এস এস সি বাংলা ১ম পত্র জীবন সঙ্গীত হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
জীবন সঙ্গীত
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
কবি-পরিচিতি
সূচপিত্র
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ১৭ এপ্রিল হুগলি জেলার গুলিটা রাজবল্লভহাট গ্রামে তাঁর মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। হেমচন্দ্রের পৈতৃক নিবাস ছিল হুগলির উত্তরপাড়া গ্রামে। তাঁর পিতা কৈলাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন খুব দরিদ্র। হেমচন্দ্র কলকাতার খিদিরপুর বাংলা স্কুলে পড়াকালে আর্থিক সংকটে পড়েন ও পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর অত্যন্ত মেধাবি হেমচন্দ্র কলকাতা সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারীর আশ্রয়ে ইংরেজি শেখেন এবং হিন্দু স্কুলে ভর্তি হয়ে জুনিয়র ও সিনিয়র উভয় পরীক্ষায় বৃত্তি পান। পরে তিনি ১৮৫৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ১৮৬৬ সালে বিএল ডিগ্রি লাভ করেন।
১৮৬১ সালে হাইকোর্টের উকিল হন। ১৮৬২ সালে মুন্সেফ হিসেবে নিয়োগ পেলেও তা ছেড়ে দিয়ে আবার ওকালতি শুরু করেন। ১৮৯০ সালে হাইকোর্টের সরকারি উকিল হন। কর্মজীবনে তিনি আইনজীবীহিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেও শেষজীবনে আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। হেমচন্দ্রের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিলো তিনি যেমন গুরুগম্ভীর আখ্যায়িকা কাব্য রচনা করেছিলেন তেমনি আবার সহজ সুরের খন্ড কবিতা, ওজস্বিনী স্বদেশসঙ্গীত এবং লঘু কবিতাও রচনা করেছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর রচনার অনুরাগী ছিলেন এবং কিশোর রবীন্দ্রনাথের লেখায় তাঁর ছায়া পড়েছিল। তাঁর জনপ্রিয়তার মূলে ছিলো স্বদেশচিন্তা ও উনিশ শতকের বাঙালির সমাজ ও রাষ্ট্রীয় মূল্যবোধের বলিষ্ঠ রূপায়ণ, ভাষা ও ছন্দের অনর্গলতা। শেষজীবনে তিনি অন্ধ হয়ে যান এবং ১৯০৩ সালের ২৪ মে মৃত্যুবরণ করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ
চিন্তাতরঙ্গিণী (১৮৬১), বীরবাহু (১৮৬৪), বৃত্রসংহার (১৮৭৫), আশাকানন (১৮৭৬), ছায়াময়ী (১৮৮০)।
ভূমিকা
‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতাটি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুবাদমূলক রচনা থেকে গৃহীত। কবিতাটি মার্কিন কবি Henry Wadsworth Longfellow (১৮০৭-১৮৮২)-এর ''A Psalm of life'' শীর্ষক ইংরেজি কবিতার ভাবানুবাদ।
কবিতাটিতে অত্যন্ত মূল্যবান ও ক্ষণস্থায়ী মানবজীবনের প্রকৃত অর্থ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করে যথার্থ কর্মের মাধ্যমে জগতে টিকে থাকার ধারণা লাভ করা যাবে। জীবনের প্রকৃত মূল্য অনুধাবন করে সংসারে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে মহান ব্যক্তিদের আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে বরণীয় হওয়ার প্রক্রিয়া কবিতাটিতে প্রকাশিত হয়েছে।
উদ্দেশ্য
এই পাঠটি পড়া শেষে তুমি-
- মানব-জীবনের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে পারবে;
- মানব-জীবনের উন্নতির উপায় বিশ্লেষণ করতে পারবে।
মূলপাঠ
বলো না কাতর স্বরে বৃথা জন্ম এ সংসারে
এ জীবন নিশার স্বপন,
দারা পুত্র পরিবার, তুমি কার কে তোমার
বলে জীব করো না ক্রন্দন;
মানব-জনম সার, এমন পাবে না আর
বাহ্যদৃশ্যে ভুলো না রে মন;
কর যত্ম হবে জয়, জীবাত্মা অনিত্য নয়,
ওহে জীব কর আকিঞ্চন।
করো না সুখের আশ, পরো না দুখের ফাঁস,
জীবনের উদ্দেশ্য তা নয়,
সংসারে সংসারী সাজ, করো নিত্য নিজ কাজ,
ভবের উন্নতি যাতে হয়।
দিন যায় ক্ষণ যায়, সময় কাহারো নয়,
বেগে ধায় নাহি রহে স্থির,
সহায় সম্পদ বল, সকলি ঘুচায় কাল,
আয়ু যেন শৈবালের নীর।
সংসারে-সমরাঙ্গনে যুদ্ধ কর দৃঢ়পণে,
ভয়ে ভীত হইও না মানব;
কর যুদ্ধ বীর্যবান, যায় যাবে যাক প্রাণ
মহিমাই জগতে দুর্লভ।
মনোহর মূর্তি হেরে, ওহে জীব অন্ধকারে,
ভবিষ্যতে করো না নির্ভর;
অতীত সুখের দিন, পুনঃ আর ডেকে এনে,
চিন্তা করে হইও না কাতর।
মহাজ্ঞানী মহাজন, যে পথে করে গমন,
হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয়,
সেই পথ লক্ষ্য করে স্বীয় কীর্তি ধ্বজা ধরে
আমরাও হব বরণীয়
সমর-সাগর-তীরে, পদাঙ্ক অঙ্কিত করে
আমরাও হব হে অমর;
সেই চিহ্ন লক্ষ করে, অন্য কোনো জন পরে,
যশোদ্বারে আসিবে সত্বর।
করো না মানবগণ, বৃথা ক্ষয় এ জীবন,
সংসার-সমরাঙ্গন মাঝে;
সঙ্কল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা,
রত হয়ে নিজ নিজ কাজে।
নির্বাচিত শব্দের অর্থ
অনিত্য-- অস্থায়ী; যা চিরকালের নয়।
আকিঞ্চন-- চেষ্টা; আকাক্সক্ষা।
আয়ু যেন শৈবালের নীর-- শেওলার ওপর পানির ফোঁটার মতো ক্ষণস্থায়ী।
আশ--আশা।
কাতর স্বরে-- দুর্বল কণ্ঠে; করুণভাবে।
ক্রন্দন-- কান্না।
ঘুচায়-- অতিবাহিত বা অতিক্রান্ত হওয়া।
জীবাত্মা-- মানুষের আত্মা; আত্মা যদিও অমর, কিন্তু মানুষের মৃত্যু অনিবার্য, কাজেই দেহ ছেড়ে আত্মা একদিন চলে যাবে, চিরকাল দেহকে আঁকড়ে থাকতে পারবে না।
দারা-- স্ত্রী।
দুর্লভ-- দুষ্প্রাপ্য; পাওয়া কঠিন।
দৃঢ়পণে-- অটল সংকল্প।
ধ্বজা-- পতাকা; নিশান।
নিশার স্বপন-- মিথ্যা বা অসার ভাবনা।
পদাঙ্ক-- কোনো মহৎ ব্যক্তির কৃতকর্ম বা চরিত্র।
প্রাতঃস্মরণীয়-- সকাল বেলায় স্মরণ করার যোগ্য; অর্থাৎ সকলের শ্রদ্ধা ও সম্মানের পাত্র।
ফাঁস-- ফাঁসি; ইচ্ছা অনুযায়ী শক্ত বা শিথিল করা যায় এমন রজ্জু বা দড়ির বাঁধন।
বরণীয়-- সম্মানের যোগ্য।
বাহ্যদৃশ্যে-- বাইরের জগতের চাকচিক্যময় রূপে বা জিনিসে।
বীর্যবান-- শক্তিমান।
বৃথা--ব্যর্থ।
মহাজ্ঞানী মহাজন-- কীর্তিমান মহৎ ব্যক্তি।
ভবের--- জগতের; সংসারের।
মহিমা-- গৌরব।
যশোদ্বার-- খ্যাতির দ্বার।
সমরাঙ্গনে-- যুদ্ধক্ষেত্রে (কবি মানুষের জীবনকে যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন)।
সংসারে-সমরাঙ্গনে-- যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসী সৈনিকের মতো সংসারেও নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মোকাবেলা করে বেঁচে থাকতে হবে।
সার-- একমাত্র সম্বল।
স্বপন-- রাতের স্বপ্নের মতোই মিথ্যা বা অসার।
স্বীয়-- নিজ;আপন।
সারসংক্ষেপ
মানুষের জীবন পরম মূল্যবান। এ জীবন স্বপ্ন বা মায়া নয়; অকারণও নয়। দুঃখের জন্য হা-হুতাশ বা সুখের জন্য কাতরতা দেখিয়ে লাভ নেই। বরং কর্তব্যকর্মে অগ্রসর হয়ে বাধাবিঘ্ন জয় করাই সফলতার উপায়। মহাপুরুষদের অনুসরণ করা জরুরি। তাহলে আমরাও তাঁদের মতো হতে পারব। জীবনে সাফল্য লাভের জন্য দরকার বিপদ মোকাবেলা করা আর সঙ্কল্পে দৃঢ় থাকা।
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. ‘বৃত্রসংহার’ কী জাতীয় রচনা?
ক. গীতিকাব্য খ. মহাকাব্য
গ. কাহিনি কাব্য ঘ. পত্রকাব্য
২. ‘জীবন সঙ্গীত’ একটি-
i. অনুবাদমূলক কবিতা ii. নীতিশিক্ষামূলক কবিতা iii. ভাবানুবাদমূলক কবিতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii ঘ. i, ii ও iii
নিচের উদ্দীপকটি পড়ুন এবং ৩ ও ৪ নং প্রশ্নের উত্তর দিন :
সুমন্ত কাঞ্জিলাল তার অতীতের স্বর্ণময় জীবনের কথা ভেবে আকুল হন। কেননা আজ তিনি নিঃস্ব, রিক্ত। কোনো
কিছুতেই তার মন সায় দেয় না।
৩. উদ্দীপকের ভাবের প্রতিফলন দেখা যায় যে কবিতায়-
ক. প্রাণ খ. মানুষ
গ. জীবন সঙ্গীত ঘ. কপোতাক্ষ নদ
৪. ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতা অনুযায়ী সুমন্ত কাঞ্জিলালের ভাবনা-
-. জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ ii. সফলতার জন্য প্রেরণা iii. সফলতার জন্য প্রতিবন্ধকতা
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i খ. ii
গ. iii. ঘ. i, ii ও iii
৫. ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতাটি কোন কবিতার অনুবাদ?
ক. A Psalm of life খ. A Passion of life
গ. The Sands of Dee ঘ. The Horns of Dilema
৬. ‘শৈবালের নীর’ দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
ক. বরণীয় খ. দীর্ঘস্থায়ী
গ. ক্ষণস্থায়ী ঘ. স্মরণীয়
নিচের উদ্দীপকটি পড়ুন এবং ৭ ও ৮ নং প্রশ্নের উত্তর দিন :
তা যদি না পারি, তবে বাঁচি যতকাল
তোমাদেরি মাঝখানে লভি যেন ঠাঁই।
৭. ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার যে বিষয়টি উদ্দীপকে প্রতিফলিত হয়েছে--
ক. খ্যাতি খ. বিত্ত
গ. অমরত্ব ঘ. বিদ্যা
৮. উদ্দীপক ও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় প্রকাশিত জীবন-
ক. নিশার স্বপন খ. সমরাঙ্গন
গ. তাৎপর্যময় ঘ. মায়ার জগৎ
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন উত্তর
১. খ ২. ঘ ৩. গ ৪. গ ৫. ক ৬. গ ৭. গ ৮. গ
সৃজনশীল প্রশ্ন
সময় গেলে সাধন হবে না।
দিন থাকতে দিনের সাধন কেন করলে না \
জান না মন খালে বিলে
মীন থাকে না জল শুকালে
কী হয় তার বাঁধন দিলে
শুকনা মোহনা \
অসময়ে কৃষি করে
মিছামিছি খেটে মরে
গাছ যদি হয় বীজের জোরে
ফল তো ধরে না \
ক. ‘নিশার স্বপন’ অর্থ কী?
খ. ‘ভবের উন্নতি’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার কবির জীবন ভাবনাকে কীভাবে প্রতিফলিত করে? -আলোচনা কর।
ঘ. “উদ্দীপকটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার কেবল একটি বিশেষ দিককে তুলে ধরেছে।” -বিশ্লেষণ কর।
সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তর
ক. ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় ব্যবহৃত ‘নিশার স্বপন’ শব্দের অর্থ হচ্ছে রাতের স্বপ্ন।
খ. ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় ভবের উন্নতি বলতে সংসার তথা পৃথিবীর উন্নতিকে বোঝানো হয়েছে।
প্রচলিত অর্থে সংসার বলতে দারা-পুত্র-পরিজনের সমবায়কে বোঝায়। কিন্তু ব্যাপক অর্থে সংসার মানে মানুষের বসবাসের ক্ষেত্র তথা পৃথিবী। ভব মানে এই পৃথিবীই। ব্যক্তি মানুষ যদি নিজ কর্ম সম্পর্কে সচেতন হয়, তার কর্ম সম্পর্কে দায়িত্বশীল হয় এবং সে তা সুষ্ঠুরূপে পালন করে তবেই ভবের উন্নতি হবে। মূলত কাজকে প্রাধান্য দিলে শুধু পৃথিবীর উন্নতিই নয়, বরং ব্যাক্তি মানুষেরও উন্নতি সাধন হয়। ব্যক্তি তার মহিমা লাভ করে এবং সে জীবনের প্রকৃত স্বাদও পায়। বস্তুত ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় ‘ভবের উন্নতি’ উন্নতি বলতে কবি এটিকেই বুঝিয়েছেন।
গ. উদ্দীপকে বর্তমানকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। আর এদিকটিই ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় বর্ণিত কবির জীবন ভাবনায় প্রতিফলিত হয়েছে।
বুদ্ধিমানেরা বর্তমানের ভাবনাই ভাবেন। কেননা অতীত নিয়ে পড়ে থাকার কোনো মানে হয় না। বরং তা মানুষের জীবনকে স্থবির ও জড় করে দেয়। তাছাড়া কেবল অতীত নিয়ে ভাবলে অনেক সময় ভবিষ্যতের পাথেয়ও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। একজন মানুষকে বর্তমানের সর্বোত্তম ব্যবহারই সফল করে তুলতে পারে। ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় কবি বলেছেন পৃথিবীতে মানব জন্ম অত্যন্ত মূল্যবান। অতীত জীবনের সুখ-স্মৃতি রোমন্থন করে কারোর কাতর হওয়া উচিত নয়। সুখের প্রতিমা গড়ে অজানা ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করাও বোকামি।
উদ্দীপকেও দেখা যায় বর্তমানের কাজ বর্তমানেই করতে বলা হয়েছে। বিষয়টিকে নানা উদাহরণের মাধ্যমে উদ্দীপকে বোঝানো হয়েছে। সেখানে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, সময় অর্থাৎ বর্তমান পার হয়ে গেলে সাধন হবে না। সুতরাং উদ্দীপক ও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার সাদৃশ্যপূর্ণ দিকটি হলো বর্তমানকে যথাসম্ভব গুরুত্ব দিয়ে সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করা। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের জীবন ভাবনা ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় প্রতিফলিত হয়েছে।
ঘ. সময়ের কাজ সময়ে করা উচিত, ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার এই বিশেষ ভাবটিই উদ্দীপকে ফুটে উঠেছে। ভবের সংসারে মানব জীবন অত্যন্ত মূল্যবান। এখানে মিথ্যা সুখের প্রতিমা গড়ে কোনো লাভ নেই। অবশ্য মানব জীবনের উদ্দেশ্যও তা নয়। সংসারে বাস করতে হলে সংসারের দায়িত্ব সূচারুরূপে পালন করতে হবে।
কেননা বৈরাগ্য সাধনে মানুষের মুক্তি নেই। জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় বলা হয়েছে মানুষের জীবন কেবল নিছক স্বপ্ন নয়। আর এ পৃথিবীকে কেবল স্বপ্ন ও মায়ার জগৎ বলা চলে না। অতীত সুখের দিন ও অনাগত ভবিষ্যতের কথা ভেবে বর্তমানকে বাদ দিলে চলবে না। বর্তমানেই বর্তমানের কাজ করে যেতে হবে। অন্যদিকে উদ্দীপকে বেশ কয়েকটি উপমা ও চিত্রকল্প ব্যবহার করা হয়েছে। বলাহয়েছে নদীতে জল শুকালে যেমন মাছ থাকে না, তেমনি অসময়ে কৃষিকাজ করলে কোনো ফল আসে না।
উদ্দীপকের কবির ভাষায় বলা যায়, সময় গেলে সাধন হয় না। ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় মানব জীবনের অনেকগুলো প্রসঙ্গ এসেছে। কিন্তু উদ্দীপকে বার বার এসেছে একটি প্রসঙ্গ। আর এই বিষয়টি হচ্ছে সময়ের যথাযোগ্য ব্যবহার। তাই বলা যায়, উদ্দীপকটি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতার একটি বিশেষ দিককে তুলে ধরেছে, কবিতার সমগ্র ভাবকে নয়।
নিজে কর
সৃজনশীল প্রশ্ন
সময়ের যারা সদ্ব্যবহার করে, তারা জিতবেই। সময়েই টাকা, সময় টাকার চেয়ে বেশি। জীবনকে উন্নত করো কাজ করে। জ্ঞান অর্জন করো। চরিত্রকে ঠিক করে বসে থাকো। কৃপণের মতো সময়ের কাছ থেকে তোমার পাওনা বুঝে নাও।
ক. ‘প্রাতঃস্মরণীয়’ শব্দের অর্থ কী?
খ. ‘জীবাত্মা’ বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের যে বিষয়টি ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় প্রকাশিত হয়েছে তা তুলে ধর।
ঘ. “উদ্দীপক ও ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতায় রয়েছে জীবনকে সমৃদ্ধ করার মহৎ বাণী।” -বিশ্লেষণ কর।
অর্ডিনেট আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url