
প্রশ্ন-৪৪. কোন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোতে মাতৃপ্রধান পরিবার দেখা যায়?
উত্তর: গারো ও খাসিয়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীতে মাতৃপ্রধান পরিবার দেখা যায় ।
প্রশ্ন-৪৫.খাসিয়ারা কোন নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর: খাসিয়ারা আদি মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন-৪৬.খাসিয়া গ্রামকে কী বলা হয়?
উত্তর: খাসিয়া গ্রামকে পুঞ্জি বলা হয় ।
প্রশ্ন-৪৭. খাসিয়াদের প্রধান দেবতার নাম কী?
উত্তর: খাসিয়াদের প্রধান দেবতার নাম উব্লাই নাংথই' ।
প্রশ্ন-৪৮. মারমারা নিজেদের কী নামে পরিচয় দেয়?
উত্তর: মারমারা নিজেদের ‘মারমা লুম্যো' নামে পরিচয় দেয়।
প্রশ্ন-৪৯. মারমারা প্রধানত বাংলাদেশের কোন জেলায় বাস করে?
[সকল বোর্ড ১৯]
উত্তর: মারমারা প্রধানত বাংলাদেশের বান্দরবান জেলায় বাস করে।
প্রশ্ন-৫০.‘মারমা' শব্দটি কোন শব্দ থেকে উদ্ভূত?
উত্তর: ‘মারমা' শব্দটি 'ম্রাইমা' শব্দ থেকে উদ্ভূত।
প্রশ্ন-৫১. মারমাদের প্রধান গোত্র কয়টি?
উত্তর: মারমাদের প্রধান গোত্র দুইটি।
প্রশ্ন-৫২.মারমাদের উপভাষার নাম কী?
উত্তর: মারমাদের উপভাষার নাম মগী ।
প্রশ্ন-৫৩. কোন মাসে মারমা সমাজে বিষু বা মহাবিষুর সংক্রান্তি পর্ব অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: চৈত্র মাসে মারমা সমাজে বিষু বা মহাবিষ্ণুর সংক্রান্তি পর্ব অনুষ্ঠিত হয় ।
প্রশ্ন-৫৪. মারমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব কোনটি?
উত্তর: মারমাদের প্রধান সামাজিক উৎসব 'সাংগ্রাই'।
প্রশ্ন-৫৫.মারমাদের ভাষায় গ্রামকে কী বলা হয়?
উত্তর: মারমাদের ভাষায় গ্রামকে 'রোযা' বলা হয়।
প্রশ্ন-৫৬.মারমাদের গৃহদেবতা কে?
উত্তর: মারমাদের গৃহ দেবতা হলেন 'চুমুংলে'।
প্রশ্ন-৫৭. কোচ জনগোষ্ঠী কোন নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
উত্তর: কোচ জনগোষ্ঠী মঙ্গোলীয় নরগোষ্ঠীর তিব্বতীয় বর্মণ শাখার অন্তর্ভুক্ত।
প্রশ্ন-৫৮. বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে কোচদের বেশি দেখা যায়?
উত্তর: বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে কোচদের বেশি দেখা যায়।
প্রশ্ন-৫৯. কোচ সমাজে সাধারণত কয় ধরনের বিবাহ প্রচলিত?
উত্তর: কোচ সমাজে সাধারণত দুই ধরনের বিবাহ প্রচলিত । যথা- বিয়া ও হাদিদাবাইয়া ।
প্রশ্ন-৬০.কোচ নৃগোষ্ঠীর ভাষা কী?
[ঢা. বো., দি, বো, সি. বো., য. বো. ১৮]
উত্তর: কোচ নৃগোষ্ঠীর ভাষার নাম তিব্বতীয় বর্মণ ।
প্রশ্ন-৬১. কোচ সমাজ কয়টি দলে বিভক্ত?
উত্তর: কোচ সমাজ সাতটি দলে বিভক্ত।
প্রশ্ন-৬২. রাখাইনদের আদিবাস কোথায় ছিল?
উত্তর: রাখাইনদের আদিবাস ছিল বর্তমান মায়ানমারের আরাকান অঞ্চল ।
প্রশ্ন-৬৩. রাখাইন শব্দটির উদ্ভব হয়েছে কোন শব্দদ্বয় থেকে?
উত্তর: রাখাইন শব্দটির উদ্ভব হয়েছে 'রক্ষা' ও ‘রাক্ষাইন' শব্দদ্বয় থেকে ।
প্রশ্ন-৬৪. বাংলাদেশে রাখাইনরা কোন কোন জেলায় বাস করে?
উত্তর: বাংলাদেশে রাখাইনরা পটুয়াখালী, কক্সবাজার, বান্দরবান ও বরিশাল জেলায় বাস করে ।
প্রশ্ন-৬৫.রাখাইনরা তাদের স্বদেশকে কী নামে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে?
উত্তর: রাখাইনরা তাদের স্বদেশকে ‘রক্ষইঙ্গী' নামে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করে।
প্রশ্ন-৬৬.রাখাইনদের বৌদ্ধ মন্দিরের পাঠশালা কী নামে অভিহিত?
উত্তর: রাখাইনদের বৌদ্ধ মন্দিরের পাঠশালা 'কিয়ং' নামে অভিহিত ।
প্রশ্ন-৬৭. রাখাইনদের প্রধান সামাজিক উৎসব কোনটি?
উত্তর: ‘সান্দ্রে' রাখাইনদের প্রধান সামাজিক উৎসব।
প্রশ্ন-৬৮. রাখাইনদের ‘সান্দ্রে' উৎসব কয়দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়?
উত্তর: রাখাইনদের ‘সান্দ্রে' উৎসব ৩ দিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন-৬৯. রাখাইনদের পাড়া প্রধানের নাম কী?
উত্তর: রাখাইনদের পাড়া প্রধানের নাম মাতব্বর ।
প্রশ্ন-৭০.রাখাইনরা কোন ধর্মাবলম্বী?
[রা. বো., কু. বো., চ. বো., ব. বো. ১৮]
উত্তর: রাখাইনরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ।
প্রশ্ন-৭১.রাখাইনদের মৃতদেহ কী করা হয়?
উত্তর: রাখাইনদের মৃতদেহ দাহ করা হয় ।
অনুধাবনমূলকপ্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন-১. এথনিক গোষ্ঠী বলতে কী বোঝ?
[ম. বো,, বা বো, দিবো, চ. বো, সি. বো, ব. বো. ২২, সকল বোর্ড ১৫]
উত্তর: এথনিক গোষ্ঠী বলতে একটি সাধারণ সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন জনগোষ্ঠীকে বোঝায় ।
এথনিক গোষ্ঠী নিজস্ব সংস্কৃতির অধিকারী। তারা এক ধরনের নির্দিষ্ট জীবিকা পদ্ধতি অনুসরণ এবং একটি নির্দিষ্ট এলাকায় বাস করে। সর্বোপরি তাদের জীবন একই ধরনের সামাজিক আচার-আচরণ, প্রথা, বিশ্বাস, বিচারব্যবস্থা রীতিনীতি ও মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত হয়।
প্রশ্ন-২. মঙ্গোলয়েড নরগোষ্ঠীর শারীরিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
উত্তর: মঙ্গোলয়েড নরগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে পিকিং মানব থেকে ।
পিকিং মানবের প্রায় সকল শারীরিক বৈশিষ্ট্য মঙ্গোলয়েডদের মধ্যে লক্ষ করা যায়। এ নরগোষ্ঠীর সদস্যদের প্রধান শারীরিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে— তাদের গায়ের রং বাদামি বা হলুদ, মাথার আকৃতি গোলাকার বা চওড়া, মুখাকৃতি চওড়া চোখের রং কালো বাদামি থেকে শুরু করে গাঢ় কালো বর্ণের, নাক ক্ষুদ্রাকৃতির, মোটা ও অনুন্নত, চোখ ক্ষুদ্রাকৃতির মাথার চুল কালো-বাদামি রংয়ের, মুখে ও গায়ে লোমের পরিমাণ বেশ কম এবং উচ্চতা মধ্যম মানের। মঙ্গোলয়ে নরগোষ্ঠীর মানুষ মধ্য, উত্তর এবং পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু অঞ্চলে বাস করে।
প্রশ্ন-৩. ককেশীয়দের শারীরিক বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: ককেশীয় নৃগোষ্ঠীর উদ্ভব হয়েছে ক্রোম্যাগনন মানব থেকে ।
ককেশীয়দের প্রধান শারীরিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে— তাদের গায়ের রং সাদা বা সাদা-লালচে এবং তাদের মাথার আকৃতি প্রধানত লম্বাকৃতির। ককেশীয়দের মুখ সরু বা লম্বাকৃতির, নাক প্রধানত উন্নত, চিকন, লম্বা এবং সরু। ককেশীয়দের চোখের রং হালকা থেকে কালো বাদামি, ঠোঁট পাতলা ধরনের এবং কান মাঝারি ধরনের।
প্রশ্ন-৪. বাঙালিকে মিশ্র বা সংকর জাতি বলা হয় কেন?
উত্তর: বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মিশ্রণে উদ্ভব হওয়ায় বাঙালিকে মিশ্র বা সংকর জাতি বলা হয় ।
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে নানা জাতিগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের লোকের আগমন ঘটেছে। যুগে যুগে তারা এদেশে এসে বসবাস এবং স্থানীয়দের বিবাহ করে পরিবার গঠন করেছে। ফলে বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের মানুষের সংমিশ্রণ ঘটেছে। আর এ কারণেই বাঙালিকে মিশ্র বা সংকর জাতি বলা হয়।
প্রশ্ন-৫.জুম চাষ বলতে কী বোঝায়?
[সকল বোর্ড '১৯; ঢা বো., রা. বো., কু, বো, সি. বো., য. বো. ১৭]
উত্তর: জুম চাষ (Shifting Cultivation) হচ্ছে পাহাড়ি এলাকায় প্রচলিত এক ধরনের বিশেষ চাষ পদ্ধতি। সাধারণত পাহাড়ের ঢালে গাছপালা কেটে, শুকিয়ে ও পুড়িয়ে ফেলার পর মাটিতে গর্ত করে একসাথে কয়েক ধরনের বীজ বপন করা হয়। সেখান থেকে ধারাবাহিকভাবে কয়েক ধরনের ফসল সংগ্রহ করা হয়। এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করাকেই জুম চাষ বলে। ভারতে জুম চাষ পোড়ু, বীরা, পোনম প্রভৃতি নামে পরিচিত।
প্রশ্ন-৬. জুম চাষ কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে? বুঝিয়ে লেখ।
[ঢা বো., কু. বো, য. বো. ২২]
উত্তর: কৃষি জমির উর্বরতা রক্ষা এবং পরিবেশগত কারণে সরকার জুম চাষকে নিষিদ্ধ করেছে।
বাংলাদেশে বসবাসরত অধিকাংশ উপজাতির অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি ছিল জুম চাষ । জুম চাষ জমির উর্বরতাকে নষ্ট করে দেয়। তাছাড়া জুম চাষের ফলে পরিবেশ মারাত্মক দূষিত হয়। শুধু তাই নয়, জুম চাষের জন্য বন জঙ্গল কেটে নষ্ট করা হয়। এসব কারণে সরকার জুম চাষকে নিষিদ্ধ করেছে।
প্রশ্ন-৭.চাকমাদের নরগাষ্ঠীগত পরিচয় দাও।
উত্তর: নৃতাত্ত্বিক বিচারে চাকমারা মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর লোক।
স্যার রিজলের মতে, চাকমাদের দেহে ৮৪.৫% মঙ্গোলীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এদের মুখমণ্ডল গোলাকার, ঠোঁট পাতলা চুল সোজা, চোখের মণি ও চুলের রং কালো, দেহ প্রায় রেশহীন, দাড়ি গোঁফ কম। উচ্চতায় তারা মাঝারি ধরনের এবং তারা সুঠাম দেহের অধিকারী।
প্রশ্ন-৮.চাকমা সমাজের উৎসব ও আচার-অনুষ্ঠান বর্ণনা কর।
উত্তর: চাকমারা সারাবছর নানা রকমের পূজা-পার্বণ, উৎসব ও আচার-অনুষ্ঠান পালন করে। তারা থানমানা পূজা, বরপরাপূজা, মা-লক্ষ্মীর পূজা, গঙ্গা পূজা, নবান্ন পূজা পালন করে। তারা তিন দিন ধরে 'বিজু' উৎসব পালন করে, যা তাদের একটি বড় সামাজিক উৎসব। বাংলা বছরের শেষ দুদিন ও নতুন বাংলা বছরের প্রথম দিন মোট তিন দিন ধরে বিজু উৎসব পালন করা হয়। বুদ্ধ পূর্ণিমা চাকমাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এছাড়া চাকমারা বৈশাখী পূর্ণিমা ও মাঘী পূর্ণিমা পালন করে। 'কঠিন চীবর দান' চাকমাদের আরেকটি প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
প্রশ্ন-৯. 'আদাম কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: চাকমা সমাজে পাড়া আদাম' নামে পরিচিত।
কতকগুলো চাকমা পরিবারের সমন্বয়েই 'আদাম' গঠিত হয়। আদামের প্রধানকে 'কারবারি' বলা হয়, তিনি চাকমা রাজা কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হন। চাকমা রাজা গ্রাম বা মৌজার প্রধানের সাথে আলোচনা করে তাকে নিয়োগ দিয়ে থাকেন। কারবারির কোনো বেতনভাতা নেই। আদামের সদস্যদের কাছ থেকে পাওয়া সম্মানই তার একমাত্র প্রাপ্য ।
প্রশ্ন-১০. গারোদের উত্তরাধিকার ব্যবস্থা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: গারোদের মধ্যে সম্পত্তির উত্তরাধিকার লাভ করে ছোট মেয়ে। বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মা ছোট মেয়ের সাথেই থাকে এবং মৃত্যুর পর বাবা-মায়ের সৎকারের দায়িত্বও ছোট মেয়ে পালন করে। গারো সমাজে মায়ের ব্যবহৃত জিনিসপত্র এবং মালিকানাধীন যাবতীয় সম্পত্তির উত্তরাধিকার ছোট মেয়েই হয়। যে মেয়ে তার মায়ের কাছ থেকে সম্পত্তি লাভ করে তাকে বলা হয় ‘নোকনা' । 'নোকনা' অর্থ হলো পরিবারের ভিত্তি।
প্রশ্ন-১১. গারোদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা কেমন? বুঝিয়ে বল।
[দিবো, চ, বো, ব. বো. ১৭]
উত্তর: গারোদের অর্থনৈতিক জীবনের ভিত্তি হচ্ছে কৃষিকাজ। আগে গারোরা বাংলাদেশে বসবাসরত পাহাড়ি এলাকার অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ন্যায় জুম চাষে অভ্যস্থ ছিল। তবে বর্তমানে পাহাড়ি অঞ্চলের গারোরা জুম চাষ করলেও সমতলের গারোদের মধ্যে এ ধরনের চাষের প্রচলন নেই বললেই চলে। বর্তমানে তারা মূলত হালচাষের সাহায্যে ধান, নানা জাতের সবজি ও আনারস উৎপাদন করে।
প্রশ্ন-১২.সাঁওতালদের নৃগোষ্ঠীগত পরিচয় বর্ণনা কর।
উত্তর: সাঁওতালরা অস্ট্রিক ভাষাভাষী আদি-অস্ট্রেলীয় জনগোষ্ঠীর বংশধর। তাদের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের সাথে মুণ্ডা, ও মালপাহাড়ি নৃগোষ্ঠীর মিল রয়েছে। সাঁওতালদের দৈহিক বৈশিষ্ট্য হলো- গায়ের রং গাঢ় কালো বর্ণের। মাথার খুলি গোলাকার, মুখগহ্বর বড়, ঠোঁট মোটা ধরনের। সাঁওতালদের চুলের রং বেশ কালো এবং কোঁকড়ানো প্রকৃতির হয়। তাদের নাক চ্যাপ্টা এবং দৈহিক উচ্চতা মাঝারি ধরনের।
প্রশ্ন-১৩.সাঁওতাল সংস্কৃতিতে নৃত্যের ভূমিকা কীরূপ?
উত্তর: সাঁওতালদের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো তাদের নৃত্য । তারা বিভিন্ন উৎসব-অনুষ্ঠানে দলীয়ভাবে নৃত্য পরিবেশন করে। তাদের একটি উল্লেখযোগ্য নাচ হলো ‘লাগড়ে' নাচ। তাদের বিয়ের অনুষ্ঠানে একটি বিশেষ ধরনের নৃত্য পরিবেশিত হয়, যার নাম ‘দং'। এর পাশাপাশি ‘লাংরে’, ‘গুলুরি’ ও হুমতি নৃত্য সারা বছরই পরিবেশিত হয়। আবার 'দাসাই’ নৃত্য কেবল ছেলেরাই উৎসব উপলক্ষে পরিবেশন করে থাকে। এসবের পাশাপাশি কোনো কোনো অঞ্চলে ‘রিনঝা’ এবং ‘ঝিকা’ নাচও পরিবেশিত হয়।
প্রশ্ন-১৪. সাঁওতালদের পোশাক-পরিচ্ছদের বর্ণনা দাও।
উত্তর: বাঙালিসহ অন্যান্য জনগোষ্ঠীর (নূনিয়া, মাহাতো, মুন্ডা, রবিদাস ইত্যাদি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী) সাথে মেলামেশার ফলে সাঁওতালদের পোশাক-পরিচ্ছদের মধ্যে তেমন কোনো ভিন্নতা দেখা যায় না। সাঁওতাল পুরুষরা ধুতি, লুঙ্গি ও গামছা পরিধান করেন। বর্তমানে অনেকেই, বিশেষত শিক্ষিত সাঁওতাল ছেলেরা প্যান্ট-শার্ট পরেন। অতীতে এ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীরা ‘ফতা’ নামক দু’খণ্ড মোটা কাপড় পরিধান করতেন। এর একটি খণ্ড নিম্নাঙ্গে এবং অপরটি ঊর্ধ্বাঙ্গে ব্যবহার করা হতো। তবে বর্তমানে দু'একজন বয়স্ক নারী ছাড়া এ পোশাক ব্যবহার করতে তেমন একটা দেখা যায় না। বরং বাঙালি সমাজের সংস্পর্শে এসে সাঁওতাল নারীরা এখন সালোয়ার, কামিজ ও শাড়িই বেশি পরিধান করেন।
প্রশ্ন-১৫.মণিপুরিদের ধর্মীয় বিশ্বাস কীরূপ? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: মণিপুরি নৃগোষ্ঠীকে দুইটি শাখায় ভাগ করা হয়।
যথা- (১) বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি এবং
(২) মৈতৈ মণিপুরি।
এ দুটি শাখার ধর্মীয় বিশ্বাসের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। মৈতৈ মণিপুরিরা তাদের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন ধর্ম 'আপোকথা -এর অনুসারী। তাদের প্রধান দেব-দেবীরা হলেন- সানামাহি, পাখংবা, শিদাবা ইত্যাদি। অন্যদিকে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরিরা হিন্দুধর্মের বৈষ্ণবীয় মতবাদের অনুসারী। তাদের গ্রামে প্রাত্যহিক পূজা-অৰ্চনা পরিচালনা করার জন্য একটি মন্দির থাকে। এসব মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ, বিষ্ণু, শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতী, জগন্নাথ ও গৌরাঙ্গের মূর্তি শোভা পায়। তারা যেসব পালন করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- শিব পূজা, দুর্গা পূজা, লক্ষ্মী পূজা, সরস্বতী পূজা, জগতবন্ধু পূজা, চেতন্য পূজা ইত্যাদি।
প্রশ্ন-১৬.মারমাদের সামাজিক জীবন সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: মারমা সমাজের প্রধান হলেন বোমাং চিফ বা বোমাং রাজা। মারমা সমাজের প্রত্যেক মৌজায় কতকগুলো গ্রাম রয়েছে। গ্রামবাসী গ্রামের প্রধানকে মনোনীত করে। গ্রাম প্রধানকে মারমারা ‘রোয়াঝা’ বলে। পিতৃতান্ত্রিক হওয়ায় মারমা পরিবারে পিতার স্থান সর্বোচ্চ হলেও পারিবারিক কাজকর্মে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে মায়ের মতামতকেও বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রশ্ন-১৭.কোচদের প্রধান উৎসবগুলো উল্লেখ কর ।
উত্তর: কোচরা সারা বৎসর বিভিন্ন উপলক্ষে নানা উৎসব পালন করে। তাদের প্রধান উৎসবের মধ্যে হেমন্তকালে ধান রোপণ করার সময় ‘গোচর পর্ণা', নতুন ফসল তোলার সময় ‘নবন খাওয়া’ ও ‘ধানের ফুল দেওয়া; পিতামাতার আত্মার কল্যাণ কামনায় ‘কৈনা গৎ;' পুত্র সন্তান লাভের আশায় ভাদ্র মাসের অষ্টম চাঁদে ‘জিড়য়া' ও 'ভাদু' এবং চৈত্র-বৈশাখ মাসে বৃষ্টির কামনায় ‘হুদুমা' ইত্যাদি প্রধান ।
প্রশ্ন-১৮. রাখাইনদের পরিবার ব্যবস্থা সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: রাখাইনদের পরিবার পিতৃতান্ত্রিক। রাখাইনদের পরিবার কাঠামোর সাথে চাকমাদের পরিবার কাঠামোর বেশ সাদৃশ্য রয়েছে। তাদের পরিবারে কর্তা হলেন পুরুষ। পরিবারে পুরুষদের প্রাধান্য লক্ষণীয়। পুরুষই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। পাড়ার প্রধান নির্বাচন করার জন্য পুরুষরাই মতামত প্রদান করেন। এক্ষেত্রে মহিলারা কোনো মতামত দিতে পারেন না। তবে পরিবারে কর্তা পুরুষ হলেও তাদের পরিবার ব্যবস্থায় মেয়েদেরও সমান প্রাধান্য দেওয়া হয়। তারা মেয়েদের অবহেলা করে না। কোনো পরিবারে বাবা কিংবা মা মৃত্যুবরণ করলে পুত্র-কন্যারা সমান হারে সম্পত্তির অংশ পায় ।
প্রশ্ন-১৯.রাখাইনদের সামাজিক সংগঠনের পরিচয় দাও।
উত্তর: রাখাইনদের সমাজব্যবস্থা পূর্ণ গণতান্ত্রিক। রাখাইন পাড়াগুলো বিভিন্ন ব্যক্তির নামে গড়ে ওঠে। রাখাইন সমাজের দানশীল ব্যক্তি বা নেতাদের নামানুসারে তাদের পাড়ার নামকরণ করা হয়। পাড়ার নেতা বা মাতবর নির্বাচিত হন সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে। পাড়ার সকল পুরুষ একত্রিত হয়ে ভোট দানের মাধ্যমে পাড়ার নেতা বা মাতব্বর নির্বাচন করেন। এ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নারীদের কোনো ভূমিকা থাকে না । তাদের ভোট দান করার কোনো ক্ষমতা নেই।
প্রশ্ন-২০. 'সাংগ্রাই' কী? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: সাংগ্রাই মারমাদের বর্ষবরণ উৎসব। চৈত্র মাসের শেষ দুদিন ও বৈশাখ মাসের প্রথম দিন মারমারা সাংগ্রাই উৎসব পালন করে । এ উৎসবে ছোট-বড় সবাই আনন্দে মেতে উঠেন। সাংগ্রাই উৎসবে তরুণ-তরুণীরা মৈত্রী পানি ছিটিয়ে একে অপরের মঙ্গল কামনা করে। পাড়ায় পাড়ায় উৎসবের আমেজে পিঠা তৈরির ধুম পড়ে যায়। এ সময় বয়স্ক পূজা করা হয়। বয়স্ক পূজার মধ্য দিয়ে মারমা সমাজের প্রবীণ ব্যক্তিদের সম্মান জানানো হয় ।
প্রশ্ন-২১. রাখাইনদের নরগোষ্ঠীগত বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: রাখাইনদের দৈহিক বৈশিষ্ট্য পর্যালোচনায় তাদেরকে মঙ্গোলীয় নৃগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় । নৃতাত্ত্বিক গবেষণানুযায়ী রাখাইনদের অধিকাংশই মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর সদস্য। রাখাইনদের মস্তক গোলাকার, নাক চ্যাপটা আকৃতির, গায়ের চামড়ার রং উজ্জ্বল বাদামি বর্ণের, চুল কালো এবং উচ্চতা মাঝারি । তবে কারও কারও গায়ের রং ঈষৎ শ্যামলাও হয়।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর
১. "যে গোষ্ঠীর সাধারণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে এবং যারা নিজস্ব পরিচিতিসহ বৃহৎ কোনো সমাজের উপগোষ্ঠী হিসেবে বসবাস করে তারাই হলো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী” – সংজ্ঞাটি কার?
ক. কোহেন ও ইয়ামস
খ. ন্যারোল
গ. উইলিয়াম পি. স্কট
ঘ. ই. বি. টেইলর
উ:গ
২. সমগ্র মানবজাতিকে কয়টি নৃগোষ্ঠীর আওতায় ফেলা হয়েছে?
ক. ৪টি
খ. ৬টি
গ. ৭টি
ঘ. ৮টি
উ:ক
৩. জাহিদের ভাসা ভাসা মুখ, নাক ক্ষুদ্র, মোটা এবং অনুন্নত । সে কোন নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত?
ক. ককেশীয়
খ. মঙ্গোলীয়
গ. অস্ট্রালয়েড
ঘ. নিগ্রোয়েড
উ:খ
৪. বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এ পর্যন্ত মোট কতটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিচয় পাওয়া গেছে?
ক. ২৩টি
খ. ২৭টি
গ. ৪৭টি
ঘ. ৫৭টি
উ:ঘ
৫. বাংলাদেশের কোন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা সর্বাধিক?
ক. চাকমা
খ. মারমা
গ. গারো
ঘ.সাঁওতাল
উ:ক
৬.বর্তমানে চাকমারা কোন ভাষা ব্যবহার করে?
ক.পালি
খ. ইন্দো-ইউরোপিয়ান বাংলা
গ. টিবেতো বর্মন
ঘ. সংস্কৃত
উ:খ
৭. নিচের কোনটি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ?
ক.সাঁওতাল
খ. ওঁরাও
গ.মনিপুরি
ঘ. রাখাইনি
উ:ঘ
৮. বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মধ্যে কোন নরগোষ্ঠীর প্রভাব বেশি?
ক. মঙ্গোলীয় ও ভেড্ডিড
খ. মঙ্গোলীয় ও ককেশীয়
গ. ককেশীয় ও ভেড্ডিড
ঘ. নিগ্রো ও মঙ্গোলীয়
উ:ক
বহুপদী সমাপ্তিসূচক প্রশ্ন ও উত্তর
৯. এথনিক সম্প্রদায় বলতে বোঝায়—
i. যারা সাধারণত পাহাড়ি এলাকায় বসবাস করে
ii. যাদের জীবনযাপনের ধরন ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির
iii. যাদের একটি নিজস্ব পরিচিতি আছে
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
উ:গ
১০. গারোদের বিবাহ ব্যবস্থায় অনুসৃত হয়—
i. অন্তর্বিবাহ রীতি
ii. বহিঃবিবাহ
iii. মাতৃসূত্রীয় রীতি
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. ii ও iii
গ. i ও iii
ঘ. i, ii ও iii
উ:খ
অভিন্ন তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন ও উত্তর
উদ্দীপকটি পড়ো এবং ১১ ও ১২ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
সিধু বাংলাদেশের একটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য। তার আকার বেঁটে, নাক চ্যাপ্টা ও খুলি গোল। সে বগুড়ায় বসবাস করে। তারা অস্ট্রিক জনগোষ্ঠীর লোক।
১১. সিধু কোন নৃগোষ্ঠীর লোক?
ক. গারো
খ. মারমা
গ. সাঁওতাল
ঘ. রাখাইন
উ:গ
১২. সিধুর জন্য প্রযোজ্য—
i. প্রাক দ্রাবিড় গোষ্ঠীর প্রতিনিধি
ii. পিতৃতান্ত্রিক পরিবারের অন্তর্ভুক্ত
iii. ককেশয়েড নরগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ.. i ও iii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
উ:ক
বোর্ডপরীক্ষার বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর
১৩. নৃ-গোষ্ঠী স্বতন্ত্র কেন?
[সকল বোর্ড '২১]
ক. এদের ধর্ম এক
খ. এদের সংস্কৃতি ভিন্ন
গ. তাদের একই পূর্বপুরুষ
ঘ. তাদের ভাষা অভিন্ন
উ:খ
১৪. নৃ-গোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য কোনটি?
[সকল বোর্ড ১৯ ]
ক. বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মতো ভাষা
খ. ধর্ম, নরবংশে আলাদা
গ. স্বজাত্যবোধের অনুপস্থিতি
ঘ. ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশ
উ:খ
১৫. বিজু কী?
[সকল বোর্ড '২১]
ক. মারমাদের ভাষা
খ. গারোদের উৎসব
গ. রাখাইনদের ভাষা
ঘ. চাকমাদের উৎসব
উ:ঘগ
১৬. আদাম কী?
[সকল বোর্ড '২১; ১৯]
ক. মৌজা
খ. গ্রাম
গ. পাড়া
ঘ. সার্কেল
উ;গ
১৭. চাকমা সমাজে মৌজা প্রধানকে কী বলা হয়?
[সকল বোর্ড ১৮]
ক. রাজা
খ. কারবারি
গ. হেডম্যান
ঘ. মাঝি
উ:গ
১৮. ‘আচ্ছিক’ ও ‘লামদানী' নামে গোত্র দুটি যে নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত—
[সকল বোর্ড ১৭]
ক. চাকমা
খ. রাখাইন
গ. গারো
ঘ. মণিপুরি
উ:গ
১৯.গারোদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মের নাম—
[সকল বোর্ড ১৬]
ক. বৈষ্ণব
খ.বাদখ. সর্বপ্রাণ
গ. জৈন
ঘ. সাংসারেক
উ:ঘ
২০. সাঁওতালদের ক্ষেত্রে কোনটি সঠিক?
[সকল বোর্ড ২১]
ক. এদের ভাষার নাম মৈতে
খ. এরা মাতৃতান্ত্রিক
গ. এদের কোনো বর্ণমালা বা লিপি নেই।
ঘ. আদাম এদের সংগঠন
উ;গ
২১. সাঁওতালদের গ্রামপ্রধানকে কী বলে?
[সকল বোর্ড ২১]
ক. মাঝি
খ. মারাংবুরো
গ. ইতুত
ঘ. আদাম
উ:ক
২২.কোনটি মণিপুরিদের ভাষা?
[সকল বোর্ড ২২]
ক. আরাকানি
খ. মান্দি
গ. মৈতে
ঘ. অস্ট্রিক
উ:গ
২৩.মণিপুরিরা বাংলাদেশের কোন অঞ্চলে বসবাস করে?
[সকল বোর্ড ২১, ১৯]
ক. সিলেট
খ. শেরপুর
গ. বগুড়া
ঘ. বান্দরবান
উ:ক
২৪. খাসিয়া নৃগোষ্ঠীর পুঞ্জিপ্রধানকে কী বলে?
[সকল বোর্ড ১৭]
ক. রাজা
খ. হেডম্যান
গ. মন্ত্রী
ঘ. কারবারি
উ:গ
২৫. রাখাইন জনগোষ্ঠী নিম্নের কোন অঞ্চলে বসবাস করে?
[সকল বোর্ড ১৬]
ক. দিনাজপুর
খ. ময়মনসিংহ
গ. মৌলভীবাজার
ঘ. পটুয়াখালী
উ:ঘ
২৬.সাংসারেক বলতে বোঝায়—
[সকল বোর্ড ২১]
i. ঐতিহ্যবাহী ধর্ম
ii. বিশেষ ধর্মীয় বিশ্বাস
iii. রাজনৈতিক আদর্শ
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii
খ. i ও iii
গ. ii ও ii
ঘ. i, ii ও iii
উ;ক
নিচের উদ্দীপকটি পড়ো এবং ২৭ ও ২৮ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
রুমি পাহাড়ি এলাকায় একটি জনগোষ্ঠীর সাথে বসবাস করে তাদের জীবনযাপন পর্যবেক্ষণ করে। সেখানকার সার্কেলপ্রধান রাজার সাথে সে দেখা করে কিছু তথ্য সংগ্রহ করে । পরবর্তীতে রুমি তার অভিজ্ঞতার প্রেক্ষিতে একটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করে।
[সকল বোর্ড ২১]
২৭. উদ্দীপকে কোন নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে?
ক. খাসিয়া
খ. চাকমা
গ. মারমা
ঘ. গারো
উ;খ
২৮. রুমির কর্মকাণ্ড সমাজবিজ্ঞান পাঠের কোন প্রয়োজনীয়তাকে নির্দেশ করে?
ক. সামাজিক সমস্যার গভীরতা অনুসন্ধান
খ. নৃ-গোষ্ঠীদের সামাজিক জীবন জানা
গ. সামাজিক পরিবর্তন অনুধাবন করা
ঘ. নৃ-গোষ্ঠীদের বিচ্যুতি সম্পর্কে জানা
উ;খ
নিচের উদ্দীপকটি পড়ে ২৯ ও ৩০ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও:
বার্ষিক পরীক্ষা শেষে রাজু তার বাবার সাথে বান্দরবান বেড়াতে যায় । সেখানে সে দেখতে পায় পাহাড়ের গায়ে আগুন জ্বেলে পাহাড় পরিষ্কার করে স্থানীয়রা চাষাবাদ করছে। এ পদ্ধতিতে তারা গর্ত করে একসাথে বিভিন্ন বীজ রোপণ করে ।
[সকল বোর্ড ১৮]
২৯. উদ্দীপকে বর্ণিত চাষ পদ্ধতিটির নাম কী?
ক. হালচাষ
খ. উদ্যান চাষ
গ. জুম চাষ
ঘ. খামার চাষ
উ:গ
৩০. এ সমাজের জনগোষ্ঠীর বৈশিষ্ট্য কোনটি?
ক. পৃথক জীবনধারা
খ. সমতলের মতো চাষাবাদ
গ. বাজারমুখী উৎপাদন
ঘ. চাষাবাদে যন্ত্রের ব্যবহার
উ:ক
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url