এইচ এস সি পদার্থবিজ্ঞান ২য় পত্র ৯ম অধ্যায় পরমানুর মডেল ও নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞান

 পরমানুর মডেল ও নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞান 

Model of the atom and nuclear physics



সূচীপত্র

ভূমিকা (Introduction)

আদিকাল থেকে মানুষের প্রশ্ন ছিল যে, পদার্থ কিভাবে গঠিত হয়, পদার্থকে ভেঙ্গে অতিক্ষুদ্র করলে পদার্থের অস্তিত্ব থাকবে কিনা ইত্যাদি। এই সব প্রশ্নের উত্তরে আদিকালে দার্শনিকগণ তাদের কল্পনা প্রসূত ব্যাখ্যা দেন। এই সব ব্যাখ্যাগুলো কোনো বিজ্ঞানসম্মত ছিল না। তাদের ধারণা মতে পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশের নাম পরমাণু। পরমাণুকে আর ভাঙ্গা যায় না।

এটি অবিভাজ্য। বিজ্ঞানী জে, জে, থমসন ইলেকট্রন আবিস্কারের পরই পরমাণু যে অবিভাজ্য সে ধারণার অবসান ঘটে।পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ হলেও চার্জহীন নয়। পরমাণু মূলত ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন কণিকা দিয়ে গঠিত। প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে গঠিত নিউক্লিয়াস পরমাণুর কেন্দ্রে খুব স্বল্প স্থান নিয়ে অবস্থান করে। ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসে চারিদিকে অনুমোদিত কক্ষপথে আবর্তন করে। ইলেকট্রন ও প্রোটন চার্জিত কণা। এদের চার্জের মান সমান তবে ইলেকট্রন ঋণাত্মক এবং প্রোটন ধনাত্মক ধর্মী আর নিউট্রন চার্জহীন।

ভূমি স্তরের সকল পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটনের সংখ্যা সমান। প্রোটন সংখ্যা পরিবর্তনের সাথে সাথে মৌল পরিবর্তিত হয়। অধিক প্রোটন বিশিষ্ট নিউক্লিয়াসে স্বত:র্স্ফুত ভাঙ্গন ঘটে এবং তা থেকে বিভিন্ন ধরণের তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হয়। তাছাড়া নিউক্লিয়াসে কৃত্রিম বিভাজনের ফলে প্রচুর পারমাণবিক শক্তি পাওয়া যায়। আমরা এই অধ্যায়ে পরমাণু গঠনের বিভিন্ন মডেল, পরীক্ষা লব্ধ ফলাফলের সাথে এই সব মডেলের সদৃশ্যতা, নিউক্লিয়াসের গঠন, তেজস্ক্রিয়তা অর্থাৎ স্বত:র্স্ফুত নিউক্লিয়াসের বিভাজন, নিউক্লিয়াসে কৃত্রিম বিভাজন এবং এর থেকে প্রাপ্ত আণবিক শক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হবে।

পাঠ ৯.১: পরমাণু গঠনের ক্রম বিকাশ

( Gradual Development of Atomic Structure)

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • পরমাণু গঠনের ক্রম বিকাশ বর্ণনা করতে পারবে।
  • থমসনের পরমাণু মডেল বর্ণনা ও এর ব্যর্থতা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
৯.১.১ পরমাণু গঠনের ক্রম বিকাশঃ  বহু প্রাচীন কালে ভারতীয় দার্শনিক কণাদ বলেছিলেন, পদার্থ কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণা দিয়ে গঠিত। গ্রীক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস (Democritus) এবং আরো অনেক তৎ-সমসাময়িক বিজ্ঞানীগণ বলেন পদার্থ মাত্রই বিচ্ছিন্ন কণা দিয়ে তৈরি এবং এই কণাগুলো অবিভাজ্য। গ্রীক ভাষায় ‘অ্যাটম’ (Atom) শব্দের অর্থ অবিভাজ্য। সেজন্য পদার্থের এই ক্ষুদ্রতম কণাগুলি অ্যাটম (Atom) বা পরমাণু নামে অভিহিত করা হয়। তবে এই সব ধারণাগুলো ছিল কল্পনা প্রসূত। ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বিজ্ঞানী জন ডালটন (John Dalton) রাসায়নিক সংযোগসূত্রগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য একটি তত্ত¡ উপস্থাপন করেন। সেটি ডালটনের পারমাণবিক তত্ত¡ নামে পরিচিত।
ডালটনের তত্ত্বানুসারে,
১। সকল মৌলিক পদার্থ অতি সূক্ষ্ম অবিভাজ্য নিরেট কণার সমন্বয়ে গঠিত। কণাগুলোকে বলা হয়              পরমাণু।
২। একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলো একই প্রকারের, কিন্তু বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলো         বিভিন্ন।
৩। একাধিক পরমাণুর রাসায়নিক মিলনে যৌগিক পরমাণু সৃষ্টি করে। 



সারসংক্ষেপ 

ডালটনের তত্ত্বঃ
১। সকল মৌলিক পদার্থ অতি ক্ষুদ্র, অবিভাজ্য নিরেট কণার সমন্বয়ে গঠিত। কণাগুলেকে বলা হয় পরমাণু।
২। একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলো একই প্রকারের, কিন্তু বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলো বিভিন্ন।
৩। একাধিক পরমাণুর রাসায়নিক মিলনে যৌগিক পরমাণু সৃষ্টি করে।
১৮৯৭ সালে বিজ্ঞানীরা থমসন পরমাণু সম্পর্কে দুটি মতবাদ ব্যক্ত করেন :
১। প্রতিটি পরমাণুতে ইলেকট্রন বিদ্যমান, এবং
২। যেহেতু প্রতিটি পরমাণু বৈদ্যুতিকভাবে নিরপেক্ষ, সুতরাং এতে কিছু ধনাত্মক চার্জ আছে এবং এর চার্জ ইলেকট্রনগুলোর ঋণাত্মক চার্জের সমান হওয়া অত্যাবশ্যক।
থমসনের পরমাণু মডেল একটি নিরেট ধনাত্মক গোলক এবং এই গোলকের মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে ইলেকট্রনগুলো ছড়ানো আছে ঠিক যেমন পুডিং এর মধ্যে কিসমিস ছড়ানো থাকে।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। থমসনের পরমাণু মডেল অনুসারে,
i. ইলেকট্রনগুলো পরমাণুতে স্থির থাকে।
ii. সমগ্র পরমাণু জুড়েই ধনাত্মক থাকে।
iii. পরমাণু চার্জ নিরপেক্ষ
নীচের কোনটি সঠিক?
ক. i I ii L. ii I iii M. i I iii N. i, ii I iii
২। ডালটনের পারমাণবিক তত্ত¡ অনুসারে,
i. সকল মৌলিক পদার্থ অতি সূ², অবিভাজ্য নিরেট কণার সমন্বয়ে গঠিত। কণাগুলেকে পরমাণু বলা হয় ii. একই মৌলিক পদার্থের পরমাণুগুলো একই প্রকারের।
iii. একাধিক পরমাণুর রাসায়নিক মিলনে যৌগিক পরমাণু সৃষ্টি করে।
নীচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. ii ও iii গ. i ও iii ঘ. i, ii ও iii

পাঠ-৯.১     ১. ঘ    ২. ঘ

পাঠ ৯.২ রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল

(Rutherford’s Atom Model)

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • রাদারফোর্ডের আলফা কণা পরীক্ষা বর্ণনা করতে পারবে।
  • রাদারফোর্ডের মডেল ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা ব্যাখ্যা করতে পারবে।





সুতরাং রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলে পরমাণুঅস্থায়ী। কিস্তু বাস্তবে বস্তুর স্থায়িত্ব প্রমাণ করে পরমাণ অস্থায়ী নয়।
২। ইলেকট্রন যদি অনবরত শক্তি বিবিরণ করতে থাকে তবে ইলেকট্রনের বেগ বৃদ্ধি পাবে। ফলে প্রতি মূহুর্তে ইলেকট্রনের পর্যায়কাল কমতে থাকবে এবং কম্পাঙ্ক বাড়তে থাকবে। ক্রমান্বয়ে কম্পাঙ্ক বৃদ্ধির ফলে ইলেকট্রন সকল তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরেতরঙ্গের বিকিরণ করবে অর্থাৎ পরমাণু থেকে নিরবিচ্ছিন্ন বর্ণালী পাওয়া যাবে। কিন্তু হইড্রোজেন, হিলিয়াম ইত্যাদি মৌলের পরমাণবিক বর্ণালীগুলো হলো রেখা বর্ণালী। নিরবিচ্ছিন্ন নয়।

সারসংক্ষেপ 

রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলঃ
নিউক্লিয়াসে অল্প পরিসরে পরমাণুর প্রায় সমস্ত ভর ও ধনাত্মক চার্জ কেন্দ্রীভূত আছে। ইলেকট্রনগুলো বিচ্ছিন্নভাবে নিউক্লিয়াসের চারিদিকে ছড়িয়ে প্রত্যেকে এমন দূরত্বে থেকে আবর্তন করছে যেন ইলেকট্রনগুলো প্রত্যেকের কেন্দ্রমুখী বল ও নিউক্লিয়াসের সাথে তার কুলম্বীয় বল সমান হয়।
রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলর সীমাবদ্ধতাঃ
১। চিরায়ত বলবিদ্যায় ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্ব অনুসারে ত্বরান্বিত চার্জ তাড়িতচৌম্বক শক্তি বিকিরণ করে। সুতরাং আবর্তনরত ইলেকট্রন অবিচ্ছিন্ন তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ বিকিরণ করবে। অপর দিকে শক্তি বিকিরণ করলে ইলেকট্রনের মোটশক্তি হ্রাস পাবে ফলে ইলেকট্রন নিউক্লিয়াসের দিকে এগিয়ে আসবে এবং ইলেকট্রনের বেগ বৃদ্ধি পাবে। এই ভাবে ক্রমান্বয়ে নিউক্লিয়াসের দিকে এগিয়ে গিয়ে নিউক্লিয়াসকে আঘাত করবে ফলে পরমাণুটি ধ্বংস হয়ে যাবে। সুতরাং রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলে পরমাণু অস্থায়ী। কিস্তু বাস্তবে বস্তুর স্থায়িত্ব প্রমাণ করে পরমাণু অস্থায়ী নয়। 

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন


পাঠ- ৯.২       ১. গ        ২. ঘ

পাঠ ৯.৩ :বোরের পরমাণু মডেল
 Bohr Atom Model

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • বোরের মডেল ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • বোরের মডেলের সাহায্যে রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা অতিক্রমণ ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • বোরের মডেলের সাহায্যে হাইড্রোজেন পরমাণুর ব্যাসার্ধ ও শক্তির রাশিমালা প্রতিপাদন করতে পারবে।
৯.৩.১ বোরের পরমাণু মডেল (Bohr Atom Model)
বিজ্ঞানী নীল্স বোর (Niels Bohr) রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের সাথে প্লাঙ্ক ও আইনস্টাইনের কোয়ান্টাম
তত্ত¡ প্রয়োগ করে নতুন এক পরমাণু মডেলের চিত্র উপস্থাপন করেন। এটিই বোরের পরমাণু মডেল নামে পরিচিত। রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলের যে বিষয়গুলো নিয়ে কোনো সমস্যা ছিল না সেগুলোকে তিনি অপরিবর্তিত রাখেন। যেমন,
রাদারফোর্ড পরমাণু মডেলে পরমাণু অস্থায়ীত্ব এবং অবিচ্ছিন্ন বর্ণালী জনিত সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে বোর এমন কিছু যুগান্তকারী ধারণা উপস্থাপন করেন যা সনাতনী পদার্থবিজ্ঞানের সাথে আদৌ সংগতিপূর্ণ নয় বরং ঘোর বিরোধী। তবুওতৎকালীন পরীক্ষলব্ধ ফলাফলের সাথে বোরের পরমাণু মডেল অনেকটাই সংগতিপূর্ণ হওয়ায় এই মডেলটি বিজ্ঞানীদের কাছে গৃহিত হয়।














সারসংক্ষেপ 


বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। বোর তত্ত্বের স্বীকার্য অনুযায়ী-
ক. ইলেকট্রন যে কোনো কক্ষপথে পরিভ্রমন করতে পারে এবং সমস্ত কক্ষপথেই উহার শক্তি অক্ষুন্ন থাকবে
খ. ইলেকট্রন কতগুলি অনুমোদিত কক্ষপথে আবর্তন করতে পারে এবং সেই সমস্ত কক্ষপথেই ইলেকট্রনের শক্তি
অক্ষুন্ন থাকবে
গ. ইলেকট্রন শুধুমাত্র অনুমোদিত কক্ষপথে আবর্তন করবে কিন্তু যেকোনো মানের শক্তির অধিকারী হতে পারবে
ঘ. ইলেকট্রন যে কোনো কক্ষপথে পরিভ্রমন করতে পারে এবং যেকোনো মানের শক্তির অধিকারী হতে পারবে
২। বোরের তত্ত্বা নুযায়ী ইলেকট্রন উচ্চ কক্ষপথ থেকে সংক্রমণ করলে তার
ক. স্থিতিশক্তি এবং গতিশক্তি উভয়ই হ্রাস পায়
খ. স্থিতিশক্তি ও মোট শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং গতিশক্তি হ্রাস পায়
গ. স্থিতিশক্তি হ্রাস পায় এবং গতিশক্তি বৃদ্ধি পায়
ঘ. স্থিতিশক্তি এবং গতিশক্তি উভয়ই বৃদ্ধি পায়

পাঠ- ৯.৩ ১. খ ২. খ

পাঠ ৯.৪ :নিউক্লিয়াসের গঠন
Structure of Nucleus

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • নিউক্লিয়াসের গঠন ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • নিউক্লিয়াস সংক্রান্ত বিভিন্ন রাশি বর্ণনা করতে পারবে।
  • ভর ত্র“টি ও বন্ধন শক্তি ব্যাখ্যা করতে পারবে।













সারসংক্ষেপ 



বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। বোরের হাইড্রোজেন পরমাণু মডেলে একটি ইলেকট্রন প্রোটনের চারদিকে অনির্দিষ্ট কাল ধরে ঘুরতে পারে যদি ইহার
পথ হয়-
ক. যে কোনে ব্যাসার্ধের বৃত্ত খ. ক্রমহ্রাসমান ব্যাসার্ধের বৃত্ত
গ. উপবৃত্তাকার ঘ. অনুমোদিত ব্যাসার্ধের বৃত্ত
২। বোরের তত্ত্বানুযায়ী হাইড্রোজেনের হ তম কক্ষপথে ইলেকট্রনের গতিশক্তি ও মোটশক্তির অনুপাত
ক. -১ খ. ১
গ. ২ ঘ. -২

পাঠ- ৯.৪    ১. ঘ    ২. ক 

পাঠ ৯.৫ তেজস্ক্রিয়তা
Radioactivity

এ পাঠের শেষে তুমি-
তেজস্ক্রিয়তা ব্যাখ্যা করতে পারবে।
বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় কণা ও রশ্মির ধর্ম ব্যাখ্যা করতে পারবে।
তেজস্ক্রিয় ক্ষয় সূত্র ব্যাখ্যা করতে পারবে।
তেজস্ক্রিয় রূপান্তর সূত্র ব্যাখ্যা করতে পারবে।
অর্ধজীবন ও ক্ষয় ধ্র“বকের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারবে।

৯.৫.১ তেজস্ক্রিয়তা (Radioactivity)
হেনরি বেকরেল ১৮৯৬ সালে ইউরেনিয়ামের তেজস্ক্রিয়তা আবিস্কার করেন। তিনি দেখেন যে, ইউরেনিয়ামের সকল যৌগ নিজের থেকেই অস্বচ্ছ কালো কাগজে মোড়া ফটোগ্রাফিক প্লেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে, এর জন্য বাহ্যিক কোনো শক্তির সাহায্যে উদ্দীপ্ত করতে হয় না। পরবর্তিতে বিজ্ঞানী (মাদাম) মেরি কুরি থোরিয়াম মৌলেও ইউরেনিয়ামের মত ধর্ম দেখতে পান। পরবর্তিতে মেরি কুরি এবং পিয়েরে কুরি ইউরেনিয়াম আকরিক থেকে পোলোনিয়াম ও রেডিয়াম নিস্কাশন করেন। এদের তেজস্ক্রিয়তা কয়েক হাজার গুণ বেশী।

তেজস্ক্রিয় পদার্থ হতে স্বতঃস্ফুর্তভাবে অবিরাম এক রহস্যময়ী কণা এবং রশ্মি নির্গত হয়। এই প্রক্রিয়াকে তেজস্ক্রিয়তা বলে। কোনো অস্থায়ী নিউক্লিয়াস থেকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে বিকিরণ নিঃসরণের প্রক্রিয়াকে তেজস্ক্রিয়তা বা তেজস্ক্রিয় ক্ষয় বলে। তেজস্ক্রিয় বিকিরণকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি বলে। তেজস্ক্রিয় মৌলের যে পরমাণুর তেজস্ক্রিয় ক্ষয় ঘটে তাকে জনক পরমাণু বলে। নিউক্লিয়াসে থেকে তেজস্ক্রিয় রশ্মি নির্গত হবার পর যে পরমাণুটি পড়ে থাকে তাকে দুহিতা পরমাণু বলে।

তেজস্ক্রিয়তার বৈশিষ্ট্যঃ
১। তেজস্ক্রিয়তা একটি স্বতঃস্ফুর্ত বিরামহীন ঘটনা।
২। তেজস্ক্রিয় পদার্থের রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটলেও তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা অপরিবর্র্তিত থাকে অর্থাৎ কোনো মৌলের যেকোনো যৌগের তেজস্ক্রিয় ধর্ম অভিন্ন।
৩। এটি একটি অপ্রত্যাবর্তী প্রক্রিয়া।
৪। তেজস্ক্রিয়তা তেজস্ক্রিয় পদার্থের তাপমাত্রা, চাপ, রাসায়নিক সংযোগ, আলো, তড়িৎক্ষেত্র, চৌম্বকক্ষেত্র ইত্যাদির উপর নির্ভর করে না।
৫। তেজস্ক্রিয়তার উৎপত্তিস্থল পদার্থের নিউক্লিয়াসে।
৬। তেজস্ক্রিয়তার বিকিরণ ধনচার্জ যুক্ত কণা, ঋণচার্জ যুক্ত কণা ও তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ প্রবাহের সমষ্টি।

এবং কাগজ ভেদ করে পার হয়ে যাচ্ছে। তেজস্ত্রিয় রশ্মি কিছু সময় ধরে আপতিত হওয়ার পর প্লেটটি বিকাশ করা হলে এতে তিনটি সু¯পষ্ট কালো দাগ দেখা যায়। একটি ঠিক মাঝখানে C বিন্দুতে, একটি বাম দিকে সামান্য দূরে B বিন্দুতে এবং আর একটি ডান দিকে বেশ কিছুটা দূরে B বিন্দুতে। চৌম্বকক্ষেত্রে ফ্লেমিং-এর বাম হস্ত নিয়ম অনুসারে বুঝা যায় ডান দিকের কালো দাগ ধনাত্মক চার্জ যুক্ত কণা এবং গতিপথের বক্রতা থেকে বোঝা যায় কণাটি ভারি রশ্মি দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে- এটাই আলফা রশ্মি, বাম দিকের কালো দাগ ঋণাত্মক চার্জ যুক্ত কণা এবং গতিপথের বক্রতা থেকে বোঝা যায় কণাটি হালকা রশ্মি দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে- এটাই বিটা রশ্মি এবং মাঝের কালো দাগ তড়িৎ নিরপেক্ষ কোন রশ্মি দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে- এটাই গামা রশ্মি।
গামা রশ্মির ধর্ম ও প্রকৃতিঃ
১। গামা রশ্মি অতি ক্ষুদ্র তরঙ্গ দৈর্ঘ্যরে তাড়িতচৌম্বক তরঙ্গ।
২। এই রশ্মি আলোর ন্যায় বেগে গতিশীল।
৩। এর কোনো চার্জ ও ভর নাই।
৪। এই রশ্মি বিদ্যুৎ ক্ষেত্র ও চুম্বক ক্ষেত্র দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না।
৫। এটি ফটোগ্রাফিক প্লেটের উপর বিক্রিয়া করে।
৬। এর আয়নিত করার ক্ষমতা আছে তবে বিটা রশ্মি অপেক্ষা কম।
৭। জিংক সালফাইডে গামা রশ্মি প্রতিপ্রভ সৃষ্টি করে।
৮। গামা রশ্মির প্রতিফলন, প্রতিসরণ, ব্যাতিচার, অপবর্তন ইত্যাদি সব আলোকীয় ধর্ম আছে।

৯.৫.৩ তেজস্ক্রিয় ক্ষয় ধ্র“বক (Radioactive Decay Constant) 
তেজস্ক্রিয় ক্ষয় সম্ভাবনার সংখ্যাতাত্তি¡ক সূত্র (Statistical Law of Probability) মেনে চলে।
এর তাৎপর্য হলো বহুসংখ্যক তেজস্ক্রিয় পরমাণুর মধ্য কোনটি আগে বা কোনটি পরে ক্ষয় হবে বা ভাঙ্গবে তা কখনোই বলা সম্ভব নয়। কেবল বলা যায় যে, সময়ের সাপেক্ষে তেজস্ক্রিয় পরমাণুগুলোর ভাঙ্গনের হার বা ক্ষয় ঐ সময় উপস্থিত অক্ষত বা অভগ্ন পরমাণুর সংখ্যার সমানুপাতিক।










সারসংক্ষেপ 


বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। তেজস্ক্রিয় রশ্মির কত প্রকার?
ক. ১ প্রকার খ. ২ প্রকার গ. ৩ প্রকার ঘ. ৪ প্রকার
২। গামা রশ্মির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে
i. তেজষ্ক্রিয় নিউক্লিয়াস থেকে নির্গত হয় 
ii. এটি তাড়িৎচৌম্বক তরঙ্গ
iii. এর ভেদন ক্ষমতা সর্বাধিক
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii গ. ii ও iii ঘ. i, ii ও iii

পাঠ- ৯.৫ ১. গ ২. ঘ

পাঠ ৯.৬ :নিউক্লিয় বিক্রিয়া
Nuclear Reaction

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • নিউক্লিয় বিক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • নিউক্লিয় বিক্রিয়া ও রাসায়নিক বিক্রিয়ার পার্থক্য বর্ণনা করতে পারবে।
  • শৃঙ্খল বিক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে পারবে।
৯.৬.১ তেজস্ক্রিয়তার প্রকারভেদ (Types of Radioactivity)
তেজস্ক্রিয়তা দুই প্রকার। যথাঃ- প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা ও কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা।
প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তাঃ- কোন পদার্থ হতে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে যে তেজস্ক্রিয়তা ঘটে তাকে প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা বলে।
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তাঃ- কৃত্রিম উপায়ে প্রাকৃতিক স্থায়ী মৌলের অস্থায়ী আইসোটোপ গঠন ও স্বাভাবিক নিয়মে ঐ আইসোটোপের তেজস্ক্রিয় ক্ষয়কে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা বলা হয়।
কোনো উচ্চ শক্তিসম্পন্ন কণা দিয়ে নিউক্লিয়াসকে আঘাত করলে নিউক্লিয়াসটি পরিবর্তিত হয়ে অন্য মৌল গঠন করে। একে নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলে। নিউক্লিয় বিক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন নিউক্লিয়াসটি স্থায়ী নিউক্লিয়াস নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই নিউক্লিয়াসটির তেজস্ক্রিয় ক্ষয় ঘটে এবং এবং অন্য কোনো মৌলের নিউক্লিয়াসে পরিনত হয়। এক্ষেত্রে শুধু তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াসটির উৎপাদন কৃত্রিম কিন্তু তেজস্ক্রিয় ক্ষয় তার স্বাভাকিব নিয়মেই ঘটে।
কৃত্রিম উপায়ে যে মৌলগুলির অস্থায়ী আইসোটোপ তৈরি হয়, প্রকৃতিতে স্থায়ী অবস্থাতেও সেই মৌলগুলিকে দেখা যায়। রেডিও আইসোটোপগুলির ক্ষয় হয় প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তার সূচকীয় নিয়ম অনুসারে। অর্থাৎ আইসোটোপগুলি কৃত্রিম উপায়ে গঠিত হলেও এদের তেজস্ক্রিয় বিঘটন কৃত্রিম নয়।
৯.৬.২ মৌলের কৃত্রিম রূপান্তর (Artificial Transformation of Elements)ঃ
তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের ফলে মৌলের স্বাভাবিক রূপান্তর ঘটে। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে যদি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের প্রোটন সংখ্যার পরিবর্তন ঘটানো যায় তাহলে মৌলটি অন্য মৌলে রূপান্তরিত হয়। একে কৃত্রিম মৌলের রূপান্তর বলে। সাধারণ ভাবে দুই প্রকারে মৌলের রূপান্তর হয়।
১। কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা (Artificial radioactivity)
২। নিউক্লিয় বিক্রিয়া (Nuclear Reaction)
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা সম্বন্ধে পূবে আলাচনা করা হয়েছে। আমরা এখানে নিউক্লিয় বিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করব।

নিউক্লিয় বিক্রিয়া (NuclearReaction) ঃ
কৃত্রিম উপায়ে পরমাণুর নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন কোনে মৌল গঠনের প্রক্রিয়াকে নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলে। আমরা দেখেছি, পরমাণুর প্রতিটি নিউক্লিয়নের অর্থাৎ নিউট্রন ও প্রোটনের বন্ধন শক্তি গড়ে প্রায় 8MeV। সুতরাং বাইর থেকে প্রায় এর সমমানের শক্তি সরবরাহ না করা হলে নিউক্লিয়াসের কোনো পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব নয়। তাই সাধারণ ভাবে উচ্চশক্তি সম্পন্ন কোনো কণা দিয়ে বস্তু খন্ডকে আঘাত করে তার মধ্যস্থিত নিউক্লিয়াসকে যথেষ্ট শক্তি সরবরাহ করা যায় এবং এই ভাবেই নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। এই প্রক্রিয়ায় কোনো উচ্চ শক্তিসম্পন্ন কণা দিয়ে নিউক্লিয়াসকে আঘাত করা হয় এবং এর ফলে নিউক্লিয়াসটি পরিবর্তিত হয়ে অন্য নতুন মৌলের নিউক্লিয়াস গঠন করে।



সারসংক্ষেপ 

তেজস্ক্রিয়তার প্রকারভেদঃ তেজস্ক্রিয়তা দুই প্রকার। যথাঃ- প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা ও কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা।
প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তাঃ- কোন পদার্থ হতে স্বতঃস্ফুর্ত ভাবে যে তেজস্ক্রিয়তা ঘটে তাকে প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তা বলে।
কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তাঃ- কৃত্রিম উপায়ে প্রাকৃতিক স্থায়ী মৌলের অস্থায়ী আইসোটোপ গঠন ও স্বাভাবিক নিয়মে ঐ আইসোটোপের তেজস্ক্রিয় ক্ষয়কে কৃত্রিম তেজস্ক্রিয়তা বলা হয়।
মৌলের কৃত্রিম রূপান্তরঃ তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের ফলে মৌলের স্বাভাবিক রূপান্তর ঘটে। কিন্তু কৃত্রিম উপায়ে যদি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের প্রোটন সংখ্যার পরিবর্তন ঘটানো যায় তাহলে মৌলটি অন্য মৌলে রূপান্তরিত হয়। একে কৃত্রিম মৌলের রূপান্তর বলে।
নিউক্লিয় বিক্রিয়াঃ কৃত্রিম উপায়ে পরমাণুর নিউক্লিয়াসের পরিবর্তন ঘটিয়ে নতুন কোনে মৌল গঠনের প্রক্রিয়াকে নিউক্লিয় বিক্রিয়া বলে।
শৃঙ্খল বিক্রিয়াঃ শৃঙ্খল বিক্রিয়া এমন একটি বিক্রিয়া যা একবার শুরু হলে ওকে চালাবার জন্য অন্য কোন অতিরিক্ত উৎস বা শক্তির প্রয়োজন হয় না বরং এটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলতে থাকে।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

পাঠ- ৯.৬ ১. গ ২. ক

পাঠ ৯.৭ :নিউক্লিয় ফিশন ও নিউক্লিয় ফিউশন
Nuclear Fission and Fussion

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • নিউক্লিয় ফিশন ব্যাখ্যা করতে পারবে।
  • নিউক্লিয় ফিউশন ব্যাখ্যা করতে পারবে।




সারসংক্ষেপ 

নিউক্লিয় ফিশন (Nuclear Fission)ঃ কোনো ভারী নিউক্লিয়াসকে ( A > 230) সঠিক গতির নিউট্রন বা ফোটন দিয়ে আঘাত করে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে প্রায় সমান অংশে বিভক্ত করে প্রচন্ড পারমাণবিক শক্তি উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে নিউক্লিয় ফিশন বলে।
নিউক্লিয় ফিউশন বা সংযোজনঃ একাধিক হালকা নিউক্লিয়াস একসঙ্গে জুড়ে অপেক্ষাকৃত বড়ো একটি নিউক্লিয়াসে পরিণত হওয়ার ঘটনাকে নিউক্লিয় সংযোজন বলা হয়। নিউক্লিয় সংযোজনকে নিউক্লিয় বিভাজনের বিপরীত ঘটনা বলা যায়।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। নিউক্লিয় ফিশান হলো
i. কৃত্রিম উপায়ে নিউক্লিয়াস ভাঙার একটি প্রক্রিয়া।
ii. ভারী নিউক্লিয়াসকে ধীর নিউট্রন দিয়ে আঘাত করে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে প্রায় সমান অংশে বিভক্ত করা।
iii. একাধিক হালকা নিউক্লিয়াস একসঙ্গে জুড়ে অপেক্ষাকৃত বড়ো একটি নিউক্লিয়াসে পরিণত করা।
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii গ. ii ও iii. ঘ. i, ii ও iii
২। নিউক্লিয় ফিউশন হলো
i. কৃত্রিম উপায়ে হালকা নিউক্লিয়াস জুড়ে দেয়ার একটি প্রক্রিয়া।
ii. ভারী নিউক্লিয়াসকে ধীর নিউট্রন দিয়ে আঘাত করে সম্পূর্ণরূপে ভেঙে প্রায় সমান অংশে বিভক্ত করা।
iii. অত্যধিক উচ্চ তাপমাত্রায় একাধিক হালকা নিউক্লিয়াস একসঙ্গে জুড়ে অপেক্ষাকৃত বড়ো একটি নিউক্লিয়াসে
পরিণত করা।
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i ও ii খ. i ও iii গ. ii ও iii. ঘ. i, ii ও iii

পাঠ- ৯.৭ ১. ক ২. খ

পাঠ ৯.৮ :নিউক্লিয় রিঅ্যাকটর
Nuclear Reactor

এ পাঠের শেষে তুমি-
  • নিউক্লিয় রিঅ্যাকটর বর্ণনা করতে পারবে।



পানি তেজস্ক্রিয় হয়। তাই এই পানিকে কংক্রিট শিল্ডিং (Concrete shielding)-এর বাইরে আসতে দেওয়া হয় না। কিন্তু পানিতে সঞ্চিত তাপশক্তি আমাদের প্রয়োজন। হিট এক্সচেঞ্জোরই এই পানির সঞ্চিত তাপশক্তিকে অতেজস্ক্রিয় পানিতে সঞ্চালিত করা হয় এরপর কনক্রিট শিল্ডিং এর বাইরে নিয়ে আসা হয় এবং বাষ্পে পরিণত করা হয়। এই বাষ্প টারবাইনে আসে এবং টারবাইন ঘুরিয়ে তড়িৎশক্তি উৎপন্ন করে।

সারসংক্ষেপ 

নউক্লিয় রিঅ্যাকটরঃ নিউক্লিয় বিভাজন থেকে উৎপন্ন তাপশক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য এমন ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, যাতে অতি অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়ে সমগ্র প্রক্রিয়াটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে না যায় এবং যাতে দীর্ঘ সময় ধরে সমহারে শক্তির সরবরাহ পাওয়া যায়। একে নিয়ন্ত্রিত বিভাজন বা নিউক্লিয় রিঅ্যাকটর বলা হয়।
মডারেটরঃ  মডারেটরের কাজ হলো দ্রুতগতি সম্পন্ন নিউট্রনগুলিকে আবার পরবর্তী বিভাজনে কাজে লাগাতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণ মন্দন ঘটিয়ে তাপীয় নিউট্রনে পরিণত করে নিতে হয়। যেসব পদার্থের মধ্য দিয়ে পাঠালে উচ্চ গতির নিউট্রন মন্দীভূত হয়ে তাপীয় নিউট্রনে পরিণত হতে পারে, তাদের বলা হয় মডারেটর। 
ক্রান্তি বা সন্ধি আকার (Critical size) ঃ তেজস্ক্রিয় নমুনাটিকে গোলকের আকারে নেওয়া হয়, যাতে আয়তনের সাপেক্ষে বাইরের তলের ক্ষেত্রফল কম হয়। নমুনার ভরকে আগে থেকে হিসাব করা একটি ন্যূনতম ভর অপেক্ষা বেশি রাখা হয়। শৃঙ্খল বিক্রিয়া বজায় রেখে নিউক্লিয় বিভাজন চালিয়ে যাওয়ার জন্য তেজস্ক্রিয় নমুনাকে যে ন্যূনতম আকারে নিতে হয়, তাকে সন্ধি আকার বলা হয়।
কোরঃ কোরের মধ্যে নিউক্লিয় বিক্রিয়া ঘটানো হয়। এই অংশে জ্বালানি রড (Fuel rod), নিয়ন্ত্রণ রড (control rod), মডারেটর ও কুল্যান্ট (Coolant) থাকে।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১। নিউক্লিয় রিঅ্যাকটর কি?
ক. নিয়ন্ত্রিত নিউক্লিয় বিভাজন থেকে উৎপন্ন তাপশক্তিকে তড়িৎশক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য এমন ব্যবস্থা
খ. শৃঙ্খল নিউক্লিয় বিক্রিয়া ঘটানো
গ. যে পদার্থ দ্রুতগতিসম্পন্ন নিউট্রনকে মন্দন ঘটিয়ে তাপীয় নিউট্রনে পরিণত করে
ঘ. যেখানে নিউক্লিয় বিক্রিয়া ঘটানো হয়
২। মডারেটরের কাজ হলোক. কোরকে ঠান্ডা করা খ. নিউক্লিয় বিক্রিয়া ঘটানো
গ. নিউক্লিয় শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তর করা ঘ. নিউট্রনকে মন্দন ঘটিয়ে তাপীয় নিউট্রনে পরিণত করা
পাঠ- ৯.৮ ১. ক ২. ঘ

চূড়ান্ত মূল্যায়ন





 উত্তর:  ১.ক ২.খ ৩.গ ৪.গ ৫.গ ৬.ক ৭.ঘ ৮.খ ৯.গ ১০.খ ১১.গ






এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url