IHT & MATS এর বাংলা ২য় পত্র ১০০% কমন সাজেশন
বাংলা ২য় পত্র (IHT & MATS)
IHT এবং MATS এর বাংলা ২য় পত্র 100% কমন সাজেশন-2023
Bangla 2nd Paper of IHT and MATS 100% Common Suggestion-2023
পেজ সূচিপত্র :( IHT & MATS এর বাংলা ২য় )
ভাষা
মানুষ মনের ভাব প্রকাশের জন্য বাক যন্ত্রের সাহায্যে অপরের বোধগম্য যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমূহ উচ্চারণ করে থাকে তার নাম ভাষা ।
বর্তমান প্রায় ত্রিশ কোটি লোকের মুখের ভাষা বাংলা।প্রত্যেক উন্নত ভাষারই বিভিন্ন রূপ দেখতে পাওয়া যায়। যেমন- সাহিত্যিক রূপ বা লিখিত ভাষা এবং মৌখিক রূপ বা কথ্য ভাষা । বাংলা ভাষার দুটি রূপ বিদ্যমান- সাধু ও চলিত ভাষা । ভাষাভাষী জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলা ভাষার স্থান সপ্তম ।
সাধু ভাষার বৈশিষ্ট্যঃ
কাঠামো সাধারণত অপরিবর্তনীয়।
গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের অধিকারী।
পদবিন্যাস সুনির্দিষ্ট ও সুনিয়ন্ত্রিত।
কথাবার্তা, নাটকের সংলাপ ও বক্তৃতার অনুপযোগী ।
সংস্কৃত তথা তৎসম শব্দ বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়।
চলিত ভাষার বৈশিষ্ট্য:
চলিত ভাষা আঞ্চলিক প্রভাবাধীন। তাই পরিবর্তনশীল।
চলিত ভাষা কৃত্রিমতা বর্জিত ।
সুনির্দিষ্ট ব্যাকরণ অনুসারী নয় ।
সাধারণ কথাবার্তা, নাটকের সংলাপ ও বক্তৃতার উপযোগী ।
তদ্ভব, দেশী, বিদেশী ইত্যাদি শব্দের প্রয়োগ বেশী ।
ব্যাকরণ
যে শাস্ত্রে কোন ভাষার বিভিন্ন উপাদানের প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিষদভাবে আলোচিত হয় তাকে ব্যাকরণ বলে ।
বাংলা ব্যকরণের আলোচ্য বিষয় চারটি।
যথাঃ
ধ্বনি তত্ত্ব :
এই অংশে ধ্বনি, ধ্বনির উচ্চারণ, ধ্বনির বিণ্যাস, ধ্বনির পরিবর্তন, বর্ণ, সন্ধি, ণ-ত্ব বিধান ও ষ-ত্ব বিধান প্রভৃতি আলোচিত হয়।
শব্দ তত্ত্ব :
এই অংশে শব্দ, শব্দের প্রকার, শব্দ গঠন, পদ পদের প্রকার, উপসর্গ, অনুসর্গ, কারক, সমাস, প্রত্যয়, বিভক্তি, লিঙ্গ, বচন, ধাতু, ক্রিয়া প্রকারণ, উৎপত্তি ইত্যাদি আলোচনা হয় ৷একে রূপতত্ত্বও বলা হয় ।
বাক্য তত্ত্ব :
বাক্য, বাক্যের গঠন, বাক্যের প্রকারভেদ, বাক্য পরিবর্তন, বাক্য সংযোজন, বাক্য সংকোচন, বাগধারা, যতিচ্ছেদ বা বিরাম চিহ্ন প্রভৃতি আলোচিত হয়।
ছন্দ প্রকরণ :
এই অংশে ছন্দের প্রকার ও নিয়ম সমূহ অলোচিত হয়।
অলংকার প্রকরণ :
অলংকারের সংজ্ঞা ও প্রকার আলোচিত হয়।
সন্ধি
সন্ধি মানে মিলন ।পাশা পাশি দুটো ধ্বনির মিলনকে সন্ধি বলে।
স্বরধ্বনির সাথে স্বর ধ্বনির মিলনে যে সন্ধি হয় তাকে স্বরসন্ধি বলে।
কতকগুলো সন্ধি কোন নিয়মানুসারে হয় না তাদেরকে নিপাতনের সিদ্ধ সন্ধি বলে।
স্বরে-ব্যঞ্জনে, ব্যঞ্জনে-স্বরে ও ব্যঞ্জনে ব্যঞ্জনে যে স্বন্ধি হয় তাকে ব্যঞ্জন স্বন্ধি বলে।
বাংলা স্বরসন্ধিঃ
শত + এক = শতেক
রূপা + আলি = রূপালী
কুড়ি + এক = কুড়িক
মেয়ে + আলি = মেয়েলি
মা + এ = মায়ে
কা + এর = কার
বাংলা ব্যঞ্জন সন্ধিঃ
পাঁচ + জন = পাঁচ জন
ভাত + দাও = ভাদ্দাও
নাত্ + জামাই :=নাজ্জামাই
কুৎ + সিত = কুচ্ছিত
বার + এক = বারেক
তৎসম স্বরসন্ধিঃ
হিম + আলয় = : হিমালয়
শুভ + ইচ্ছা = শুভেচ্ছা
সূর্য + উদয় = সর্যোদয়
মহা + ঋষি = মহর্ষি
জন + এক = জনৈক
অতি + ইত = অতীত
সু + আগত = স্বাগত
নে + অন = নয়ন
নৌ + ইক = নাবিক
প্রতি+এক = প্রত্যেক
নিপাতনের সিদ্ধ সন্ধিঃ
কুল + অটা = কুলটা
অন্য + অন্য = অন্যান্য
তৎসম ব্যঞ্জন সন্ধিঃ
দিক + অন্ত = দিগন্ত
কুৎ + ঝটিকা=কুজঝটিকা
উৎ + ডীন = উড্ডীন
উৎ + লাস = উল্লাস
তৎ + মধ্য = তন্মধ্যে
শম + কা = শঙ্কা
রাজ + নী = রাজ্ঞী
সম + কৃত = সংস্কৃত
নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধিঃ
ষট্ + দশ =ষোড়শ
বন + পতি = বনস্পতি
ভাল + এর = ভালর
মিথ্যা + উক = মিথকে
আশি + এর = আশির
তেরো + এর = তেরোর
তা + এর = তেরোর
যা + ইচ্ছে+ তাই = যাচ্ছে তাই
তত + দিন = তদ্দিন
আর + না = আন্না
বদ + জাত = বজ্জাত
সাত + শা = সাশ্শা
নাতি +বৌ = নাতবৌ
যথা + অর্থ = যথার্থ
মহা + ঈশ = মহেশ
যথা + উচিত = যথোচি
শীত + ঋত = শীতার্ত
মহা +ঔষধ = মহৌষধ
পরি + ঈক্ষা = পরীক্ষা
সু + অল্প = স্বল্প
অনু + এষণ =অন্বেষণন
নৈ + অক = নায়ক ।
গো + অক্ষ = গবাক্ষ
প্র + উড় = প্রৌঢ়
পরি + ছেদ = পরিচ্ছেদ
উৎ + শ্বাস = উচ্ছ্বাস
উৎ + হার =উদ্ধার
উৎ + যোগ = উদ্যোগ
তৎ + ময় = তন্ময়
স্ম + বাদ = সংবাদ
তদ্ + কাল = তৎকাল
মনস + ঈষা = মনীষা
বৃহৎ + পতি = বৃহস্পতি
বিসর্গ সন্ধিঃ
ততঃ + অধিক = ততোধিক
অতঃ + পর= অতঃপর
মনঃ + যোগ = মনোযোগ
মনঃ + হর = মনোহর
পুনঃ + আয় = পুনরায়
দুঃ + যোগ = দুর্যোগ
নিঃ + চয় = নিশ্চয়
প্রাতঃ + কাল = প্রাতঃকাল
নিঃ + আকার = নিরাকার
আশীঃ + বাদ =আশীর্বাদ
নিঃ + কর = নিস্কর
অহঃ + অহ = অহরহ
সমাস
সমাস অর্থ সংক্ষেপ, মিলন ও একাধিক পদের একপদীকরণ পরস্পর অর্থ সঙ্গতি বিশিষ্ট অক্ষরযুক্ত দুই বা ততোধিক পদের একপদে পরিণত হওয়াকে সমাস বলে ।
সমাসবদ্ধ বা সমাস নিষ্পন্ন পদটির নাম সমস্তপদ ।
সমাসযুক্ত পদের প্রথম অংশের নাম পূর্বপদ এবং পরবর্তী অংশের নাম পরপদ বা উত্তরপদ ।
সমস্ত পদকে ভেঙ্গে যে বাক্যাংশ তৈরী করা হয় তার নাম সমাস বাক্য বা ব্যাসবাক্য বা বিগ্রহবাক্য।
উদাহারণ : বিলাত ফেরত রাজকুমার সিংহাসনে বসলেন। এখানে বিলাত-ফেরত, রাজকুমার ও সিংহাসন একই সমাসবদ্ধ পদ ।
ক. বিলাত হইতে ফেরত।
খ. রাজার কুমার।
গ. সিংহ চিহ্নিত আসন- ব্যাসবাক্য ।
এখানে ‘বিলাত’ ফেরত, রাজা, কুমার সিংহ আসন- এগুলো সমস্যমান পদ ।
“বিলাত-ফেরত, রাজকুমার ও সিংহাসন-সমস্তপদ ।
বিলাত, রাজ ও সিংহ-পূর্বপদ এবং ফেরত,কুমার ও আসন-পরপদ ৷
সমাস প্রধানত ছয় প্রকার :
১) দ্বন্দ্ব
২) বহুব্রীহি
৩) কর্মধারয়
৪) অব্যয়ীভাব
৫) তৎপুরুষ
৬) দ্বিগু ।
দ্বন্দ্ব সমাস:
যে সমাসে সমান বিভক্তি বিশিষ্ট একাধিক বিশেষ্য পদে সমাস হয় এবং প্রত্যেক সমস্যমান পদের অর্থের প্রাধান্য থাকে তাকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে ।
চিনিবার উপায়ঃ
দ্বন্দ্ব সমাসে সাধারণত অল্পস্বর বিশিষ্ট শব্দ পূর্বে বসে।
যেমনঃ গুরু-শিষ্য, মাতা-পিতা ।
দ্বন্দ্ব সমাসে পূর্বপদ ও পরপদের সম্বন্ধ বুঝানোর জন্য ব্যাসবাক্য এবং, আর -এ তিনটি অব্যয়পদ ব্যবহৃত হয়।
যেমন :- মাতা ও পিতা মাতাপিতা ৷
অলুক দ্বন্দ্ব :
যে দ্বন্দ্ব সমাসে কোন সমস্যমান পদের বিভক্তি লোপ পায়না তাকে অলুক দ্বন্দ্ব সমাস বলে ।
যেমনঃ দুধে-ভাতে, দেশে-বিদেশে ।
তিন বা বহুপদে দ্বন্দ্ব হলে তাকে বহুপদী দ্বন্দ্ব বলে।
যেমনঃ সাহেব-বিবি- গোলাম ।
এগুলো নিজে অনুশীলন কর :
দা-কুড়াল, অহিনকুল, আয়-ব্যয়, জমা-খরচ, ছোট-বড়, লাভ- লোকসান, হাত-পা, মাথা-মুন্ডু, সাত-পাঁচ। নয়-ছয়, হাট-বাজার, কল- কারখানা, যা-তা, যে-সে, যথা-তথা, তুমি-আমি, আসল-নকল, ভাই- বোন, মশা-মাছি, বর-কনে, রাত-দিন, ওঠা-বসা ।
কর্মধারায় সমাস
যে সমাসে বিশেষণ ও বিশেষ্য পদে সমাস হয় এবং বিশেষ্যের অর্থই প্রাধান্য থাকে তাকে কর্মধারয় সমাস বলে
যেমন :- নীল যে পদ্ম = নীলপদ্ম ।
চিনিবার উপায় :
সাধারণত যে, সে, যিনি, তিনি, যেই, সেই, যা, তা, ন্যায়, রূপ ইত্যাদি ব্যবহৃত হয়।
প্রকারভেদ :
মধ্যপদলোপী কর্মধারয় :
যে কর্মধারায় সমাসে ব্যাসবাক্যের মধ্যপদের লোপ হয় তাকে মধ্যপদলোপী কর্মধারায় সমাস বলে। যথাঃ- সিংহ চিহ্নিত আসন = সিংহাসন।
উপমান কর্মধারয় :
উপমান অর্থ তুলনীয়। যার সাথে তুলনা করা হয় তাকে উপমান কর্মধারয় বলে। যেমন- ভ্রমরের ন্যায় কৃষ্ণ যে কেশ = ভ্রমরকৃষ্ণ কেশ।
উপমিত কর্মধারয় :
উপমানের সাথে যাকে তুলনা করা হয় তাকে উপমেয় মুখচন্দ্র। যে পুরুষ সিংহের বা উপমিত কর্মধারয় বলে।
মুখ চন্দ্রের নায় =ন্যায় =পুরুষসিংহ ।
রূপক কর্মধারয় :
উপমান ও উপমেয়ের মধ্যে অভিন্নতা বুঝালে তা রূপক কর্মধারয় সমাস হয়।
যেমনঃ ক্রোধ রূপ অনল = ক্রোধানল, মন রূপ মাঝি = মনমাঝি।
তৎপুরুষ সমাস:
পূর্বপদে বিভক্তি লোপে এবং পর পদের অর্থই প্রাধান্য থেকে যে সমাস হয় তাকে তৎপুরুষ সমাস বলে ।
তৎপুরুষ সমাস সাধারণত নয় প্রকার। নিম্নে এদের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হল-
দ্বিতীয়া তৎপুরুষ সমাস :
পূর্ব পদে দ্বিতীয়া বিভক্তির (কে, রে, এর) লোপ চিরসুখী পেয়ে এই সমাস হয়। যেমনঃ- বিপদাপন্ন = বিপদকে আপন্ন, চিরকাল ব্যাপিয়া সুখী। এরূপ গা-ঢাকা, রথদেখা, ছেলে-ভুলানো ইত্যাদি ।
তৃতীয়া তৎপুরুষ সমাস:
পূর্ব পদে তৃতীয় বিভক্তির (দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক) লোপে যে সমাস হয় তাকে তৃতীয় তৎপুরুষ সমাস বলে। যেমন- মনগড়া =মনদিয়ে গড়া, জ্ঞানশূণ্য = জ্ঞানে শূন্য। এরূপ পাঁচ-কম, বিদ্যাহীন, একোন ।
চতুর্থী তৎপুরুষঃ
পূর্বপদে চতুর্থ বিভক্তি (কে, রে, হয়, জন্য, লোপে এ সমাস হয়। যেমন- গুরুকে ভক্তি, বসতের নিমিত্তে বাড়ি বসতবাড়ি ।
পঞ্চমী তৎপুরুষঃ
পূর্বপদে পঞ্চমী বিভক্তি (হতে থেকে, চেয়ে) লোপে এ সমাস হয়।
যেমন- বিলাত ফেরত = বিলাত হতে ফেরত। এরূপ স্কুল পালানো, আগাগোড়া। সাধারণত, চ্যুত, জাত, আগত,ভীত, গৃহীত, বিরত, মুক্ত, উত্তীর্ণ, পালানো, ভ্রষ্ট ইত্যাদি পরপদের সঙ্গে পঞ্চমী, তৎপুরুষ সমাস হয়।
ষষ্ঠী তৎপুরুষ সমাসঃ
পূর্বপদে ষষ্ঠী বিভক্তি (র, এর) লোপে এ সমাস হয়। যেমন- চা-বাগান= চায়ের বাগান,রাজপুত্র, খেয়াঘাট, ছাত্রবৃন্দ, রাজহাঁস হাঁসের রাজা ।
সপ্তমী তৎপুরুষ সমাসঃ
পূর্ব পদে সপ্তমী বিভক্তি (এ,য়,তে,মধ্যে) লোপে এ সমাস হয় ।
যেমনঃ গাছে পাকা = গাছপাকা ।
নঞ তৎপুরুষ সমাসঃ
ন-ঞ অব্যয় (না, নাই, নেই, নয়) পূর্বে বসে এ সমাস হয়।
যেমন- অনাচার = ন আচার। অকাল ন বিশ্বাস ।
উপপদ তৎপুরুষ সমাসঃ
যে পদের পরবর্তী ক্রিয়ামূলের সঙ্গে কৃত প্রত্যয় যুক্ত হয় তাকে উপপদ বলে।
কৃদন্ত পদের সাথে উপপদের যে সমাস হয় তাকে উপপদ তৎপুরুষ সমাস বলে।
যেমন- জলে চরে যে = জলচর, পঙ্কে জন্মে যা = পঙ্কজ। এরূপ ইন্দ্রজিৎ, সত্যপাদী।
অলুক তৎপুরুষ সমাস :
পূর্ব পদের দ্বিতীয় বিভক্তি লোপ না পেয়ে যে সমাস হস তাকে অলুক তৎপুরুষ সমাস বলে।
কলুর বলদ=কলুর বলদ ।
প্রাদি সমাস :
যে সমাসে পূর্ব পদে (প্র, পরা, অপ) উপসর্গ থাকে তাকে প্রাদি সমাস বলে ।
বহুব্রীহি সমাসঃ
যে সমাসে সমস্যমান পদগুলোর কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে অন্য তৃতীয় ব্যক্তি বা বস্তুকে বুঝায় তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে।
যেমন- বহুব্রীহি (ধান) আছে যার = বহুব্রীহি।
বহুব্রীহি সমাসে লব্ধ পদটি বিশেষণ।
ব্যাসবাক্য সাধারণত “যার, যাতে’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার হয়।
বহুব্রীহি সমাস আট প্রকার
১। সমানাধিকরন
২। ব্যাধিকরণ
৩। প্রত্যয়ান্ত
৪। সংখ্যাবাচক
৫। নঞ
৬। মধ্যপদলোপী
৭। ব্যতিহার
৮ । অলুক
দ্বিগু সমাসঃ
সমাহার বা মিলন অর্থে সংখ্যাবাচক শব্দের সাথে বিশেষ্য পদের যে সমাস হয় তাকে দ্বিগু সমাস বলে ।
এ সমাসে নিষ্পন্ন পদটি বিশেষ্য পদ হয়।
যেমন- তিন কালের সমাহার ত্রিকাল, তিন মাথার সমাহার = তেমাথা ।
অব্যয়ীভাব সমাস:
পূর্ব পদে অব্যয় যোগে নিষ্পন্ন সমাসে যদি অব্যয়ের অর্থই প্রাধান্য থাকে তাকে অব্যয়ীভাব সমাস বলে।
যেমন- কন্ঠের সমীপে
দিন = প্রতিদিন,
আমিষের অভাব = উপশহর,
বিরুদ্ধ বাদ = প্রতিবাদ ।
উপসর্গ
বাংলা ভাষার কতকগুলো অব্যয়সূচক শব্দাংশ আছে যেগুলো অন্য শব্দের পূর্বে বসে অর্থের সংকোচন, সম্প্রসারণ ও পরিবর্তন ঘটায় তাকে উপসর্গ বলে।
উপসর্গ তিন প্রকার :
- খাঁটি বাংলা উপসর্গ
- তৎসম উপসর্গ
- বিদেশী উপসর্গ।
খাঁটি বাংলা উপসর্গ ২১টি :
অ, অজ, অঘা, অনা, আ, আড়, আন, আব, ইতি, উন, কু, কদ, বি, পাতি, ভর, রাম, স, সু, সা, হা.নি
তৎসম উপসর্গ ২০টি :
অব, অধি, অপ, অপি, অতি, অভি, অনু, উপ, উৎ, আ, বি, নি, নির, দুর, সু, সম, প্র, পরা, পরি, প্রতি।
বিদেশী উপসর্গ :
ফারসি :
কার্, দার্, না, নিম্, কি, কম, বে, ব, বদ, বর ইত্যাঃ
আরবি :
আম, খাস, গর, খয়ের, লা,, বাজে ইত্যাদি।
ইংরেজী :
ফুল, হাফ, হেড, সাব ইত্যাদি ।
সাধারণত খাঁটি বাংলা উপসর্গ খাঁটি বাংলা শব্দের পূর্বে বসে এবং তৎসম উপসর্গ তৎসম শব্দের পর্বে বসে।
আ, সু, বি, নি, এই চারটি উপসর্গ খাঁটি বাংলা ও তৎসম উভয় উপসর্গে পাওয়া যায়।
শব্দ
অর্থবোধক ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টিকে শব্দ বলে।
যেমন- বই, ইত্যাদি।
শব্দের শ্রেণী বিভাগ :
- উৎপত্তি অনুসারে বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভারকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা যায়।
- গঠন অনুসারে বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভারকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।কলম,চেয়ার ইত্যাদি।
তদ্ভব শব্দ ঃ
যে সকল শব্দ সংস্কৃত হতে প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে।
যেমন- হস্ত > হ> হাত, সর্প> স> সাপ, চর্মকার> চম্মাআর> চামার ইত্যাদি।
দেশী শব্দঃ
আদিবাসী অনার্যদের ভাষা ও সংস্কৃতির কিছু কিছু উপাদান বাংলা ভাষায় বিক্ষিপ্তভাবে আছে।যেমন- কুড়ি (বিশ) কোলভাষা, (উদর) তামিল ভাষা, চুলা (উনুন) মুন্ডারী ভাষা এরূপ কুলা, গঞ্জ, চোঙ্গা, টোপর, ডাব, ডাগর, ডিঙ্গা, ঢেকি ইত্যাদি।
তৎসম শব্দঃ
সংস্কৃত ভাষা সরাসরি বাংলা ভাষায় এসেছে এবং রূপ অপরিবর্তিত আছে।
যেমন- চন্দ্র, সূর্য, পাত্র, নক্ষত্র, মনুষ্য ইত্যাদি।
অর্ধতৎসমঃ
বাংলা ভাষার কিঞ্চিৎ পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয়।
যেমন- জ্যোৎস্না> জোসনা, গৃহিনী> গিন্নী এরূপ ছেরাদ্দ, বোস্টাম, কুচ্ছিত ইত্যাদি যথাক্রমে, শ্রাদ্ধ, বৈষ্ণব, কুৎসিত শব্দ থেকে এসেছে।
বিদেশী শব্দঃ
বিদেশী ভাষার মধ্যে আরবী, ফারসী ও ইংরেজী শব্দই উল্লেখযোগ্য ।
যেমন-
আরবী শব্দঃ
আল্লাহ্, ইসলাম, ঈমান, ওযু, কোরবানী, কেয়ামাত, গোসল, জান্নাত, জাহান্নাম তওবা, তসবী, হজ্ব, যাকাত, হাদীস, হারাম, হালাল, আদাল, আলেম, ইনসান, ঈদ, উকিল, ওজর, এজলাস, এলেম, কানুন, কলম, কিতাব, কেচ্ছা, খারিজ, গায়েব, দোযখ, নগদ, বাকী, মহকুমা, মুন্সেফ, মোক্তার, রায় ইত্যাদি আরবি শব্দ ।
ফারসী শব্দঃ
খোদা, গুনাহ, দোযখ, নামাজ, পয়গম্বর, ফেরেশতা, বেহেস্ত, রোযা, কারখানা, জবানবন্দি, তারিখ, তোষক, দোকান, দস্তখত, দৌলত, নালিশ, বাদশাহ, রাস্তা, বেগম, মেথর, রসদ, আমদানি, রফতানি, বদমাস ।
ইংরেজী শব্দঃ
হাসপাতাল, বাক্স, বোতল, ফুটবল, ব্যাগ, কলেজ, পাউডার ইত্যাদি।
পর্তুগীজঃ
আনারস, আলপিন, আলমারী, গীর্জা, গুদাম, চাবি, পাদ্রী বালতি ইত্যাদি।
ফরাসীঃ
কার্তুজ, কুপন, ডিপো, রেস্তোরা, ইত্যাদি।
ওলন্দাজঃ
ইস্কাপন, টেক্কা, তুরূপ, রুইতন, হরতন।
গুজরাটিঃ
খদ্দর, হরতাল।
তুর্কী:
চাকু, চাকর, তোপ, দারোগা ।
চীনাঃ
চা, চিনি,
বার্মীজঃ
লুঙ্গী, ফুঙ্গি ।
জাপানীঃ
রিক্সা, হারিকিরি।
পাঞ্জাবীঃ
চাহিদা, শিখ ।
নিচে কিছু শুদ্ধ ও অশুদ্ধ শব্দের পার্থক্য দেয়া হল :
অশুদ্ধ শুদ্ধ
অতিথী-অতিথি
অনুকুল-অনুকূল
অনিষ্ঠ-অনিষ্ট
অনাস্থা-অনাস্থা
অনিন্দ-অনিন্দ্য
অরন্য-অরণ্য
আকাংখ্যা-আকাঙ্খা/আকাঙ্ক্ষা
আবিস্কার-আবিষ্কার
আর্শিবাদ-আশীর্বাদ
ইতিমধ্যে-ইতোমধ্যে
ইষৎ-ঈষৎ
উত্তীর্ন-উত্তীর্ণ
উজ্জল -উজ্জ্বল
এতদ্ব্যতীত-এতদ্বতীত
কৃপন-কৃপণ
কৌতূক-কৌতুক
গৃহিনি - গৃহিণী
দীর্ঘজীবি-দীর্ঘজীবী
দন্দ-দ্বন্দ্ব
ধূমপান-ধূমপান
নুন্যতম-নূন্যতম
পিপিলিকা-পিপীলিকা
ভবিষদ্বানী-ভবিষ্যদ্বাণী
ফোটোস্ট্যাট-ফটোস্ট্যাট
শারীরীক-শারীরিক
শভাকাংখি-শুভাকাঙ্খী
সমীচিন-সমীচীন
শস্য-শিষ্য
কিছু অশুদ্ধ ও শুদ্ধ বাক্য
অশুদ্ধ = শিল্পায়নের সাহায্যে দেশ সমৃদ্ধ শালী হতে পারে । শিল্পায়নের সাহায্যে দেশ সমৃদ্ধ হতে পারে।
অশুদ্ধ = বাংলাদেশ একটি উন্নতশীল দেশ ।
শুদ্ধ=বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ।
অশুদ্ধ = আমি গীতাঞ্জলী পড়েছি।
শুদ্ধ =আমি গীতাঞ্জলি পড়েছি।
অশুদ্ধ = কালীদাস বিখ্যাত কবি ।
শুদ্ধ ==কালিদাস বিখ্যাত কবি ।
অশুদ্ধ = সব মাছগুলোর দাম কত।
শুদ্ধ = সব মাছের দাম কত ।
অশুদ্ধ = বঙ্কিম চন্দ্রের ভয়ঙ্কর প্রতিভা ছিল।
শুদ্ধ: বঙ্কিম চন্দ্রের অসাধারণ প্রতিভা ছিল।
অশুদ্ধ = কীর্তিবাস বাংলা রামায়ণ লিখেছেন ।
শুদ্ধ= কৃত্তিবাস বাংলা রামায়ন লিখেছেন।
অশুদ্ধ = হিমালয় পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা বৃহত্তর পর্বত ।
শুদ্ধ= হিমালয় পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা উচ্চ পর্বত।
অশুদ্ধ = তার পিতামাতা নেই ।
শুদ্ধ =তার মাতাপিতা নেই ।
অশুদ্ধ = ছেলেটি বংশের মাথায় চুন কালি দিল।
শুদ্ধ=ছেলেটি বংশের মুখে চুন কালি দিল ।
অশুদ্ধ = তোমার দ্বারা সে অপমান হয়েছে।
শুদ্ধ=তোমার দ্বারা সে অপমানিত হয়েছে।
অশুদ্ধ = অন্যায়ের ফল দুর্নিবার্য।
শুদ্ধ = অন্যায়ের ফল অনিবার্য।
অশুদ্ধ = তাহারা বাড়ি যাচ্ছে।
শুদ্ধ = তারা বাড়ি যাচ্ছে।
অশুদ্ধ = মাদকাশক্তি ভালো নয়।
শুদ্ধ = মাদকাসক্ত ভাল নয়।
অশুদ্ধ = অপব্যায় একটি মারাত্মক ব্যাধি।
শুদ্ধ = অপচয় একটি মারাত্নক অভ্যাস।
অশুদ্ধ = পূর্ব দিকে সূর্য উদয় হয়।
শুদ্ধ =পূর্বদিকে সূর্য উদিত হয়।
দ্বিরুক্ত শব্দ
দ্বিরুক্ত অর্থ দু'বার হয়েছে এমন ।
দ্বিরুক্ত শব্দ তিন প্রকার ।
দ্বিরুক্ত শব্দের প্রয়োগ :
অধিক্য বুঝাতে :
রাশি রাশি, ভাল ভাল, ছোট ছোট, ধামা ধামা, সে সে, হাড়ে হাড়ে।
সামান্য বুঝাতে : জ্বর জ্বর, কবি কবি, কাল কাল, উড়ু উড়ু ।
ক্রিয়া বিশেষন :
চোর চোর, দেখে দেখে, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ৷
অনুরূপ বুঝাতে :
সঙ্গী সাথী, নামাজ কালাম, বাড়ি ঘর ৷
বিশেষণরূপে :
যায় যায়, নেই নেই, মিটির মিটির।
পৌনঃপুনিকতা :
বার বার, ডেকে ডেকে ।
অনুকার অব্যয়ের দ্বিরুক্তি :
কল কল ছল ছল, ঝম ঝম, ঝন ঝন, খাঁ খাঁ, সাঁ সাঁ, ঘ্যানর ঘ্যানর ।
বচন
বচন অর্থ- সংখ্যার ধারণা
বচন দুই প্রকার ।
নিম্নে বচনের কিছু ব্যবহার দেওয়া হল-
রা = কেবল উন্নত প্রাণীবাচক শব্দের সাথে যুক্ত হয়
যেমন- ছাত্ররা, ধনীরা, মায়েরা।
গুলো-গুলি
ইতর প্রাণী ও অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে যুক্ত হয়।
যেমন- আতরগুলো, আমগুলি, টাকাগুলি ।
কেবল উন্নত প্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনের ব্যবহৃত শব্দ :
গণ = দেবগণ, শিক্ষকগণ ।
মন্ডলী = শিক্ষকমন্ডলী,
সম্পাদক মন্ডলী ।
বর্গ = পন্ডিতবর্গ, মন্ত্রীবর্গ ।
প্রাণীবাচক ও অপ্রাণীবাচক শব্দের বহুবচনে শব্দঃ
কুল = কবিকুল, পক্ষিকুল, মাতৃকুল ।
নিশ্চয় = পর্বতনিশ্চয়, কুসুমনিশ্চয়।
সকল = পর্বতসকল, মনুষ্যসকল ।
সমূহ = বৃক্ষসমূহ, মানুষ্যসমূহ।
অপ্রাণীবাচক শব্দে ব্যবহৃত বহুবচনবোধক শব্দ :
আবলী, গ্রাম, গুচ্ছ, দাম, নিকর, পুঞ্জ, মালা, রাজি, রাশি।
যেমন- পুস্তকাবলী, গুণগ্রাম, কবিতাগুচ্ছ, কুসুমদান, কলমনিকর, মেঘপুঞ্জ, পর্বতমালা, তারকাবাজি, বালিরাশি
বিঃ দ্রঃ পাল ও যূথ কেবল জন্তুর বহুবচনে ব্যবহৃত হয়।
বাক্য প্রকরণ
ভাষার মূল উপকরণ বাক্য এবং বাক্যের মৌলিক উপাদান শব্দ ।
বাক্যের বৈশিষ্ট্য বা গুণ তিনটি
(ক) আকাঙ্খা
(খ) আসক্তি
(গ) যোগ্যতা।
প্রতিটি বাক্যের দু'টি অংশ= উদ্দেশ্য ও বিধেয়।
গঠনগত ভাবে বাক্য তিন প্রকার।
যথা- সরল বাক্য,
মিশ্র বাক্য ও
যৌগিক বাক্য ।
বাক্যের যোগ্যতা বিভিন্নভাবে হারায়- দুর্বোধ্যতা :
অপ্রচলিত, দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করলে বাক্য যোগ্যতা হারায়।
যেমন- তুমি আমার সঙ্গে প্রবঞ্চনা করেছ। প্রবঞ্চনা বাংলায় চাতুরী বা মায়া অর্থে ব্যবহৃত।
উপমার ভুল প্রয়োগ :
সঠিকভাবে উপমা অলঙ্কার ব্যবহার না করলে যোগ্যতার হানি ঘটে।
যেমন- আমার হৃদয় মন্দিরে আশার বীজ উপ্ত হল । এটি ভুল উপমা । এর প্রয়োগ হবে- আমার হৃদয় ক্ষেত্রে আশার বীজ উপ্ত হল।
বাহুল্য দোষ :
প্রয়োজনের অতিরিক্ত শব্দ ব্যবহার করলে বাহুল্য দোষ ঘটে। ফলে বাক্য যোগ্যতা হারায় ।
যেমন- সব আলেমগণই এসেছেন- ভুল বাক্য
সব আলেম উপস্থিত- সঠিক বাক্য ।
বা আলেমগণ উপস্থিত- সঠিক শব্দ ।
বাগধারার রদবদল :
বাক্যে বাগধারার পরিবর্তন হলে তার যোগ্যতা হারায়।
যেমন- বনে ক্রন্দন ভুল।
গুরু চন্ডালী দোষঃ
তৎসম শব্দের সঙ্গে দেশীয় শব্দের প্রয়োগের ফলে এ দোষে বাক্য আক্রান্ত হয়।
যেমন- গরুর গাড়ি এর স্থলে গরুর শকট ব্যবহার
শবদাহ এর স্থলে- শব পোড়া।
কারক
কারক :
ক্রিয়া পদের সাথে নামপদের যে সম্বন্ধ থাকে তাকে কারক বলে।
কারক - ছয় প্রকার ।
নিচে প্রত্যেক প্রকারের আলোচনা করা হলো।
১. কর্তৃকারকঃ
যে ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাহাকে কর্তা বা কর্তৃকারক বলে।
কর্তৃ কারকে সাধারণত প্রথমা বা শূন্য বিভক্তি হয়।
চেনার উপায় :
ক্রিয়াকে 'কে' বা ‘কাহারা' দিয়া প্রশ্ন করলে যে, উত্তর পাওয়া যায় তাই কর্তৃ করক।
যেমন- পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়। কর্তায় ৭মী।
২. কর্মকারকঃ
এতে সাধারণত দ্বিতীয় বিভক্তি হয়।
যেমন- শিক্ষককে ভক্তি কর- কর্মে দ্বিতীয়। ক্রিয়াকে “কি” বা কাহাকে দিয়া প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাহাই কর্ম কারক।
৩. করণ কারকঃ
যাহার সাহায্যে কর্তা ক্রিয়া সম্পন্ন করে তাহাকে করন কারক বলে।
করন শব্দের অর্থ যন্ত্র, সাহায্য বা উপায়। এতে সাধারণত তৃতীয়া বিভক্তি হয় ৷
ক্রিয়াকে ‘কিসের দ্বারা' বা কাহার সাহায্যে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তাই করণ কারক ।
যেমন- তাহারা তাস খেলছে । করণে শূন্য বিভক্তি।
৪. সম্প্রদান কারকঃ
যাহাকে স্বত্ত্বত্যাগ করিয়া কিছু দান করা হয় তাকে সম্প্রদান কারক বলে।
যেমন- ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও।
৫. অপাদান কারকঃ
যাহা হইতে কিছু উৎপন্ন, গৃহীত, রক্ষিত, পতিত এবং যাহা দেখিয়া কেহ ভীত হয় তাহাকে অপাদান কারক বলে।
এতে সাধারণত ৫মী বিভক্তি হয়।
যেমনঃ বিপদ হইতে রক্ষা কর।
৬. অধিকরণ কারক :
ক্রিয়ার স্থান ও কালকে অধিকরণ কারক বলে।
অধিকরণ কারক তিন প্রকার। যথা-
ক) আধারাধিকরণ :
যে স্থানে ক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তাহাকে আধারাধিকরণ কারক বলে।
যেমন- বালকেরা মাঠে খেলে।
খ) কালাধিকরণ :
যে কালে বা সময়ে ক্রিয়া সম্পন্ন হয় তাহাকে কালাধিকরণ কারক বলে।
যেমন- দুপুরে বাড়ি আসিও।
গ) ভাবাধিকরণ :
যদি কোন ক্রিয়া বাচক বিশেষ্য অন্য কোন ক্রিয়ার ভাবের বিষয় ব্যক্ত করে বা ভাবের রূপান্তর ঘটায় তাকে ভাবাধিকরণ কারক বলে ।
যেমন- কান্নায় শোক দূরীভূত হয়।
কারক ও বিভক্তি নির্ণয়ের কতিপয় উদাহরণ
বুলবুলিতে ধান খেয়ে- কর্তায় ৭মী।
মধ্যাহ্নে রবির কিরণ প্রখর হয়- অধিকরণে ৭মী ।
পাপে বিরত থাকিবে- অপাদনে ৭মী।
দুধে মাখন আছে- অধিকরণ ৭মী।
কাঁচের পাত্র সহজে ভাঙ্গে- করণে ৬ষ্ঠী
নিরন্নকে অন্ন দাও- সম্প্রদানে ৪র্থী।
খোকা মায়ের হাতে দুধ ভাত খায়- করণে ৭মী।
বাবা বাড়ি, নাই- অধিকরণে শূণ্য।
টাকায় টাকা হয়- করণে ৭মী।
ডাক্তার ডাক- কর্মে শূন্য ।
নিজ হাতে কাজ কর- করণে ৭মী।
সম্বন্ধপদঃ
ক্রিয়া পদের সঙ্গে সম্পর্ক না রেখেও যে নাম পদবাক্যস্থির অন্য পদের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয় তাকে সম্বন্ধ পদ বলে।
যেমন- মতিনের ভাই বাড়ি যাবে।
ক্রিয়ার সঙ্গে সম্বন্ধ নেই বলে সমন্ধ পদকে কারক বলা হয় না ।
পদ
বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দকে পদ বলে ।
পদ মোট পাঁচ প্রকার।
যথা-
১। বিশেষ্য পদঃ
যে পদ দ্বারা কোন কিছুর নাম বুঝায় তাকে বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষ্য পদ ছয় প্রকার।
যথা-
- জাতিবাচক
- বস্তুবাচক
- নামবাচক
- সমষ্টিবাচক
- গুণবাচক
- ক্রিয়াবাচক।
যেমন- ঢাকা, রহিম, নিষ্ঠুরতা, বিনয়, শয়ন ইত্যাদি।
২। বিশেষণ পদঃ
যে পদ দ্বারা বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়াপদের দোষ, গুণ, অবস্থা, পরিমাণ ইত্যাদি বুঝায় তাকে বিশেষণ পদ বলে।
এই পদ চার প্রকার। যথা-
- ক্রিয়ার বিশেষণ
- বিশেষ্যের বিশেষণ
- বিশেষণের বিশেষণ
- ক্রিয়াবিশেষণের বিশেষণ
যেমন- কুৎসিত, সুন্দর,ভাল, মন্দ ইত্যাদি।
৩। সর্বনাম পদঃ
যে পদ বিশেষ্যের পরিবর্তে বসে তাকে সর্বনাম পদ বলে।
যেমন- সে, তিনি, আমরা, ইত্যাদি ।
৪। অব্যয় পদঃ
যে পদের কোন ব্যয় বা পরিবর্তন হয়না তাকে অব্যয় পদ বলে।
অর্থাৎ যে পদে সকল লিঙ্গ, বচন, পুরুষ,
বিভক্তিতে অপরিবর্তিত থাকে তাহাই অব্যয়।
যেমন- এবং, ও, আর, কিন্তু, নতুবা, সুতরাং, বরং, ইত্যাদি।
৫। ক্রিয়া পদঃ
যে পদ দ্বারা কোন কাজ করা বোঝায় তাকে ক্রিয়া পদ বলে।
যেমন- খাইব, যাইতেছি, পড়িস ইত্যাদি।
ক্রিয়া পদ দুই প্রকার যথা-
- সমাপিকা
- অসমাপিকা।
সমাপিকা ক্রিয়া :
যে ক্রিয়া পদ দ্বারা বাক্যের অর্থ সম্পন্ন হয়েছে বুঝায় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন- ছেলেটি পড়ে সে হাঁটে।
অসমাপিকা ক্রিয়া :
যে ক্রিয়ার দ্বারা বাক্য সম্পন্ন হয় না তাহাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে।
যেমন-সূর্য উঠলে। আমি খাবই
ধাতু, প্রকৃতি ও প্রত্যয়
ধাতু
শব্দের অবিভাজ্য বা মূল অংশকে ধাতু বলে।
ধাতু তিন প্রকার-
- মৌলিক ধাতু
- সধিত ধাতু
- সংযোগ ধাতু
প্রকৃতিঃ
ধাতুর সঙ্গে যখন কোন ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টি যুক্ত হয়ে বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ তৈরি করে তখন ক্রিয়ার মূল বা ধাতুকে প্রকৃতি বলে ।
প্রত্যয়ঃ
ধাতু বা প্রকৃতির সাথে যে ধ্বনি বা বর্ণ যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে তাকে প্রত্যয় বলে।
যেমন- পড়ু + উয়া পড়ুয়া। এখানে 'পড়ু' ধাতু (প্রকৃতি) এবং 'উয়া’ (প্রত্যয়)।
প্রত্যয় দুই প্রকার-
- কৃত প্রত্যয়
- তদ্ধিত প্রত্যয়
মহাকাব্যের দিকপালগণ
মহাকবি মহাকাব্য
১. কায়কোবাদ- মহাশ্মশান
২. হেমচন্দ্র বঙ্গোপাধ্যায়-বৃত্রসংহার
৩. নবীন চন্দ্র সেন-বৈরতক, কুরুক্ষেত্র, প্রভাস
৪. মাইকেল মধুসূধন দত্ত-মেঘনাদ বধ কাব্য
৫. সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী-স্পেনের বিজয় কাব্য
৬. বল্মিকী-রামায়ন
৭. ব্যাসদেব / বেদব্যাস-মহাভারত
৮. মুহাম্মদ হামিদ আলী-কাসেম বধ
ব্যঞ্জন ধ্বনির উচ্চারণ স্থান
নাম বর্ণসমূহ উচ্চারণ স্থান
কণ্ঠ বর্ণ -ক খ গ ঘ ঙ- জিহবা মূল
তালব্য বর্ণ-চ ছ জ ঝ ঞ শ ষ য়-অগ্রতালু
মূর্ধণ্য বর্ণ -ট ঠ ড ঢ ণ য় র ড় ঢ়-পশ্চাৎ দত্তামূল
তদন্তব্য বর্ণ- স থ দ ধ ন ল ত-অগ্র দত্ত্যমূল
ওষ্ঠ্য বর্ণ- প ফ ব ভ ম-ওষ্ঠ্য
বিভক্তি
বাংলা শব্দ বিভক্তি সাত প্রকার।
যথা- প্রথমা, দ্বিতীয়া,পঞ্চমী, ষষ্ঠী ও সপ্তমী ।
বিভক্তি একবচন বহুবচন
প্রথমা-
০, অ,এ, (য়),তে,এতে-রা, এরা, গুলি (গুলো), গণ
দ্বিতীয়া-
(এরে), এ, য়, তে-দিগে, দিগকে, দিগের, দের
তৃতীয়া-
অ, এ, তে, দ্বারা কর্তৃক-দিগের, দিয়া, দেয়, দিয়া, দিগকে, দ্বারা, দিগ কর্তৃক, গুলির দ্বারা, গুলিকে দিয়া, গুলো দিয়ে, গুলি কর্তৃক, দের দিয়ে
চতুর্থী-
(দ্বিতীয়ার মতো)-(দ্বিতীয়ার মতো)
পঞ্চমী-
এ (য়ে, য়) হইতে,.থেকে, চেয়ে, হতে-দিগ হইতে, দের হইতে, দিগের গুলির চেয়ে, চেয়ে, গুলি হইতে,
ষষ্ঠী-
র, এর-দিগের, দের, গণের, গুলোর
সপ্তমী-
এ, (য়), য়, তে,এতে-দিগে, দিগেতে, গুলিতে, পথে,গুলির মধ্যে, গুলোতে, গুলোর মধ্যে
এমসিকিউ এর জন্য কমন উপযোগী প্রশ্ন ও উত্তর
১। বাংলা গদ্য বিকাশ লাভ করে কখন?
উঃ ১৮-১৯ শতকে।
২। বাংলা ভাষাভাষীর আনুমানিক সংখ্যা কত?
উঃ চব্বিশ কোটি।
৩। যে ভাষায় শিক্ষিত জনগণ কথা বলে এবং গদ্য সাহিত্যে সার্বজনীন স্বীকৃতি প্রাপ্ত তাকে কি বলে?
উঃ চলিত ভাষা।
৪। ভাষার মৌলিক রূপ কয়টি?
উঃ দুইটি।
৫। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অঞ্চলের জনগণ যে ভাষায় কথা বলে তা কি?
উঃ উপভাষা ।
৬। প্রথম বাংলা গদ্য রূপের নমুনা কোথায় পাওয়া যায়?
উঃ দলিল দস্তবেজ ।
৭। গুরুগম্ভীর ও আভিজাত্যের অধিকারী কোন ভাষার রীতি?
উঃ সাধু ভাষা।
৮ । কোন ভাষার উচ্চারিত শব্দের সূক্ষ্মভাবে ভাগ করলে কি পাওয়া যায়?
উঃ ধ্বনি।
৯। বর্তমান পৃথিবীতে আনুমানিক কয়টি ভাষা আছে?
উঃ সাড়ে তিন হাজারে উপরে ।
১০। সমাজের সাধারণ সম্প্রদায়ের স্বীকৃত ভাষা কোনটি?
উঃ চলিত ভাষা ।
১১। ভাষার মূল উপকরণ কি?
উঃ ধ্বনি ।
১২। উচ্চারণ বিকৃতি জনিত শব্দকে কি বলে?
উঃ তদ্ভব
১৩। পৃথিবীর কয়টি ভাষার উপভাষা আছে?
উঃ সব ভাষারই ।
১৪। কোন ভাষারীতির ধরাবাঁধা একক কোন রীতি নেই ।
উঃ আঞ্চলিক ভাষার।
১৫। ব্যাকরণের কাজ কি?
উত্তর : ভাষার অভ্যন্ত্যরীণ শৃঙ্খলা রক্ষা করা।
১৬। কোন ভাষায় তৎসম শব্দের ব্যবহার বেশি?
উঃ সাধু ভাষা ৷
১৭। পৃথিবীর আদি ভাষার নাম কি?
উঃ ইন্দো-ইউরোপীয় ।
১৮ । বিয়ে কোন ধরণের শব্দ?
উঃ তদ্ভব
১৯। পেয়ারা শব্দটি কোন ভাষা থেকে আগত?
উঃ পর্তুগিজ ।
২০। রন্ধ্র শব্দের বর্ণগুলো কি কি?
উঃ র+ন্+ধ+র
২১। বাংলা ভাষায় সাধু ও চলিত রীতির মিশ্রণকে কি বলে?
উঃ গুরুচন্ডালী।
২২। কোন ভাষা থেকে বাংলা ভাষার জন্ম হয়?
উঃ বঙ্গকামরূপী
২৩। বাংলা বর্ণমালায় কয়টি বর্ণ আছে?
উঃ ৫০টি।
২৪। বাংলা ভাষার প্রধান দুটি রূপ কি?
উঃ কথ্য ও লেখ্য।
২৫। বরাঙ্গ শব্দের অর্থ কি?
উঃ সুন্দর দেহ
২৬। সেতারা শব্দের অর্থ কি?
উঃ তারকা।
২৭। সুগন্ধের সমার্থক শব্দ-
উঃ পরিমল ।
২৮। পোলাও শব্দটি কোন ভাষার?
উঃ ফারসী।
২৯ । উত্তমর্ণ শব্দের বিপরীত শব্দ-
উঃ অধমর্ণ ।
৩০। তক্ষক শব্দের বিপরীত শব্দ-
উঃ ছুতার ।
৩১ । সাধুভাষায় কোন কোন পদ বিশেষ রীতি মেনে চলে?
উঃ সর্বনাম ও ক্রিয়া পদ।
৩২। চলিত ভাষার জন্ম কোন অঞ্চলের ভাষাকে ভিত্তি করে?
উঃ কলকাতা ৷
৩৩। আকাশের প্রতিশব্দ হচ্ছে-
উঃ অন্তরীক্ষ ।
৩৪ । অর্ণব শব্দের প্রতিশব্দ-
উঃ সমুদ্র ।
৩৫ । বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত কিরীট শব্দের অর্থ কি?
উঃ মুকুট
৩৬ । বাংলা গারদ শব্দটি কোথা থেকে এসেছে?
উঃ আদি বাংলা গরাদ থেকে।
৩৭ । বড্ড শব্দটি কিসের উদাহরণ?
উঃ বর্ণদ্বিত্ব।
৩৮ । অপঃ-এর পারিভাষিক শব্দ কি?
উঃ আইন ৷
৩৯ । জলকর্ণার সমার্থক শব্দ কি?
উঃ শীকর ।
৪০ । কোন বর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপ নেই?
উঃ অ
৪১। যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় তাকে কি বলে?
উঃ ঘোষ ধ্বনি ।
৪২। স্বর ধ্বনি সংযুক্ত না হয়ে যে ব্যঞ্জন ধ্বনি সৃষ্টি হয় তাকে কি বলে?
উঃ যুক্তাক্ষর।
৪৩ । মানুষের বস্তু ও ভাবের প্রতীক কোনটি?
উঃ উপমা ।
৪৪। ঞ্চ-এর সঠিক বর্ণ বিভাজন কি হবে?
উঃ ঞ+চ
৪৫ । উষ্ম বর্ণ কয়টি?
উঃ চারটি।
৪৬ । অও, উই, উয়া এগুলি কোন স্বধ্বনি ?
উঃ যৌগিক ।
৪৭। র,স-এর উচ্চারণ স্থান কোথায়?
উঃ দন্ত ।
৪৮ । যে অর্থহীণ বর্ণ বা বর্ণ সমষ্টি ধাতু বা শব্দের শেষে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ সৃষ্টি করে তাকে কি বলে?
উঃ অনুসর্গ ।
৪৯ । এক অক্ষর বিশিষ্ট শব্দ সব সময় কি হয়?
উঃ দীর্ঘ হয় ।
৫০। 'ক' ধ্বনিকে 'ক' অক্ষর বলতে চাইলে উহার সঙ্গে কি যোগ করতে হয়?
উঃ 'অ' ধ্বনি।
৫১। কোন স্বরধ্বনি ব্যঞ্জনধ্বনির সাথে যুক্ত হলে কিভাবে উচ্চারিত হয়?
উঃ সংক্ষিপ্ত আকারে।
৫২। ‘ৎ' প্রকৃত প্রস্তাবে কোন বর্ণের খন্ডরূপ?
উঃ 'ত' বর্ণের ।
৫৩। অনেকে য, র, ল-এর পরে আরো একটি ব্যঞ্জন বর্ণের উল্লেখ করে থাকেন, বর্ণটি কি?
উঃ ব
৫৪। ব্যঞ্জন বর্ণের সংক্ষিপ্ত রূপকে কি বলে?
উঃ ফলা।
৫৫। শব্দের ‘অ' ধ্বনির কোন দু'রকম উচ্চারণ পাওয়া যায়?
উঃ সংবৃত ও বিবৃত
৫৬। বাংলা ন এবং ণ বর্ণের দ্যোতিত ধ্বনি দুটিতে কি আছে?
উঃ ঐক্য আছে ।
৫৭। 'এ' ধ্বনির বিবৃত উচ্চারণ শব্দের কোথায় পাওয়া যায়?
উ:মধ্য।
IHT & MATS এর ১০০% কমন সাজেশন আরো পড়ুন
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url