এইচএস সি ICT ২য় অধ্যায় কমিউনিকেশন সিস্টেম ও নেটওয়াকিং ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
আমাদের আজকের পাঠ-----
ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
এই পাঠ শেষে শিক্ষার্থীরা-
1. ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড কি তা বলতে পারবে।
2. ডেটা ট্রান্সমিশনের প্রকারভেদ বলতে পারবে।
3. অ্যাসিনক্রোনাস, সিনক্রোনাস ও আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন ব্যাখ্যা করতে পারবে।
4. অ্যাসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস মেথড এর মধ্যে তুলনামুলক বিশ্লেষণ করতে পারবে।
ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
সুনির্দিষ্ট মাধ্যমের মধ্য দিয়ে বিট আকারে ডেটা পরিবহন বা স্থানান্তর হওয়াকে বলা হয়
ডেটা ট্রান্সমিশন।
এক ডিভাইস/ কম্পিউটার থেকে অন্য ডিভাইস/ কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তর বা ট্রান্সমিট করার পদ্ধতিকে বলা হয় ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
মূলত ডেটামেথড কমিউনিকেশন সিস্টমে সংযুক্ত ডিভাইসগুলোর মধ্যে বিটের আদান-প্রদান বা বিনিময়ের প্রক্রিয়াকে বোঝায়।
প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
ছবিতে আমরা কী দেখতে
পাচ্ছি?
আর যে ট্রান্সমিশনে ডেটা সমান্তরালভাবে আদান প্রদান হয় তাকে প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে।সাধারণত এ ট্রান্সমিশনে ৮ বিট, ১৬ বিট বা ৩২ বিট ইত্যাদি ডেটা চলাচল করতে পারে।
প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
এই পদ্ধতিতে কাছাকাছি অবস্থিত
ডিভাইসগুলোর মধ্যে একটি
ক্যারেক্টারের সবগুলো বিট একসাথে
একাধিক তারের মধ্যে দিয়ে ডেটা
সাধারণতহয়।
পাঠানো কম্পিউটারের অভ্যন্তরে একটি অংশ থেকে অন্য অংশে
তথ্য আদান-প্রদানে প্যারালাল ট্রান্সমিশন
মেথড ব্যবহার করা হয়।প্যারালাল পোর্ট ব্যবহার করে
কম্পিউটার থেকে প্রিন্টারে
ডেটা পাঠানোর জন্য
প্যারালাল পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়।
সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
ছবিতে আমরা কী দেখতে
একটি পথ দিয়ে ১ বিট করে পর্যায়ক্রমে ডেটা পাচ্ছি?
ট্রান্সমিশন হচ্ছে।
যে ট্রান্সমিশনে ডেটা বা তথ্য পর্যায়ক্রমে ১ বিট করে আদান
প্রদান করে তাকে সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন বলে।
দূরবর্তী অবস্থানে থাকা ডিভাইসগুলোর জন্য
সিরিয়াল ট্রান্সমিশন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
এই পদ্ধতিতে একটি তারের মধ্য দিয়ে একটির পর একটি অর্থাৎ
এক বাইট বা আট বিটের ডেটা পর্যায়ক্রমে ১ বিট করে পাঠানো
হয়ে থাকে।
এখানে প্রতিটি বিট ট্রান্সমিশনের জন্য আলাদা আলাদা
ক্লক পালস ব্যবহৃত হয়।
উৎস থেকে গন্তব্য পর্যন্ত দূরত্ব বেশী হলে এই
পদ্ধতি ব্যবহার করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে
না।
সিরিয়াল ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড এর ব্যবহার
মডেম
মাউস
ইত্যাদিতে যন্ত্রে সিরিয়াল ডেটা
ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে ডেটা আদান প্রদান
সিরিয়াল ও প্যারালাল ডেটা ট্রান্সমিশন মেথডের এর মধ্যে তুলনা
সিরিয়াল প্যারালাল
ডেটার ১ বিট ৮/১৬/৩২ বিট
আকার
পথ ১টি ৮/১৬/৩২ টি
গতি কম বেশী
খরচ কম বেশী
ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
সিরিয়াল ট্রান্সমিশনে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডেটা
ট্রান্সমিশন হওয়ার সময় অবশ্যই দুই কম্পিউটারের মধ্যে এমন
একটি সমঝোতা থাকা দরকার যাতে সিগনাল বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে
পারে।
বিটের শুরু ও শেষ বুঝতে না পারলে গ্রহীতা কম্পিউটার সেই সিগনাল
থেকে ডেটা পুনরুদ্ধার করতে পারে না। এই সিগনাল পাঠানোর সময়
বিভিন্ন বিটের সমন্বয়ের জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতিকে বলা হয় সিনক্রোনাইজেশন।
ডেটা ট্রান্সমিশন মেথড
সিনক্রোনাইজেশনের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল ডেটা
ট্রান্সমিশনকে তিনভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
A
যে ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে প্রেরক হতে ডেটা গ্রাহকে
ক্যারেক্টার বাই ক্যারেক্টার ট্রান্সমিট হয় তাকে
ট্রান্সমিশন বলে।
অ্যাসিনক্রোনাস Asynchronous শব্দের অর্থ হলো সমন্বহীনতা।
অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনে পর পর দুটি ক্যারেক্টার
প্রেরণের মাঝের বিরতির সময় সকল ক্ষেত্রে সমান হয় না।
আর এই কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছে অ্যাসিনক্রোনাসরান্স ডেটা ট্রান্সমিশন।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
এই ট্রান্সমিশনে ক্যারেক্টার ডেটা বিটগুলো ধারাবাহিকভাবে
স্থানান্তরিত হয়।
তাই প্রাপক কম্পিউটারকে বোঝানোর জন্য ক্যারেক্টার ডেটা
বিটগুলোর শুরুতে একটি অতিরিক্ত স্টার্ট বিট যুক্ত করে আর এই স্টার্ট বিট পেলেই প্রাপক কম্পিউটার বুঝতে পারে দেয়া হয়।
ক্যারেক্টার ডেটা বিট আসা শুরু হয়েছে
এবং সেই অনুযায়ী তার আভ্যন্তরীণ সিস্টেমের ক্লক পালসকে চালু করে।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
0 A 1
Stop Start
Bit Bit
ক্যারেক্টার ডেটা বিটগুলো পুরোপুরি স্থানান্তরিত হবার পর
এর শেষে আবার অতিরিক্ত একটি/ দুটি স্টপ বিট যোগ করা হয়।
আর উক্ত স্টপ বিট পেলেই প্রাপক কম্পিউটার বুঝতে পারে
ক্যারেক্টার ডেটা বিটগুলো আসা শেষ হয়েছে।
ডেটা স্থানান্তরের এই প্রক্রিয়ায় স্টার্ট বিট ও স্টপ বিট
অপরিহার্য হওয়ায় এই ট্রান্সমিশনকে স্টার্ ট/ স্ট ট্রান্সমিশনও বলা হয়।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
অ্যাসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন সিস্টেমে কী-বোর্ডের প্রতি
অক্ষর চাপার সাথে সাথে ৮ বিটের একটি ডেটা উৎপন্ন হয়।
এই ৮ বিটের ক্যারেক্টার ডেটাকে ট্রান্সমিশনের পূর্বে তার
সন্মুখে একটি স্টার্ট বিট এবং শেষে একটি বা দুটি স্টপ বিট
সংযুক্ত করা হয়। ফলে প্রতিটি ক্যারেক্টারের ডেটা ১০/১১
বিটের ডেটায় রুপান্তরিত হয়ে ট্রান্সমিট হয়।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
অন্যদিকে ক্যারেক্টার সমুহের ট্রান্সমিশেনের সময় বিরতি সমান না হওয়ায় এর ডেটা স্থানান্তরের গতি ধীর হয়।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার
কম্পিউটার হতে প্রিন্টারে ডেটা স্থানান্তরে।
কি-বোর্ড হতে কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরে ।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার
পাঞ্চকার্ড রিডার হতে
কম্পিউটারে ডেটা স্থানান্তরে।
এবং
কম্পিউটার হতে কার্ড
পাঞ্চারে ডেটা স্থানান্তরে।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের সুবিধা
প্রেরক এবং গ্রাহক যে কোন সময় করতে
পারে-
ডেটা স্থানান্তর এবং ডেটা
গ্রহন।
ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য প্রেরকের প্রয়োজন
হয় না-
কোন প্রাইমারি স্টোরেজ
ডিভাইসের।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের সুবিধা
এটির ইন্সটলেশনের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে-
ব্যয় অনেক কম।
এই পদ্ধতি বেশী উপযোগী-
অল্প করে ডেটার ট্রান্সমিশন প্রয়োজন
এমন পরিবেশে ,
যেমন: ইন্টারনেটে ।
এসিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের অসুবিধা
যখন ডেটা স্থানান্তরের কাজ বন্ধ থাকে তখন-
ট্রান্সমিশন মাধ্যমটি অকারণে অব্যবহৃত
অবস্থায় পড়ে থাকে যা মাইক্রোওয়েভ বা স্যাটেলাইট মাধ্যমের ক্ষেত্রে-
অত্যন্ত ব্যায়বহুল।
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের তুলনায় এর দক্ষতা কম।
ডেটা ট্রান্সমিশনে গতি কম।
ব্লক বা প্যাকেট বাই প্যাকেট ডেটা
ট্রান্সমিশন হচ্ছে।
যে ডেটা ট্রান্সমিশন ব্যবস্থায় প্রেরক
স্টেশনে প্রথমে ডেটাকে কোনো প্রাথমিক
স্টোরেজ ডিভাইস সংরক্ষণ করে নেয়া হয়।
অতঃপর ডেটার ক্যারেক্টার সমূহকে ব্লক (যাকে প্যাকেট
বা ফ্রেমও বলা হয়) আকারে ভাগ করে প্রতিবারে একটি করে
ব্লক ট্রান্সমিট করা হয় তাকে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
Synchronous Transmission শব্দটির অর্থ হলো সমন্বয়যুক্ততা।
এই ট্রান্সমিশনে প্রতিটি ডেটা ব্লক (প্রতি ব্লকে ৮০টি থেকে ১৩২টি
ক্যারেক্টার থাকে) একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর ট্রান্সমিট হয়।
আর কারণেই এর নামকরণ করা হয়েছে সিনক্রোনাস
ট্রান্সমিশন মেথড।
এই পদ্ধতিতে প্রেরক কম্পিউটার ডেটা প্যাকেটের
সাথে কতিপয় টাইমিং সিগন্যাল জুড়ে দেয়।
ডেটা ক্যাবলের মধ্য দিয়ে চলতে চলতে যদি কোন ক্রমের মধ্যে
কোনো ক্রুটি সৃষ্টি হয় বা মান অক্ষুণ্ন না থাকে তাহলে ঐ
টাইমিং সিগন্যালের (ধনাত্নক ও ঋণাত্নক চিহ্ন) রুপ পরিবর্তিত
এর মাধ্যমে ক্যাবলের মধ্য দিয়ে চলাচলকারী ডেটার
হয়।
মান নিশ্চিত করা হয়।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
১ বাইটের ফ্লাগ ও ১ বাইটের কন্ট্রোল ফিল্ড নিয়ে গঠিত
এই হেডার সিগন্যাল গ্রাহকের ক্লক গতিকে প্রেরকের ক্লক গতির সাথে
সিনক্রোনাইজ করে
এবং প্রেরক ও গ্রাহকের অ্যাড্রেস বহন করে।
অপরদিকে
ট্রেইলর সিগন্যাল ব্লকের শেষ নির্দেশ করে
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের সুবিধা
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের দক্ষতা এসিনক্রোনাস এর তুলনায়
অত্যন্ত বেশী।
Start এবং Stop bit বিট না থাকায় ট্রান্সমিশন কার্য যেহেতু অনবরত
চলতে থাকে ফলে-
তার ট্রান্সমিশন গতি অত্যন্ত বেশী।
প্রতি ক্যারেক্টরের পর প্রয়োজন হয় না-
টাইম ইন্টারভেল এর।
এবং প্রতি ক্যারেক্টারের Start এবং Stop bit এর প্রয়োজন হয় না।
এই পদ্ধতিতে তুলনামূলকভাবে সময় কম লাগে।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের অসুবিধা
প্রাথমিক সংরক্ষনের ডিভাইসের প্রয়োজন
হয় ফলে
এটি তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল।
সিনক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশনের ব্যবহার
কম্পিউটার হতে কম্পিউটারে ডেটা কমিউনিকেশনে
দূরবর্তী কোন স্থানে ডেটা স্থানান্তরে ক্ষেত্রে
একই সাথে অনেকগুলো কম্পিউটার ডেটা
স্থানান্তরের ক্ষেত্রে
অ্যাসিনক্রোনাস ও সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের মধ্যে তুলনা
আইসোক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
আইসোক্রোনাস ট্রান্সমিশন মেথড হলো -
সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশন পদ্ধতি এবং অ্যাসিনক্রোনাস
ট্রান্সমিশন পদ্ধতির একটি সমন্বিত রুপ
যেখানে সিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের মতো ব্লক আকারে
এবং অ্যাসিনক্রোনাস ট্রান্সমিশনের মত প্রাইমারি
স্টোরেজ ডিভাইসে ডেটা সংরক্ষণ না করেই
এবং প্রায় কোনরুপ বিরতি ছাড়াই যখন প্রয়োজন
তখনই ডেটা পাঠাতে সক্ষম।
আইসোক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
অর্থাৎ এই ট্রান্সমিশনে পর পর দুটি ব্লকের ডেটা ট্রান্সফারের
মধ্যবর্তী সময় সূষম ও সর্বনিম্ন (প্রায় শূণ্য) একক রাখার চেষ্টা
করা হয়।
সাধারণত রিয়েল টাইম অ্যাপ্লিকেশনের ডেটা ট্রান্সফারে এ পদ্ধতি
বেশি ব্যবহৃত হয়। যেমন-লাইভ টিভি সম্প্রচার, স্ট্রিমিং ভিডিও
ইত্যাদি।
এ ধরণের ট্রান্সমিশনে যেকোনো ডেটা পাঠানোর শুরু করার পূর্বে
একটি স্টার্ট সিগন্যাল পাঠানো হয় এবং ডেটা পাঠানো শেষ
হলে স্টপ সিগন্যাল পাঠানো হয়।
আর এই স্টার্ট ও স্টপ সিনগ্যাল দিয়ে ডেটার সমন্বয় সাধন করা
আইসোক্রোনাস ডেটা ট্রান্সমিশন
আইসোক্রোনাস পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার শর্তাধীনে ডেটা
পুনঃপ্রেরণ সম্ভব নয় বলে ডেটা প্রেরণের ক্ষেত্রে ভূলক্রুটি
শনাক্ত করা যায় না।
তাছাড়া এই ট্রান্সমিশন পদ্ধতিতে প্রেরকের পাঠানো ডেটা ব্লক
প্রাপকের নিকট সঠিকভাবে পৌঁছেছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার
উপায় এবং ভূল সংশোধনের ব্যবস্থা নেই।
এইজন্য সকলক্ষেত্রে এটি নির্ভরযোগ্য ।
একক কাজ
লাইন ইন্টারফেসের ওপর ভিত্তি করে ডেটা ট্রান্সমিশনকে কতভাগে ভাগ করা হয়েছে ?
ক. 2 খ. 3
গ. 4 ঘ.5
Answer: ক. 2
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url